ঘরে-বাইরে থই থই করছে পানি। কোথাও যেতে হলে একমাত্র ভরসা নৌকা। শুকনো জায়গার দেখা মিলছে না। দুর্বিসহ জীবন কাটছে পানিবন্দি মানুষদের। তাদের না আছে রান্নার জায়গা, না আছে ঘুমানোর জায়গা। সবই পানির নিচে। এমনকি নৌকায় করে বিলের মধ্যে গিয়ে প্রাকৃতিক কর্ম সারতে হচ্ছে তাদের। নিজেদের যেন মনে হচ্ছে জলজ প্রাণী। এ দুর্দশা নিরসনের ব্যবস্থা করার যেন কেউ নেই। 

এটি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার জলাবদ্ধতার এলাকার চিত্র। এভাবেই পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে বাস করতে বাধ্য হচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা।

টানা প্রায় দুই মাস পানিবন্দি অবস্থায় আছেন ডুমুরিয়ার মানুষ। শৈলমারী রেগুলেটরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি পাম্প দিয়ে নিষ্কাশন করলেও পানি কমেনি। বরং, ক্রমান্বয়ে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

রাস্তা-ঘাট, বসতবাড়ি, মাছের ঘের, সবজিক্ষেত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবই পানির নিচে। জলাবদ্ধতার কারণে কাজ করতে না পারায় অনেক পরিবার খাদ্য সংকটে পড়েছে। সরকারিভাবে জিআর চাল বিতরণ করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।

ডুমুরিয়া উপজেলার রংপুর, রঘুনাথপুর, ধামালিয়া, মাগুরাঘোনা, খর্ণিয়া, আটলিয়া, গুটুদিয়া ও ডুমুরিয়া ইউনিয়নের ৪০টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। জলমগ্ন অবস্থায় অসহায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। এ বছর ১০ জুলাই ভারী বৃষ্টির পর থেকে জলাবদ্ধতা শুরু হয়।

পানিবন্দি গ্রামগুলো হলো— মুজারঘুটা, বারানসি, সাড়াভিটা, বটবেড়া, কৃষ্ণনগর, দেড়লি, বশিরাবাদ, আন্দুলিয়া, কোমরাইল, চেচুড়ি, কাটেঙ্গা, টোলনা, বরুনা, গজেন্দ্রপুর, রুপরামপুর, রামকৃষ্ণপুর, শান্তিনগর, ঘোনা, বিলপাটিয়ালা, মাধবকাটি, মান্দ্রা, ময়নাপুর, বিলসিংগা, রানাই, পাঁচপোতা, ঘোষড়া, বাদুড়িয়া, আলাদিপুর, আটলিয়া, বয়ারশিং, আধারমানিক, খড়িয়া, কোমলপুর, গুটুদিয়া, পাটকেলপোতা, মির্জাপুর, হাজিডাঙ্গা, গোলনা, খলসী, সাজিয়াড়া ও আরাজি ডুমুরিয়া। 

পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকায় তিন বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে এসব অঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এ বছর আগাম বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতাও আগে দেখা দিয়েছে। 

পানিবন্দি বারানসি গ্রামের চন্দ্রকান্ত মণ্ডল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, পানিবন্দি মানুষের দুঃখের সীমা নেই। প্রায় দুই মাস পানিবন্দি অবস্থায় চরম দুর্বিসহ জীবন কাটছে। কিন্তু, কেউ খোঁজ নিচ্ছে না। রাস্তায় হাটুপানি, উঠোনে কোমর পানি; রান্নার জায়গা নেই, জ্বালানি কাঠও নেই। এক সকালের রান্না পরের দিন সকাল পর্যন্ত খেতে হচ্ছে। নৌকা-ডিঙিতে চড়ে বিলের মধ্যে মলমূত্র ত্যাগ করতে হচ্ছে। মেঘ দেখলেই আসে ভয়, না জানি এবার কী হয়।

সাজিয়াড়া আবাসনের হালিমা বেগম জানান, তাদের ঘরের মধ্যে কোমরপানি। মাচা করে থাকতে হচ্ছে তাদের। আবাসনের ৫৮টি ঘরের সবই পানির নিচে। দুই দিন পরপর রান্না হয়। বেশিরভাগ সময় শুকনো খাবার খেতে হয়। উপজেলা প্রশাসন কয়েকদিন আগে চাল-ডাল-তেল দিয়েছে। তাদের খাবারের চেয়ে থাকার জায়গা আগে দরকার। পচা পানির দুর্গন্ধ ও বিষাক্ত সাপ-পোকার উপদ্রব বেড়ে গেছে আবাসনে।

রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোজিত বালা ও রংপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সমরেশ মণ্ডল জানিয়েছেন, শৈলমারী ১০ ভেন্ট রেগুলেটর দিয়ে বিল ডাকাতিয়াসহ ডুমুরিয়ার উত্তরাঞ্চলের পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে। ভদ্রা নদী পলিতে ভরাট হওয়ার কারণে শৈলমারী গেট দিয়ে পানি বের হচ্ছে না। উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি সাব-মার্সিবল পাম্প দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হলেও আশানুরূপ পানি বের হচ্ছে না। এ বছর বৃষ্টির পরিমান অনেক। তাই, ক্রমন্বয় বাড়ছে পানি। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস এম আবু আব্দুল্লাহ বায়েজিদ জানিয়েছেন, প্লাবিত অঞ্চলের মানুষের মাঝে ৫০ মেট্রিক টন জিআর চাল বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু, পানিবন্দি মানুষরা ত্রাণ চাচ্ছেন না। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের দাবি জানিয়েছেন তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইনসাদ ইবনে আমিন জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণে প্রায় ১০০ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এতে করলা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, সিম, চিচিঙা, ঝিঙ্গা, শশাসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৯ কোটি টাকার সবজি নষ্ট হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মো.

জিল্লুর রহমান রিগান জানিয়েছেন, বন্যায় প্রায় ৩ হাজার ৫০০ মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আল-আমিন জানিয়েছেন, ডুমুরিয়ায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিএডিসি ও উপজেলা প্রশাসন একযোগে চেষ্টা চালাচ্ছে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য। পানি নিষ্কাশনে খালগুলো উন্মুক্ত করা হচ্ছে। সব গেট দিয়ে পানি বের করা চেষ্টা চলছে। কালিঘাট স্লুইস গেটের কপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। ময়ুর নদী দিয়ে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে। খুব শিগগির পানিবন্দি মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম বলেছেন, বিল ডাকাতিয়াসহ ডুমুরিয়া অঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের জন্য শৈলমারী গেটের মুখ থেকে শুরু করে আপার সালতা পর্যন্ত জরুরিভাবে পলি অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। দুটি ভাসমান ভেকু ও দুটি লংবুম ভেকু দিয়ে খননের কাজ চলছে। আশা করি, দ্রুত পানি নিষ্কাশন হবে। গত ২২ আগস্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

তিনি বলেন, প্রায় ৫০ কোটি টাকার নদী ড্রেজিং, ২৬টি খাল পুনঃখননসহ পাঁচটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প স্থাপন প্রকল্প অনুমোদনের পথে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব হবে।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত প ন বন দ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নীতি সুদহার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ, কী প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতে

অবশেষে সুদের হার কমিয়েছে ফেডারেল রিজার্ভ। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের পর এই প্রথম সুদহার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে দুর্বলতার লক্ষণ, আফ্রো-আমেরিকানদের মধ্যে উচ্চ বেকারত্ব, কর্মঘণ্টা কমে যাওয়া ও নতুন চাকরি সৃষ্টির গতি কমে যাওয়ায় ফেড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার ২৫ ভিত্তি পয়েন্ট কমিয়ে ৪ থেকে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়ার পর ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল বলেন, অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাসে সুদহার আরও কমতে পারে। তিনি বলেন, শ্রমবাজারের ক্রমবর্ধমান দুর্বলতা এখন তাঁর ও সহকর্মী নীতিনির্ধারকদের প্রধান উদ্বেগ। খবর রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই ব্যাপক হারে সুদ কমানোর দাবি তুলছিলেন। তাঁর বক্তব্য, এতে অর্থনীতি চাঙা হবে। তবে ফেডের এ সিদ্ধান্ত তাঁর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। ফেডের পর্ষদে নতুন গভর্নর স্টিফেন মিরান ছিলেন একমাত্র ভিন্নমতাবলম্বী। তিনি ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট হারে সুদহার কমানোর পক্ষে ছিলেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে আরও বড় কাটছাঁটের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সুদের হার নির্ধারণে রাজনৈতিক প্রভাবের প্রশ্ন সব সময়ই তোলা হয়। ট্রাম্প সম্প্রতি ফেডের এক গভর্নর লিসা কুককে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন। যদিও কুক আদালতের লড়াইয়ে আপাতত নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন এবং বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান মিরানকে ফেডের পর্ষদে বসান।

শ্রমবাজারে দুর্বলতা

পাওয়েল বলেন, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বেকারত্ব বাড়ছে, তরুণেরা আরও ভঙ্গুর হয়ে পড়ছেন। সামগ্রিকভাবে চাকরি সৃষ্টির গতি খুবই কম। শ্রমবাজারকে আর দুর্বল হতে দেওয়া যাবে না।

পাওয়েল আরও সতর্ক করেন, নতুন চাকরির সংখ্যা এখন বেকারত্বের হার স্থিতিশীল রাখার জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে সামান্য ছাঁটাইও বেকারত্ব বাড়িয়ে দিতে পারে।

মূল্যস্ফীতি বনাম কর্মসংস্থান

মূল্যস্ফীতি এখনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। আশঙ্কা করা হচ্ছে বছরের শেষ নাগাদ মূল্যস্ফীতির হার ৩ শতাংশে উঠবে, যেখানে ফেডের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২ শতাংশ। কিন্তু ফেড মনে করছে, কর্মসংস্থানের ঝুঁকি এখন বেশি গুরুত্ব পাওয়ার মতো বিষয়।

ফেডের নতুন পূর্বাভাসে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বাড়িয়ে ১ দশমিক ৬ শতাংশ করা হতে পারে বলা হয়েছে। বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ৫ শতাংশেই স্থির থাকবে বলে তারা অনুমান করছে।

রাজনৈতিক টানাপোড়েন

এ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক নাটকও কম ছিল না। ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ নিয়ে সমালোচনা থাকলেও ফেডের পর্ষদের অন্য দুই ট্রাম্প-মনোনীত গভর্নর মিশেল বোম্যান ও ক্রিস্টোফার ওয়ালার শেষ পর্যন্ত মূল সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হয়েছেন। ওয়ালার বরাবরই শ্রমবাজারকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছেন।

পাওয়েল অবশ্য পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ‘আমাদের সংস্কৃতির মূল বিষয় হলো তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত। আজকের বৈঠকে সুদহার ব্যাপক হারে কমানোর বিষয়ে বিপুল সমর্থন ছিল না।’

বাজারের প্রতিক্রিয়া

সুদহার কমানোর ঘোষণার পর ওয়াল স্ট্রিটে প্রথমে শেয়ারের দাম বাড়লেও পরে ওঠানামা করে। শেষমেশ মিশ্র পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে দিন শেষ হয়। ডলার কিছুটা শক্তিশালী হয়েছে ঠিক, কিন্তু ট্রেজারি বন্ডের সুদ প্রায় অপরিবর্তিত। বাজার এখন প্রায় নিশ্চিত, অক্টোবরের বৈঠকেও সুদ কমানো হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ফেডের সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তনের মানে হলো তারা এখন ধীরে ধীরে ‘নিরপক্ষে’ অবস্থানের দিকে যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি সাময়িকভাবে কিছুটা বাড়লেও ২০২৬ সালের মধ্যে স্থিতিশীল হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নীতিসুদ কী

কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সুদহারে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে স্বল্প সময়ের জন্য ঋণ দেয়, সেটাই নীতি সুদহার। ইংরেজিতে একে বলে রেপো রেট। রেপোর বাংলা হচ্ছে পুনঃক্রয় চুক্তি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে এটি পরিচিত। অর্থনীতিতে নগদ তারল্যের জোগান দিতে বা অন্যভাবে বলতে গেলে ব্যাংকগুলোর জরুরি প্রয়োজনে অর্থ সরবরাহ করতে মুদ্রানীতির এ হাতিয়ার ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ হাতিয়ার ব্যবহার করে।

কোভিডের পর রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। তখন ফেডারেল রিজার্ভ বাজারে মুদ্রার চাহিদা নিয়ন্ত্রণ করতে দফায় দফায় নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে। ফলে নীতি সুদহার গত দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ২৫ থেকে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশে উঠে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহারের প্রভাব

বিশ্ব অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের নীতিসুদের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ফেডের নীতিসুদের হার বাড়লে ট্রেজারি বন্ডের দাম কমে এবং সুদহার কমলে ট্রেজারি বন্ডের দাম বাড়ে। এর কারণ হলো বাজারে নতুন ও অধিক সুদের বন্ড আসার পর পুরোনো বন্ডের কুপন (সুদ) কম মনে হয়, ফলে পুরোনো বন্ডের দাম কমে যায়। আবার যখন সুদের হার কমে, তখন নতুন বন্ডের কুপন কম হওয়ায় পুরোনো বন্ডের উচ্চ কুপনযুক্ত সুদ বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে, ফলে পুরোনো বন্ডের দাম বেড়ে যায়।

নীতিসুদ কমলেও একই প্রক্রিয়া ঘটে, তবে বিপরীতভাবে। সুদের হার কমলে নতুন বন্ডের কুপনও কমে যায়। এতে আগের উচ্চ সুদের কুপনযুক্ত বন্ডগুলো বেশি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। বিনিয়োগকারীরা এই পুরোনো বন্ডগুলো কিনতে আগ্রহী হন, ফলে সেগুলোর দাম বেড়ে যায়। বিনিয়োগকারীরা তখন তুলনামূলক ঝুঁকিপূর্ণ বাজারেও বিনিয়োগ আগ্রহী হন। এতে উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগপ্রবাহ বাড়ে এবং ডলারের চাপ কিছুটা কমে।

সে কারণে বাজার নীতি সুদহারের দিকে তাকিয়ে থাকে, সুদ কমলে উন্নয়নশীল দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ