সলিমুল্লাহ মেডিকেলে আধুনিক ছাত্রাবাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
Published: 29th, August 2025 GMT
ঢাকার ঐতিহ্যবাহী স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ নতুন হোস্টেল নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
১০টি মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন ১৯টি হোস্টেল ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এই কলেজে একটি ১৫ তলা ছাত্র হোস্টেল ও দুটি ১২ তলা ছাত্রী হোস্টেল নির্মিত হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
এবার জবিতে ছাত্রীসংস্থার আত্মপ্রকাশ
নোবিপ্রবির মেডিকেল সেন্টারে যন্ত্র আছে, সেবা নেই
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম কলেজ প্রাঙ্গণে এই হোস্টেলগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
আনুষ্ঠানিকতার কোনো আয়োজন না রেখে শুধু ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে উদ্বোধন কার্যক্রম শেষ হয় এবং উপস্থিত অতিথিরা দোয়া করেন। কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও জরুরি বিভাগ ঘুরে দেখেন উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা এতদিন ঝুঁকিপূর্ণ পুরোনো হোস্টেলে থেকেছে, যা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা ছিল। এটি শুধু তাদের দাবি নয়, বরং অধিকার। নিরাপদ ও অনুপ্রেরণাদায়ক পরিবেশেই শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যেতে পারে। নতুন এই হোস্টেল তাদের সেই পরিবেশ করে দেবে।
নূরজাহান বেগম বলেন, “আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা এই আবাসিক পরিবেশে শুধু পড়াশোনাই না, বরং সৃজনশীলতায় নিজেদের বিকশিত করুক। খেলাধুলা, বিতর্ক, দেয়াল পত্রিকা বা ম্যাগাজিনের মাধ্যমে তারা যেন নিজেদের প্রকাশ করতে পারে।”
এ সময় তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক শীর্ষ শ্রেয়ানের মানবিক উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। শ্রেয়ান নেদারল্যান্ডস থেকে সংগ্রহ করা ১৭ কোটি টাকা মূল্যের ২ হাজার ৫০০ ভায়াল অ্যাল্টেপ্লেস ইনজেকশন বিনামূল্যে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাক রোগীদের জন্য সরবরাহ করেছেন। উপদেষ্টা বলেন, “শ্রেয়ানের মতো মানবিকতা আমাদের প্রতিটি শিক্ষার্থীর মধ্যে থাকুক।”
স্বাস্থ্য শিক্ষা সচিব ডা.
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন জানান, সারা দেশের ১০টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ১৯টি হোস্টেল নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। তারই অংশ হিসেবে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেলে ১৫ তলা একটি ছাত্র হোস্টেল ও দুটি ১২ তলা ছাত্রী হোস্টেল নির্মিত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ১৫ তলা ছাত্র হোস্টেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এতে ৩১২টি রুমে ৯৩৬টি ছাত্র সিট থাকবে। অন্যদিকে, দুটি ১২ তলা ছাত্রী হোস্টেলের নির্মাণ ব্যয় ৪৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, যেখানে ১৪৪টি রুমে ৫০৪টি ছাত্রী সিট থাকবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর, কলেজের অধ্যক্ষ, হাসপাতালের পরিচালকসহ স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও চিকিৎসকরা।
ঢাকা/এএএম/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট ম ড ক ল কল জ উপদ ষ ট কল জ র
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি