স্মৃতিচারণা আর গান, নৃত্য ও আবৃত্তি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে নাগরিক শোকসভায় প্রয়াত সভাপতি বদিউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই নাগরিক শোকসভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা ও রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহতদের জন্য শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

  বদিউর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান তাঁর পরিবারের সদস্য, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ ও ঢাকা মহানগরের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন শাখা, ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, প্রগতি লেখক সংঘ, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

 পুষ্পস্তবক নিবেদনের পরে ছিল সম্মিলিত পরিবেশনা। ‘দুঃখের তিমিরে যদি জ্বলে তব মঙ্গল আলোক’, ‘জাগো সত্যের শুভ্র আলোকে জাগো হে মিলিত প্রাণ’ এবং ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ গান তিনটি পরিবেশন করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংগীত বিভাগের শিল্পীরা। এরপর ‘তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে’ গানটির সঙ্গে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন উদীচীর নৃত্যশিল্পীরা।

 আলোচনা পর্বের শুরুতে বদিউর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহসভাপতি রতন সিদ্দিকী। আলোচনা ও স্মৃতিচারণায় অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি সারওয়ার আলী, উদীচীর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য আখতার হুসেন, শিল্পী আনোয়ার হোসেন, উদীচীর সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম সিদ্দিক, সাবেক সংগঠক মোফাখখারুল ইসলাম, সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, অধ্যাপক এম এম আকাশ, সৈয়দ আজিজুল হক, অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বাংলা একাডেমির পরিচালক তপন বাগচী, চারণের কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক প্রণয় সাহা, কেন্দ্রীয় সংগঠক লেলিন চৌধুরী, শংকর সাওজাল প্রমুখ।

পরিবারের পক্ষে বদিউর রহমানের বড় মেয়ে সুপা সাদিয়া বক্তব্য দেন। উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দের সঞ্চালনায় শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম। আলোচনার পর আবৃত্তি ও গান ও উদীচীর সংগঠন সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে আয়োজনটি শেষ হয়।

 উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি বিশিষ্ট গবেষক, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক, সাহিত্যিক, অধ্যাপক বদিউর রহমান ১৬ জুলাই প্রয়াত হন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার

স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।

আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।

উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।

হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রদলের কমিটি নেই ১৪ মাস, স্থবির কার্যক্রম
  • মামলায় ঝুলে গেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন
  • গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন
  • সম্মেলনের প্রায় তিন মাস পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটি
  • হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার