নদীতে মাছ কম পাওয়া ও চাষের মাছের খাবারের দাম বৃদ্ধির কারণে বেড়েছে মাছের দাম। বিক্রেতারা বলছে, গত সপ্তাহের তুলনায় গড়ে মাছের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের চাহিদার তুলনায় কাটছাঁট করে বাজার করছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর নিউমার্কেট, হাজারীবাগসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে অধিকাংশ মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। চাষের পাঙাস কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ৩০০ থেকে ৩৫০, দেশি শিং ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৭০০ টাকা এবং এক কেজি ওজনের ওপরে ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাড়তি দামে স্থিতিশীল রয়েছে সবজির দাম
বাজারে এখন পেঁপে ও মিষ্টি কুমড়া বাদে ৫০ টাকার নিচে কোন সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। এখন বাজারে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকা কেজি দরে, দেশি শশা ৮০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ও লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে। আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, দেশি আদা ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুদি বাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
বেড়েছে মুরগির ও ডিমের দাম
এখন বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকায়। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়।
কী বলছে ক্রেতা বিক্রেতারা
রাজধানীর হাজারীবাগ কাঁচাবাজারের কেনাকাটা করতে আসা গৃহিণী আয়শা খাতুন রাইজিংবিডিকে বলেন, “সবকিছুর দাম বাড়তি। তাই আজকের মাছ-মাংস না কিনে চলে যাচ্ছি। শাকসবজি কিনতে আসছি, তাতেও দাম বাড়তি। সরকারের কাছে অনুরোধ করব আমাদের মত নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।”
রাজধানীর নিউমার্কেটের মাছ বিক্রেতা ফরিদ উদ্দিন বলেন, “আমি মাছ ব্যবসায়ী কিন্তু আমি একটা ইলিশ মাছ নিয়ে খেতে পারছি না। তাহলে বোঝেন, সাধারণ মানুষ কীভাবে ইলিশ মাছ খাবে। ইলিশ মাছসহ সকল মাছের দাম বেড়েছে। আগামী কয়েক মাসে মাছের দাম কমার সম্ভাবনা নেই। মাছের দাম বাড়ার আরো একটি অন্যতম কারণ হলো মাছের খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে। এছাড়া এখন মাছ পরিবহনের খরচ ও বাড়তি।”
ঢাকা/রায়হান/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘বউ পেটানো’ অভিনেতার দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন
সৈয়দা আলিজা সুলতানের সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেতা ফিরোজ খান। তাদের এই সংসার ভেঙে গেছে। আলিজা অভিযোগ করেছিলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন ফিরোজ। কেবল তাই নয়, শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ছবিও প্রকাশ করেছিলেন। এরপর তোপের মুখে পড়েন ফিরোজ খান। নেটিজেনদের অনেকে তাকে ‘বউ পেটানো’ অভিনেতার তকমাও দেন।
প্রথম সংসার ভাঙার প্রায় দুই বছর পর ডা. জয়নবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ফিরোজ খান। এদিকে, সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্বিতীয় সংসার ভাঙার গুঞ্জন ছড়িয়েছে। মূলত, বিনোদনভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে ডা. জয়নবের ইনস্টাগ্রাম পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করা হয়। তারপরই শুরু হয় ফিরোজ খানের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন। দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে জয়নবের অভিযোগের স্ক্রিনশট।
ডা. জয়নব কথিত এই নোটে বলেন, “আমি আমার সহনসীমার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। অবিরাম মানসিক চাপ ও উদ্বেগে ক্লান্ত। এমন একজন মানুষের সঙ্গে সম্পর্কে আছি, যে আমাকে বিশ্বাস করে না। আমি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমি এখন ক্লান্ত। প্রতিটি কথোপকথন একটা লড়াইয়ের মতো লাগে, প্রতিটি মতবিরোধ যেন যুদ্ধ। এমন আচরণের শিকার হয়ে আমি ক্লান্ত। আমি যখন তাকে কিছু বলি, সে আমার উপর রাগ ঝাড়ে।”
স্ত্রী জয়নবের সঙ্গে ফিরোজ খান
সুখ স্মৃতিগুলো কষ্টে ঢাকা পড়ে গিয়েছে। এমন মন্তব্য করে জয়নব বলেন, “সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে যে স্মৃতিগুলো তৈরি করেছিলাম, তা এখন কষ্ট ও আঘাতে ঢাকা পড়ে গেছে। আমি অসংখ্যবার তাকে ক্ষমা করেছি। কিন্তু সেই ক্ষতগুলো কখনো পুরোপুরি সারেনি। বুঝতে পারছি, আমি এক ধরণের মানসিক অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি, একটা সম্পর্কে আটকে আছি, যা আমার জীবনের শক্তি শুষে নিচ্ছে। আমি জানি, আমি এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। আমি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও কোমলতার যোগ্য। সবকিছু ঠিক আছে—আমি আর এই ভান করতে চাই না।”
ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে জয়নব বলেন “এমন বিষাক্ত একটা সম্পর্কের জন্য আমি আমার সুখ ত্যাগ করেছি। আমি এখন নিজের জন্য, নিজের মানসিক সুস্থতার জন্য দাঁড়াচ্ছি। বেদনা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে, আমি আমার জীবনের এই অধ্যায় (বিবাহিত জীবন) শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ডিভোর্স নিচ্ছি। কারণ আমি জানি, এর চেয়ে ভালো কিছু পাওয়ার যোগ্য। জীবনের নতুন অধ্যায় শুরুর জন্য আমি প্রস্তুত, যেখানে আমাকে মূল্য দেওয়া হবে, সম্মান করা হবে, ভালোবাসা হবে।”
জয়নবের এই ‘ডিভোর্স নোট’ নিয়ে যখন জোর চর্চা চলছে, তখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন ফিরোজ খান। তবে এর আগে ফিরোজ খানের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া একটি পোস্টে দেখা যায়। তাতে জয়নবের বিরুদ্ধে ‘ব্ল্যাকমেইল’ ও ‘মানসিক চাপের’ অভিযোগ তোলেন। যদিও পরবর্তীতে পোস্টটি মুছে ফেলা হয়। পাশাপাশি এই অভিনেতা জানান, তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছিল।
ডা. জয়নব
তবে সংসার ভাঙার গুঞ্জনে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি ফিরোজ খান কিংবা তার স্ত্রী ডা. জয়নব। তবে বিনোদনভিত্তিক যে পেজ থেকে জয়নবের ‘ডিভোস নোট’ ছড়ানো হয়েছে, সেই পোস্টে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাতে জয়নব লেখেন, “এই ধরনের পেজগুলো আনফলো করুন অথবা রিপোর্ট করুন। এই ধরনের পেজ থেকে ভুয়া খবর ছড়িয়ে মানুষকে বিরক্ত করা হচ্ছে। সত্যি বলছি, আমি জানি না কীভাবে তারা আমার স্টোরিতে পোস্টটি করার অ্যাকসেস পেয়েছে। এই পোস্ট আমি কখনো করিনি।”
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম স্ত্রী সৈয়দ আলিজা সুলতানের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফিরোজ খানের। এ সংসারে সুলতান খান ও ফাতিমা খান নামে দুই সন্তান রয়েছে। বর্তমানে দুই সন্তানের দায়িত্ব নিয়ে আদালতে মামলা লড়ছেন এই প্রাক্তন দম্পতি। ২০২৪ সালে ডা. জয়নবকে বিয়ে করেন ফিরোজ খান।
ঢাকা/শান্ত