Prothomalo:
2025-07-29@19:55:07 GMT

এ যেন এক অন্তহীন দুর্ভোগ

Published: 29th, July 2025 GMT

যশোরের ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতার বিষয়টি অনেক বছর ধরে প্রথম আলোর নিয়মিত সংবাদ শিরোনাম হয়ে আসছে। এ নিয়ে অনেকবার সম্পাদকীয়ও করা হয়েছে। রাষ্ট্র ও সরকারের নীতিনির্ধারণে পরিকল্পনাহীনতা ও সমন্বহীনতার অন্যতম দৃষ্টান্ত হতে পারে ভবদহের সংকট। টানা বৃষ্টির ফলে ভবদহের ৩০টি গ্রাম আবারও তলিয়ে গিয়ে চরম জলাবদ্ধতা তৈরি করেছে। দুর্ভোগ থেকে এ অঞ্চলের মানুষের কি মুক্তি মিলবে না কোনো দিন?

প্রতিবছর বর্ষা এলেই ভবদহ অঞ্চলের মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। আর এবার তো জুলাই মাসের ২৭ তারিখেই বৃষ্টির পরিমাণ ৫১৪ মিলিমিটারে পৌঁছেছে, যা গত জুনের গড় বৃষ্টিকেও ছাড়িয়ে গেছে। ফলস্বরূপ, ৫২টি বিল প্লাবিত হয়ে সেই পানি উপচে পড়ছে আশপাশের গ্রামে। বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এমনকি ধর্মীয় স্থাপনাও রক্ষা পাচ্ছে না।

এ দুর্ভোগের মূল কারণ কী? ভবদহ অঞ্চলের পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা মূলত মুক্তেশ্বরী, টেকা, হরি ও শ্রী নদীর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বছরের পর বছর ধরে পলি জমে এ নদীগুলো নাব্যতা হারিয়েছে। ফলে পানি ধারণ ও নিষ্কাশনক্ষমতা কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। ভবদহ পানিনিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালির অভিযোগ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটের মাত্র ছয়টি গেট খোলা রাখা হয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, টিআরএম (জোয়ারাধার) চালু না করলে এ জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি নেই।

তবে আশার আলো বলতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কিছু উদ্যোগের কথা জানিয়েছে। আগামী আগস্ট মাস থেকে প্রায় ৮১ কিলোমিটার নদী খননের কাজ শুরু করবে সেনাবাহিনী। এ ছাড়া আমডাঙ্গা খাল সংস্কারে ৪৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী জানিয়েছেন, জোয়ারের সময় স্লুইসগেটের বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বের করা হচ্ছে এবং ভাটার সময় গেটগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে।

নদী খনন একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। আমডাঙ্গা খালের সংস্কারকাজও দ্রুত শুরু হওয়া জরুরি। কিন্তু এ মুহূর্তে যে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন, তাঁদের তাৎক্ষণিক স্বস্তির জন্য কী করা হচ্ছে? ২১ ভেন্ট স্লুইসগেটের সব গেট খুলে দেওয়ার দাবি কেন পূরণ হচ্ছে না? টিআরএম চালুর বিষয়টি কেন এখনো উপেক্ষিত?

ভবদহের এ সংকটের বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সবাই ভালোভাবেই অবগত। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সবাই সে এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ অঞ্চল নিয়ে নানা সময়ে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনোভাবেই এ অঞ্চলের সংকট নিরসন হয় না। ভবদহের কান্না কবে ফুরাবে, এটিই শুধু আমাদের প্রশ্ন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভবদহ র

এছাড়াও পড়ুন:

টানা বৃষ্টিতে ভবদহের ৩০টি গ্রাম জলাবদ্ধ, দুর্ভোগে মানুষ

টানা বৃষ্টিতে যশোরের অভয়নগর ও মনিরামপুর উপজেলার ৩০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের অনেক বাড়িঘর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় স্থাপনায় পানি ঢুকে পড়েছে। নদী দিয়ে ঠিকমতো পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ভবদহ অঞ্চল যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুর এবং খুলনার ডুমুরিয়া ও ফুলতলা উপজেলার অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত। এই এলাকার পানি ওঠানামা করে মুক্তেশ্বরী, টেকা, শ্রী ও হরি নদীর মাধ্যমে। তবে পলি পড়ে নদীগুলো নাব্যতা হারানোয় পানি নিষ্কাশনে সমস্যা হচ্ছে।

যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানঘাঁটির আবহাওয়া বিভাগ জানায়, গত জুনে গড় বৃষ্টিপাত ছিল ২৯৯ মিলিমিটার। চলতি জুলাইয়ের ২৭ তারিখ পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৫১৪ মিলিমিটার। এতে ভবদহ এলাকার ৫২টি বিল প্লাবিত হয়েছে। পানি উপচে আশপাশের গ্রামে ঢুকছে।

মনিরামপুর উপজেলার লখাইডাঙ্গা গ্রামের গৃহবধূ জয়শ্রী মণ্ডল বলেন, ‘উঠোনে প্রায় হাঁটুজল। আর একটু জল বাড়লে ঘরে উঠে যাবে। ঘরে জল উঠলে রাস্তায় ওঠা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’ সুজাতপুর গ্রামের সাধন চক্রবর্তী বলেন, ‘আমার বাড়ির উঠোনে জল। প্রতিদিন জল বাড়ছে। আর একটু বৃষ্টি হলে বাড়িঘর ছাড়তে হবে।’

বাজে কুলটিয়ার গৃহবধূ লাভলী বিশ্বাস বলেন, ‘এবার আগেই বাড়িতে জল এসেছে। ওপরের জলের চাপে প্রতিদিন জল বাড়ছে। টিউবওয়েল, বাথরুম জলের তলে চলে গেছে। থাকার ঘরে জল ওঠার মতো অবস্থা হয়েছে। খুব খারাপ অবস্থায় আছি।’

জলাবদ্ধ হয়ে আছে যশোরের মনিরামপুর উপজেলার বাজেকুলটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। গতকাল শনিবার বিকেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চায়না ডেলিগেশন টিমের যশোরের ভবদহ পরিদর্শন
  • টানা বৃষ্টিতে ভবদহের ৩০টি গ্রাম জলাবদ্ধ, দুর্ভোগে মানুষ