কুবিতে সিদ্ধিদাতা গণেশের বন্দনা অনুষ্ঠিত
Published: 27th, August 2025 GMT
ভাদ্র মাসের পবিত্র শুক্লা চতুর্থী তিথিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মঙ্গলকারী দেবতা সিদ্ধিদাতা শ্রী শ্রী গণেশের বন্দনা।
বুধবার (২৭ আগস্ট) সকালে কুবির সনাতনী শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘পূজা উদ্যাপন পরিষদ’ এর উদ্যোগে বিনায়ক খ্যাত শ্রী শ্রী গণেশের বন্দনা শুরু হয়। এ পূজায় পৌরহিত্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০২২-২৩ বর্ষের শিক্ষার্থী ইমন চক্রবর্তী।
আরো পড়ুন:
সাজিদের হত্যাকারী ও আওয়ামী দোসরদের বিচার দাবিতে ইবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
আটক জালালকে নিয়ে পোস্ট করে হামলার শিকার ডাকসুর আরেক ভিপি প্রার্থী
বন্দনা পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সকাল ১১টার দিকে তাদের আরাধ্য দেবতার প্রতি অঞ্জলি অর্পণ করা হয়। পৃজাকৃত্যের শেষভাগে উপস্থিত ভক্তবৃন্দের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
এ বছর ছোটপরিসরে শুরু করলেও আগামী বছর থেকে বড় পরিসরে পূজা করার পরিকল্পনা রয়েছে আয়োজক সংগঠনটির।
এ নিয়ে পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সজীব বিশ্বাস বলেন, “আজ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে গণেশ পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের প্রার্থনা কক্ষে ভক্তি, আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজাটা সম্পূর্ণ করতে পেরেছি । শিক্ষার্থী ও শিক্ষক একত্র হয়ে শ্রী গণেশের কাছে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেছি। এ আয়োজন শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্য, ভক্তি ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করার এক সুন্দর প্রয়াস।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’
লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’
জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।
সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।