মহাবিশ্বের অনেক রহস্য। সেই সব রহস্যের শেষ কোথায়, কেউ জানে না। এমনই এক রহস্যময় বস্তু রায়ুগু গ্রহাণু। এই গ্রহাণু তৈরির কোটি কোটি বছর পরও সেখানে তরল পানির অস্তিত্ব ছিল বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। নতুন এক গবেষণায় সেখানে পানির প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় জানা গেছে, সৌরজগৎ সৃষ্টির কয়েক শ কোটি বছর পরে রায়াগু গ্রহাণুর অভ্যন্তরে প্রচুর তরল পানির প্রবাহ ছিল।

জাপানের হায়াবুসা–২ মিশন ২০২০ সালের ডিসেম্বরে রায়াগু থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনে। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুয়োশি ইজুকার নেতৃত্বে গবেষকদের একটি দল রায়াগু গ্রহাণুর নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছে। গবেষকেরা গ্রহাণুর অভ্যন্তরে গ্রহাণু সৃষ্টির ১০০ কোটি বছর পরও তরল পানির অস্তিত্ব ছিল বলে মনে করছেন। তাঁদের গবেষণার ফলাফল নেচার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানী ইজুকা বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে রায়াগু গ্রহাণুতে পানির প্রবাহের একটি সুনির্দিষ্ট রেকর্ড সংরক্ষিত আছে। আমাদের ধারণার চেয়ে অনেক পরে গ্রহাণুর শিলার মধ্য দিয়ে তরল প্রবাহিত হয়েছে। বিভিন্ন গ্রহাণুতে পানির দীর্ঘমেয়াদি উপস্থিতি সম্পর্কে আমাদের প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে রায়াগুর পানির উপস্থিতি। এসব গ্রহাণুতে পানি আমাদের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি সময় ধরে সেখানে ছিল। সেই পানি দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যায়নি বলে মনে করছি আমরা। বিজ্ঞানীরা গ্রহাণুর নমুনায় লুটেটিয়াম ও হ্যাফনিয়াম নামক দুটি রাসায়নিক উপাদানের আইসোটোপ বিশ্লেষণ করে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। সেখানে হ্যাফনিয়ামের অনুপাত প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি দেখা যায়। অতীতে কোনো এক সময় তরল পদার্থ লুটেটিয়ামকে সরিয়ে দিয়ে শিলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।’

বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, রায়াগুর চেয়ে বড় একটি মূল গ্রহাণুর সঙ্গে কোনো কিছুর আঘাতের ফলে শিলা ভেঙে যায়। তখন বরফ গলে তরল পানিতে পরিণত হয়। এই পানি তখন গ্রহাণুর অভ্যন্তরে প্রবাহিত হতে শুরু করে। নতুন এই গবেষণার মাধ্যমে বলা হচ্ছে, রায়াগুর মতো কার্বনসমৃদ্ধ গ্রহাণুতে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি পানি থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন, আদিম পৃথিবীতে এ ধরনের গ্রহাণু বর্তমান ধারণার চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ বেশি পানি সরবরাহ করে থাকতে পারে। কোনো গ্রহাণুর কারণে পৃথিবীর প্রাথমিক মহাসাগর ও বায়ুমণ্ডলের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব তৈরি হয়েছিল। বিজ্ঞানী ইজুকা আরও বলেন, রায়াগুর মতো বস্তু দীর্ঘ সময় ধরে বরফ ধরে রাখতে পেরেছিল। এ থেকে বোঝা যায় যে পৃথিবীর উপাদান আমাদের কল্পনার চেয়ে অনেক বেশি আর্দ্র ছিল। গ্রহাণুতে পানির উপস্থিতি আমাদের গ্রহের পানিব্যবস্থার প্রাথমিক অবস্থা সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।

সূত্র: আর্থ ডটকম

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ক ব শ গ রহ ণ র গ রহ ণ ত তরল প ন আম দ র প রব হ

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?

দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’

প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।

আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’

তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’

মুশফিকুর রহিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ