সবচেয়ে জনপ্রিয় আইফোন এখন আইফোন ১৬: টিম কুক
Published: 2nd, August 2025 GMT
২০২৫ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে রেকর্ড আয় করেছে অ্যাপল। জুন প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির আয় দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। মূলত আইফোন ১৬ সিরিজের বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় এই প্রবৃদ্ধি এসেছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক জানিয়েছেন, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় আইফোন মডেল হলো আইফোন ১৬ সিরিজ। তিনি জানান, ২০২৩ সালে বাজারে আসা আইফোন ১৫ সিরিজের তুলনায় বিক্রি ও জনপ্রিয়তার দিক থেকে এগিয়ে আছে নতুন সিরিজটি। তৃতীয় প্রান্তিকে আইফোন বিক্রি থেকে অ্যাপলের আয় হয়েছে ৪ হাজার ৪৬০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি। কুক বলেন, আইফোন থেকে রাজস্ব বেড়েছে, কারণ আইফোন ১৬ সিরিজ আগের বছরের আইফোন ১৫ সিরিজের তুলনায় অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। বিশেষ করে বিদ্যমান ব্যবহারকারীরা নতুন মডেলে আপগ্রেড করতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। কুক আরও জানান, আইফোন ১৬, ১৬ প্লাস, ১৬ প্রো এবং ১৬ প্রো ম্যাক্স—এই চারটি মডেলই গ্রাহকদের মধ্যে ভালো সাড়া ফেলেছে। নতুন সুবিধা, উন্নত ক্যামেরা এবং নকশাগত পরিবর্তন গ্রাহকদের আকৃষ্ট করেছে।
অ্যাপল চলতি প্রান্তিকে আরও একটি বড় মাইলফলক ছুঁয়েছে। টিম কুক জানিয়েছেন, ২০০৭ সালে প্রথম আইফোন বাজারে ছাড়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৩০০ কোটি আইফোন সরবরাহ করেছে অ্যাপল। আইফোন বিক্রি থেকে প্রাপ্ত ৪ হাজার ৪৬০ কোটি ডলার রাজস্ব অ্যাপলের মোট আয় ৯ হাজার ৪০০ কোটির প্রায় অর্ধেক। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে সম্ভাব্য আমদানি শুল্ক (ট্যারিফ) বৃদ্ধির আশঙ্কায় অনেকেই আগেভাগেই নতুন আইফোন কিনে নিচ্ছেন।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত নতুন ট্যারিফ ইতিমধ্যে অ্যাপলের অতিরিক্ত ব্যয় বাড়িয়েছে। গত প্রান্তিকে এই খাতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮০ কোটি ডলার। বিশ্লেষকদের পূর্বাভাস, আগামী প্রান্তিকে এই ব্যয় ১১o কোটি ডলারে পৌঁছাতে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইলে ছয় মাসে ২ হাজার কর্মসংস্থান
দীর্ঘ ২২ বছর ধরে বন্ধ থাকা রাজশাহী টেক্সটাইল মিল পুনরায় চালু করে মাত্র ছয় মাসে দুই হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল। টেলি মার্কেটিং ও তৈরি পোশাকসহ নতুন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে আরো ১০ হাজার কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
শনিবার (২ আগস্ট) রাজশাহীর সপুরায় অবস্থিত ‘বরেন্দ্র রাজশাহী টেক্সটাইল লিমিটেড’ কারখানা চত্বরে “দুই হাজার কর্মসংস্থান উদযাপন; লক্ষ্য ১২ হাজার” শীর্ষক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি কর্মসংস্থানের এই মাইলফলক উদযাপনের অংশ হিসেবে কেক কাটেন।
আরো পড়ুন:
আমরা যে চূড়ান্ত পরিবর্তন চেয়েছিলাম, তা সম্ভব হয়নি: আসিফ মাহমুদ
সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর পরিদর্শন করলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী, রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) ম্যানেজার নুরুল আলমসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত মিল চালু করে এত অল্প সময়ে দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি সত্যিই প্রশংসনীয়। এটি শুধু একটি কারখানা নয়, একটি অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের সূচনা।”
তিনি আরো বলেন, “বর্তমানে যখন কর্মসংস্থানের অভাবে মানুষ গ্রাম থেকে শহরে ছুটছে, তখন প্রাণ-আরএফএল-এর মতো প্রতিষ্ঠান স্থানীয় পর্যায়ে শিল্পায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে—যা টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি।”
অনুষ্ঠানে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কয়েকজন শ্রমিকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন উপদেষ্টা।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট—আমরা চাই না কেউ আর কাজের জন্য ঢাকায় ছুটে যাক। শিল্প নিয়ে আমরা পৌঁছাতে চাই প্রত্যন্ত অঞ্চলে। রাজশাহীতে শ্রমঘন শিল্পে বিনিয়োগ করে আমরা ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছি।”
তিনি বলেন, “এই কারখানাটি হবে একটি সম্পূর্ণ সাসটেইনেবল গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। এখানে উৎপাদিত পণ্য শতভাগ রপ্তানিমুখী হবে। নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য আমরা বিশেষভাবে কাজ করছি। টেলি মার্কেটিংয়ের মতো খাতে বিপুল সংখ্যক নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।”
২০২৪ সালের অক্টোবরে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল করপোরেশনের (বিটিএমসি) সঙ্গে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের ভিত্তিতে চুক্তি স্বাক্ষর করে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। পরের মাসেই বিটিএমসি থেকে দায়িত্ব বুঝে নিয়ে পুরোনো, পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ অবস্থা থেকে কারখানাটিকে সচল করে তোলা হয়।
বর্তমানে কারখানাটির পরিত্যক্ত একমাত্র শেড মেরামত করে ব্যাগ, জুতা, লাগেজসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন চালিয়ে যাচ্ছে প্রাণ-আরএফএল।
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ