ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে ফুটবলের স্বাদও পেয়েছে ভারতের ক্রিকেট দল। গত রোববার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অনুশীলন গ্রাউন্ড ক্যারিংটনে গিয়েছিলেন শুবমান গিলরা। স্পন্সরড এই ইভেন্টে ইউনাইটেড কোচ রুবেন আমোরিমের সঙ্গে ফুটবল নিয়ে কথা হয় ভারতের স্পিনার কুলদীপ যাদবের।

আরও পড়ুনডসন ফিরলেন ৮ বছর পর, টেস্টে সবচেয়ে বেশি দিন পর ফেরার রেকর্ড কার৯ ঘণ্টা আগে

ক্রিকেটের বাইরে ফুটবলের বড় ভক্ত বাঁহাতি এ কবজির স্পিনার। বার্সেলোনার পাঁড় ভক্ত হিসেবে ভারতের ক্রিকেট মহলে পরিচিতি আছে কুলদীপের। ইউনাইটেড কোচ আমোরিমের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, তা বিসিসিআই টিভিকে বলেছেন কুলদীপ, ‘রুবেন আমোরিমের সঙ্গে কথা বলার অপেক্ষায় ছিলাম। স্পোর্টিং (পর্তুগালের ক্লাবটি থেকে ইউনাইটেডের কোচ হন আমোরিম) থেকে তাঁর খোঁজ রাখি। কৌশলের বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। এ মৌসুমেও তিনি ৩-৪-৩ ছকে ভরসা রাখবেন কি না, সেটা জানতে চেয়েছি। কাসেমিরোর সঙ্গেও আলাপ হয়েছে। খেলোয়াড় হিসেবে তাঁকে কত পছন্দ, সে কথা বলেছি।’

কুলদীপ গতকাল নিজের এক্স হ্যান্ডলে আমোরিমের সঙ্গে সাক্ষাৎয়ের কিছু ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘খেলাটিকে যিনি নতুন করে সজ্ঞায়িত করেছেন, তাঁর সঙ্গে ফুটবলজ্ঞান ভাগ করলাম।’ মজার বিষয়, কুলদীপের এই পোস্টে ইংল্যান্ডের সাবেক ব্যাটসম্যান কেভিন পিটারসেন মন্তব্য করেন, ‘খুব খুব খুব বাজে ফুটবল দল।’ তাঁর এই মন্তব্যে কুলদীপ উত্তর দেন, ‘আপনার মতোই খুব খুব ভালো মানুষ।’

আরও পড়ুনবাংলাদেশের কাছে হেরে বাংলাদেশকেই ছুঁয়েছে পাকিস্তান২২ ঘণ্টা আগে

গত বছর নভেম্বরে পর্তুগিজ আমোরিমকে কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয় ইউনাইটেড। গত মৌসুমে তারা কোনো শিরোপা জিততে পারেনি। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ১৫তম হয়ে মৌসুম শেষ করার পাশাপাশি ইউরোপা লিগ ও কমিউনিটি শিল্ডে রানার্স আপ হয় ইউনাইটেড।

ইংল্যান্ড সফরে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলবে ভারত। সিরিজে এরই মধ্যে ২-১ এ পিছিয়ে পড়েছে গিলের দল। চলতি সফরে কুলদীপ এখনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। দ্বিতীয় টেস্টে তাঁকে বিবেচনা করা হলেও শেষ মুহূর্তে কুলদীপের জায়গায় দলে নেওয়া হয় ওয়াশিংটন সুন্দরকে। ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও বিশ্লেষক মাইক আথারটন অবশ্য মনে করেন, ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে কুলদীপকে নিয়ে মাঠে নামা উচিত ভারতের, ‘কুলদীপকে খেলালে সেটা ওল্ড ট্র্যাফোর্ড হওয়া উচিত। ভাবছি তারা দুই পেসার বুমরা ও সিরাজের পাশাপাশি তিন স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দর, রবীন্দ্র জাদেজা ও কুলদীপ যাদবকে খেলাবে কি না।’

আগামীকাল থেকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে শুরু হবে সিরিজের চতুর্থ টেস্ট।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ইরানের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের বাণিজ্যে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে অন্তত ছয়টি ভারতীয় কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। একই পদক্ষেপের আওতায় বিশ্বজুড়ে মোট ২০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ইরানের পেট্রোলিয়াম পণ্য কেনাবেচা ও বিপণনের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ লেনদেনে’ ইচ্ছাকৃতভাবে অংশ নিয়েছে। ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিষয়ক নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছে।

নিষেধাজ্ঞার শিকার কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতের কিছু বড় পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এগুলো হলো অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস, গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস, জুপিটার ডাই কেম, রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি, পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম ও কাঞ্চন পলিমার্স।

নিষিদ্ধ কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতের কিছু বড় পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠেছে অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৮ কোটি ৪০ লাখ ডলারেরও বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠেছে অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৮ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস লিমিটেডের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল, বিশেষ করে মিথানল কিনেছে।

জুপিটার ডাই কেম প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধেও এ সময়ে টলুইনসহ ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পণ্য আমদানির অভিযোগ রয়েছে।

রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি মিথানল ও টলুইনসহ ২ কোটি ২০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ কিংবা যেসব সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে আছে, তা জব্দ করা হবে। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও কোম্পানিগুলোর বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া নিষিদ্ধ হবে। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর যেকোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠান—যেগুলোর অন্তত ৫০ শতাংশ মালিকানা তাদের হাতে, তা–ও একইভাবে নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হবে।

পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য, বিশেষ করে মিথানল আমদানি করেছে বলে জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া কাঞ্চন পলিমার্স নামে একটি কোম্পানি ১৩ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পলিথিন পণ্য কিনেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিষেধাজ্ঞার ফলে এখন এসব প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ কিংবা যেসব সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে আছে, তা জব্দ করা হবে। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও কোম্পানিগুলোর বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া নিষিদ্ধ হবে। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর যেকোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠান, যেগুলোর অন্তত ৫০ শতাংশ মালিকানা তাদের হাতে, তা–ও একইভাবে নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হবে।

এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ’ নীতির অংশ। এর মাধ্যমে ইরানের কথিত ‘ছায়া নৌবহর’ ও মধ্যস্বত্বভোগী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, যারা বিশ্বব্যাপী ইরানি তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য পরিবহনে সহায়তা করে।

আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’১৫ ঘণ্টা আগে

মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, এসব পণ্য রপ্তানি থেকে ইরান যে রাজস্ব পায়, তা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা ছড়ানো ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তায় ব্যয় করা হয়।

ইরানের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকলেও ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আগের নিষেধাজ্ঞা চালু হওয়ার পর ভারত ইরানি তেল আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্পেশালি ডেজিগনেটেড ন্যাশনালস (এসডিএন) তালিকা থেকে নিজেদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, এ নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য শাস্তি দেওয়া নয়; বরং আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।

ভারতের পাশাপাশি তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এ বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ইরানের তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল–বাণিজ্যে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

উল্লেখ্য, ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বাইরেও দেশটি থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল তিনি এ ঘোষণা দেন।

আরও পড়ুনভারতের পণ্যে এবার ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প২২ ঘণ্টা আগে

আগামীকাল ১ আগস্ট থেকে ভারতের পণ্যে নতুন এ পাল্টা শুল্কনীতি কার্যকর হবে। পাশাপাশি রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র ও জ্বালানি কেনার জন্য ভারতকে ‘দণ্ড’ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে কী ধরনের দণ্ড দেওয়া হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ