কালীগঞ্জ পৌর শহর যেন মশার স্বর্গরাজ্য
Published: 29th, July 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভা যেন মশার স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। পৌর শহরের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ডোবা-নালাগুলো আবর্জনায় ভরে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, যার ফলে মশা ও মাছির বিস্তার ঘটছে ভয়াবহভাবে।
চরমভাবে দূষিত হয়ে ওঠা পরিবেশের কারণে পৌরবাসী পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। অথচ এসব ডোবা-নালার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে পৌর কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে গত ১৫ বছরে পৌর শহরের ডোবা-নালা পরিষ্কারে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে বছরের পর বছর ধরে পৌর এলাকার নানা স্থানে ময়লা-আবর্জনায় আটকে থাকা পানি পচে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এসব স্থান এখন মশার আতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে।
পৌর এলাকার ভাদার্ত্তী, তুমলিয়া, আড়িখোলা, দুর্বাটি, বাঙ্গালহাওলা, দেওয়ালেরটেক, দড়িসোম, মুনশুরপুর, বালীগাঁও, খঞ্জনা, ভাদগাতী, বড়নগর, চৌড়া, ঘোনাপাড়া, মূলগাঁও, উত্তরগাঁও, চরপাড়া, দেওপাড়া ও চৈতারপাড়া এসব এলাকাজুড়ে ডোবা-নালায় জমে থাকা পচা পানি ও আবর্জনার কারণে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, তেমনি মশার উৎপাত বাড়ছে।
আড়িখোলা এলাকার বাসিন্দা মো.
দড়িসোম গ্রামের বাসিন্দা মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, “শুধু ডোবা-নালা নয়, গাজীপুরের কালীগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রেও ছড়িয়ে পড়েছে মশার প্রজনন ও উপদ্রব। খেয়াঘাট সংলগ্ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভেতরে জমে থাকা বৃষ্টির পানি এখন মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কালীগঞ্জের প্রধান ডাকঘর এলাকায়ও সামান্য বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে দিনের পর দিন। সেই পানিতেই নির্বিঘ্নে বাড়ছে মশার উপদ্রব। এতে শহরের স্বাস্থ্য ও জনসুরক্ষায় ঝুঁকি বেড়েছে কয়েকগুণ।”
পৌর এলাকার বালীগাঁও গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, “পৌর ভবনের আশপাশেই যখন বৃষ্টির পানি জমে মশা জন্ম নিচ্ছে, তখন আমরা সাধারণ মানুষ আর কী করব? পৌরসভাই যদি প্রতিকার না নেয়, তাহলে দায় নেবে কে?”
ভাদার্ত্তী গ্রামের শহিদুল সরকার বলেন, “মশা নিধনের ওষুধ ছিটালেও তেমন কাজ হচ্ছে না। ময়লা না সরালে তো মশা জন্মাবেই।”
মূলগাঁওয়ের বাসিন্দা নাইম মিয়া বলেন, “মশার যন্ত্রণায় ঘরে থাকা মুশকিল। ওষুধ ছিটানো হচ্ছে কিন্তু সেটা প্রয়োজনের তুলনায় কম। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন প্রতিটি ওয়ার্ডে স্প্রে দিলে কিছুটা উপকার হতো।”
এদিকে মশার অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে কালীগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকে ফগার মেশিন দিয়ে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে তা যথেষ্ট নয় বলে দাবি স্থানীয়দের।
কালীগঞ্জ পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (পিএনও) শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, “মশা নিধনে ইতোমধ্যে ফগার মেশিন দিয়ে ধোঁয়া দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই ডোবা-নালাও পরিষ্কার করা হবে।”
কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক এবং ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, “পৌর এলাকার পরিত্যক্ত জলাশয় ও ডোবা-নালা পরিদর্শন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা পরিষ্কারের কাজ শুরু করা হবে। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প র এল ক র পর ষ ক র শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
কালীগঞ্জ পৌর শহর যেন মশার স্বর্গরাজ্য
গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভা যেন মশার স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। পৌর শহরের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ডোবা-নালাগুলো আবর্জনায় ভরে গিয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, যার ফলে মশা ও মাছির বিস্তার ঘটছে ভয়াবহভাবে।
চরমভাবে দূষিত হয়ে ওঠা পরিবেশের কারণে পৌরবাসী পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। অথচ এসব ডোবা-নালার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে পৌর কর্তৃপক্ষের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে গত ১৫ বছরে পৌর শহরের ডোবা-নালা পরিষ্কারে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে বছরের পর বছর ধরে পৌর এলাকার নানা স্থানে ময়লা-আবর্জনায় আটকে থাকা পানি পচে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এসব স্থান এখন মশার আতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে।
পৌর এলাকার ভাদার্ত্তী, তুমলিয়া, আড়িখোলা, দুর্বাটি, বাঙ্গালহাওলা, দেওয়ালেরটেক, দড়িসোম, মুনশুরপুর, বালীগাঁও, খঞ্জনা, ভাদগাতী, বড়নগর, চৌড়া, ঘোনাপাড়া, মূলগাঁও, উত্তরগাঁও, চরপাড়া, দেওপাড়া ও চৈতারপাড়া এসব এলাকাজুড়ে ডোবা-নালায় জমে থাকা পচা পানি ও আবর্জনার কারণে একদিকে যেমন স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, তেমনি মশার উৎপাত বাড়ছে।
আড়িখোলা এলাকার বাসিন্দা মো. হেলাল উদ্দিন আকন্দ বলেন, “ডোবা-নালায় এত ময়লা জমে আছে, অথচ পরিষ্কারে কেউ উদ্যোগ নেয় না। এসব ডোবা-নালায় প্রচুর মশা জন্ম নিচ্ছে, রাতে মশার উৎপাতে ঘুমানোই দায়।”
দড়িসোম গ্রামের বাসিন্দা মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, “শুধু ডোবা-নালা নয়, গাজীপুরের কালীগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রেও ছড়িয়ে পড়েছে মশার প্রজনন ও উপদ্রব। খেয়াঘাট সংলগ্ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভেতরে জমে থাকা বৃষ্টির পানি এখন মশার প্রজনন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কালীগঞ্জের প্রধান ডাকঘর এলাকায়ও সামান্য বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে দিনের পর দিন। সেই পানিতেই নির্বিঘ্নে বাড়ছে মশার উপদ্রব। এতে শহরের স্বাস্থ্য ও জনসুরক্ষায় ঝুঁকি বেড়েছে কয়েকগুণ।”
পৌর এলাকার বালীগাঁও গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, “পৌর ভবনের আশপাশেই যখন বৃষ্টির পানি জমে মশা জন্ম নিচ্ছে, তখন আমরা সাধারণ মানুষ আর কী করব? পৌরসভাই যদি প্রতিকার না নেয়, তাহলে দায় নেবে কে?”
ভাদার্ত্তী গ্রামের শহিদুল সরকার বলেন, “মশা নিধনের ওষুধ ছিটালেও তেমন কাজ হচ্ছে না। ময়লা না সরালে তো মশা জন্মাবেই।”
মূলগাঁওয়ের বাসিন্দা নাইম মিয়া বলেন, “মশার যন্ত্রণায় ঘরে থাকা মুশকিল। ওষুধ ছিটানো হচ্ছে কিন্তু সেটা প্রয়োজনের তুলনায় কম। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন প্রতিটি ওয়ার্ডে স্প্রে দিলে কিছুটা উপকার হতো।”
এদিকে মশার অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে কালীগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকে ফগার মেশিন দিয়ে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে তা যথেষ্ট নয় বলে দাবি স্থানীয়দের।
কালীগঞ্জ পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা (পিএনও) শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, “মশা নিধনে ইতোমধ্যে ফগার মেশিন দিয়ে ধোঁয়া দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই ডোবা-নালাও পরিষ্কার করা হবে।”
কালীগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক এবং ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, “পৌর এলাকার পরিত্যক্ত জলাশয় ও ডোবা-নালা পরিদর্শন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা পরিষ্কারের কাজ শুরু করা হবে। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
ঢাকা/এস