সিলেটে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে যাওয়া স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ
Published: 30th, July 2025 GMT
সিলেটের জকিগঞ্জে সহপাঠীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৬) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রথমে দুই শিক্ষার্থীর ছবি ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন বলে এ ঘটনায় করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
গত শনিবার সকালে উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের পরিত্যক্ত একটি ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরী আজ বুধবার সকালে জকিগঞ্জ থানায় মামলা করেছে।
মামলায় আসামি হিসেবে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন উপজেলার বারহাল ইউনিয়নের নিদনপুর গ্রামের ইমরান আহমদ (২৩), খিলগ্রামের তানজিদ আহমদ (১৮), মাইজগ্রামের শাকের আহমদ (২৪), একই গ্রামের শাকিল আহমদ (২১) ও মনতৈল গ্রামের মুমিন আহমদ (২০)।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী ২৬ জুলাই সকালে বারহাল ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় এক সহপাঠীকে নিয়ে বেড়াতে যায়। সেখানে অভিযুক্ত পাঁচ তরুণ গোপনে তাঁদের ছবি ধারণ করেন। পরে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে দুজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় অভিযুক্ত তরুণেরা দুই শিক্ষার্থীকে বিষয়টি কাউকে জানানো হলে তাঁদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখান।
এদিকে ঘটনার তিন দিন পর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে এলাকার একটি পক্ষ বিষয়টি সালিস বৈঠকে মীমাংসার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জকিগঞ্জ থানা-পুলিশ ওই স্কুলছাত্রীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ দিতে বিলম্ব ও বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ছাড়া জকিগঞ্জ ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় অভিযুক্ত তরুণেরা অবৈধ পথে সীমান্ত পাড়ি দিতে পারেন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ভুক্তভোগীকে তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। আজ সকালে মামলা হওয়ার পর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক: শারমিন আহমদ
স্বাধীনতাযুদ্ধকে যখন শুধু আওয়ামী লীগিকরণ করা হচ্ছিল, তখন তাজউদ্দীন আহমদ সেটার বিরোধিতা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর কন্যা শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ শুধু আওয়ামী লীগের নয়। উনি পুরো জাতির। তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘তাজউদ্দীন আহমদ স্মারক বক্তৃতা-২০২৫’ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শারমিন আহমদ। সেখানেই তিনি এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি নিয়ে কথা বলেন শারমিন আহমদ। তিনটি শর্তের ওপর ভিত্তি করে এই চুক্তি হয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন, স্বীকৃতি বাদে বন্ধুত্ব হয় না। সেই স্বীকৃতি হতে হবে সমতার ভিত্তিতে। সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ ভারতীয় সেনাবহিনীর একক কমান্ডে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘না, এটি যৌথ কমান্ডের ভিত্তিতে হবে। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ।’
আরও পড়ুনজন্মদিনে ডায়েরিতে যা লিখেছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ২৩ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনতাজউদ্দীন আহমদ দেশের স্বাধীনতার প্রধান পুরুষ২৮ জুলাই ২০২৫শারমিন আহমদ বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ প্রতিরোধ না করলে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের চুক্তিপত্রে লেখা থাকত ভারতের কাছে পাকিস্তান বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার যখনই মনে করবে, তখনই ভারতীয় বাহিনীকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে, এটিই ছিল তৃতীয় শর্ত বলে জানান শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ওই শর্তের ভিত্তিতেই ভারতীয় বাহিনীকে প্রত্যাবর্তনের জন্য বলেন।
আরও পড়ুনতাজউদ্দীন আহমদ: রোজনামচার মানুষটিকে বোঝা২৩ জুলাই ২০২৫অনুষ্ঠানে হতাশা প্রকাশ করে শারমিন আহমদ বলেন, এসব ইতিহাস পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এসব ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়নি বলেই ভারতীয়রা এ দেশ স্বাধীন করেছে, এমন বয়ান তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, এটা খুব লজ্জার ব্যাপার। এই তথ্যগুলো নিয়ে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে হবে। কেননা, গৌরবমণ্ডিত ইতিহাস সংরক্ষণ না করা হলে জাতি আরও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। স্মারক বক্তা ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। তাঁর বর্ক্তৃতার শিরোণাম ছিল ‘তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি : ঐতিহাসিকতা ও রাজনৈতিকতা।’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।