স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে মুক্তি পাকেতার
Published: 1st, August 2025 GMT
স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ওয়েস্ট হাম ইউনাইটেডের ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতাকে। প্রায় দুই বছর ধরে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এফএ) তদন্তের পর একটি স্বাধীন কমিশন তাঁকে এই অভিযোগ থেকে মুক্তি দিল। গত রাতে এফএ ও ওয়েস্ট হাম বিষয়টি জানিয়েছে।
২০২৩ সালের আগস্টে তদন্ত শুরু করে এফএ। পাকেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় গত বছরের মে মাসে। ‘বাজির বাজারকে প্রভাবিত করতে অনৈতিক উদ্দেশে’ কার্ড দেখার অভিযোগ গঠন করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। দোষী প্রমাণিত হলে আজীবন নিষিদ্ধও হতে পারতেন ২৭ বছর বয়সী পাকেতা।
আরও পড়ুনআট বছর বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় নেইমার, হলো আরেক রেকর্ড১৫ ঘণ্টা আগে২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর লেস্টার সিটি, ২০২৩ সালের ১২ মার্চ অ্যাস্টন ভিলা, ২১ মে লিডস ইউনাইটেড ও ১২ আগস্ট বোর্নমাউথের বিপক্ষে ওয়েস্ট হামের ম্যাচ ঘিরে চারটি অভিযোগ গঠন করা হয় পাকেতার বিরুদ্ধে। স্বাধীন নিয়ন্ত্রক কমিশন এ বিষয়ে শুনানির পর চারটি অভিযোগ ‘প্রমাণ করা সম্ভব নয়’ বলে মনে করে।
তদন্তে অসহযোগিতা ও অভিযোগ অস্বীকার করায় পাকেতার বিরুদ্ধে আরও দুটি অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। নিয়ন্ত্রক কমিশন মনে করে অভিযোগগুলো প্রমাণসাপেক্ষ এবং নিয়ম লঙ্ঘন করার জন্য যত দ্রুত সম্ভব উপযুক্ত দণ্ড দেওয়া হবে। এফএ চাইলে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে। সেই সুযোগ আছে।
গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ওয়েস্ট হামের হয়ে ৩৬ ম্যাচে ৫ গোল করেন পাকেতা। ব্রাজিলের হয়ে গত বছর ১৩ ম্যাচে করেন ২ গোল।
আরও পড়ুনমেসি গোল করিয়েছেন কতগুলো, তাঁর পাস থেকে সবচেয়ে বেশি গোল কার২০ ঘণ্টা আগেনির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমকে পাকেতা বলেন, ‘তদন্ত শুরুর প্রথম দিন থেকে আমি এসব মারাত্মক অভিযোগের মুখোমুখি হয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এসেছি। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছি না। তবে এটুকু বলতে চাই, সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি কৃতজ্ঞ এবং দুই বছর পর হাসিমুখে মাঠে ফিরতে মুখিয়ে আছি।’
গত মে মাসে টটেনহামের বিপক্ষে ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন পাকেতা। সেই ম্যাচের পর পাকেতার স্ত্রী মারিয়া এদুয়ার্দা ফোরনিয়ের জানিয়েছিলেন, তাঁরা দুই বছর ধরে দুঃস্বপ্নের মধে৵ বসবাস করছেন।
এসি মিলান থেকে ২০২০ সালে ফ্রান্সের ক্লাব অলিম্পিক লিওঁতে যোগ দেন পাকেতা। ২০২২ সালের আগস্টে নাম লেখান ওয়েস্ট হামে। ২০২২–২৩ মৌসুমে ইংলিশ ক্লাবটিকে উয়েফা কনফারেন্স লিগ জিততে সহায়তা করেছেন এই ব্রাজিলিয়ান। ২০২৩ সালের আগস্টে ওয়েস্ট হাম ছেড়ে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর; কিন্তু এফএ এরপর তদন্ত শুরু করায় সেই দলবদল আর আলোর মুখ দেখেনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কর্মস্থলে অনুপস্থিত, পাঁচ প্রকৌশলী ও এক স্থপতি বরখাস্ত
বিনা অনুমতিতে দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের পাঁচজন প্রকৌশলী ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের একজন স্থপতিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। তাঁদের বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’–এর অভিযোগ ছিল। বিভাগীয় তদন্তে তাঁরা দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আজ বুধবার গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বরখাস্ত করা কর্মকর্তারা হলেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) মনিরুজ্জামান মনি, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ই/এম) আবদুল্লা আল মামুন, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) রাহানুমা তাজনীন, নির্বাহী প্রকৌশলী (ই/এম) ফারহানা আহমেদ ও সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মফিজুল ইসলাম। এ পাঁচজন গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। একই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্থাপত্য অধিদপ্তরের সহকারী স্থপতি শিরাজী তারিকুল ইসলামকেও বরখাস্ত করা হয়।
কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মনিরুজ্জামান মনি কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের ডক্টরাল প্রোগ্রামে অংশ নিতে ২০১৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি (মঞ্জুরীকৃত প্রেষণ) নেন। প্রেষণ শেষে ২০২৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার আলোকে তাঁকে গত ২১ এপ্রিল বরখাস্ত করা হয়।
আবদুল্লা আল মামুন পিএইচডি করতে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দুই বছরের জন্য ছুটিতে যান। কিন্তু ছুটি শেষে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কর্মস্থলে উপস্থিত না হওয়ায় গত ১৫ মে বরখাস্ত হন।
রাহানুমা তাজনীন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইওমিংয়ে স্নাতকোত্তর কোর্সে পড়তে ২০২১ সালের ১ আগস্ট থেকে ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। এরপর কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। তাই চলতি মাসের ২ তারিখ তাঁকে বরখাস্ত করা হয়।
ফারহানা আহমেদ কানাডার রায়ারসন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর কোর্সে পড়তে ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে যান। ছুটির মেয়াদ শেষ হলেও বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। তাই তাঁকে চলতি মাসের ৮ তারিখ বরখাস্ত করা হয়।
মফিজুল ইসলাম সাউথ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএস পড়তে ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে ছিলেন। কিন্তু এর পর থেকে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় তাঁকে ২৭ জুলাই বরখাস্ত করা হয়।
অন্যদিকে শিরাজী তারিকুল ইসলাম ২০২২ সালের ১২ মে থেকে অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিত রয়েছেন। তাই তাঁকে চলতি বছরের ২১ মে বরখাস্ত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তদন্ত শেষে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মতামত ও রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে কর্মকর্তাদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।