ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি করতে গিয়ে স্বামী ও স্ত্রী পরিচয় দেয়া দুজন রোহিঙ্গা আটক হয়েছেন। 

সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।  তারা হলেন, রোকেয়া বেগম ও মো. আনিস (৪০)।

আরো পড়ুন:

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ৭ দফা প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার

নাগরিক অধিকার নিয়ে স্বদেশে ফিরতে বিশ্ববাসীকে পাশে চান রোহিঙ্গারা

কামারখন্দ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, ‘‘বেলা ১১টার দিকে রোকেয়া বেগম ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে নির্বাচন অফিসে ভোটার হওয়ার জন্য আসেন। তার নাম, ঠিকানা ও ভাষা সন্দেহজনক মনে হলে বিষয়টি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও ইউএনও-কে জানানো হয়। পরে তাদের ইউএনও’র কার্যালয়ে নেয়া হয়।’’ 

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বলেন, ‘‘ওই যুবক নিজেকে ওই নারীর স্বামী বলে পরিচয় দেন। তারা কক্সবাজারের উখিয়া টেংখালী ক্যাম্প-১২ জি-৪ থেকে এসেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা প্রক্রিয়া চলছে।’’

কামারখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনামিকা নজরুল বলেন, ‘‘আটক দুজনই স্বীকার করেছেন তারা রোহিঙ্গা। দুপুরে তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে আরো খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।’’

ঢাকা/রাসেল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আটক ক ম রখন দ কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি

ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।

শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।

ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।

ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।

কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলা

শিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’

শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নাইক্ষ্যংছড়িতে হতদরিদ্রদের নামে ২৫০ কোটি টাকা ব্যাংকঋণ নিয়ে লোপাট
  • ‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি