প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে প্রোস্টেট ক্যানসার সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। রোগটি যখন প্রাথমিক ধাপে থাকে, তখন চিকিৎসকেরা নিরাময়ের উদ্দেশে চিকিৎসা দেন। প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত অনেক রোগীই প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।

‘বিশ্বমানের ক্যানসার চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় আহ্ছানিয়া মিশন ক্যানসার অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.

) ডা. মো. কুদরত-ই-ইলাহী এসব কথা বলেন। তাঁর আলোচনায় প্রোস্টেট ক্যানসার কেন হয়, ঝুঁকি, লক্ষণ ও চিকিৎসাপদ্ধতিসহ নানা বিষয়। প্রোস্টেট ক্যানসার নিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক পরামর্শও দেন তিনি।

অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন নাসিহা তাহসিন। ক্যানসার বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে এসকেএফ অনকোলজি। পর্বটি গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সরাসরি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম এবং প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থাপক জানতে চান বাংলাদেশে প্রোস্টেট ক্যানসারের পরিসংখ্যান নিয়ে। উত্তরে ডা. মো. কুদরত-ই-ইলাহী বলেন, বাংলাদেশে প্রোস্টেট ক্যানসারের সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ১ লাখে ৫ জন প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত। ধারণা করা হয়, বাংলাদেশের জনসংখ্যা অনুযায়ী এই সংখ্যা বাস্তবে আরও বেশি।

প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বা রিস্ক ফ্যাক্টর

এ প্রসঙ্গে ডা. মো. কুদরত-ই-ইলাহী বলেন, প্রোস্টেট পুরুষদের দেহের একটি অঙ্গ, যা মূত্রথলির নিচে অবস্থিত। তাই এটি শুধু পুরুষদেরই হয়ে থাকে। প্রোস্টেট ক্যানসারের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো বয়স, বিশেষ করে ৫০ বছরের পর ঝুঁকি বাড়ে। সেই সঙ্গে পারিবারিক ইতিহাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, এটি জিনগতভাবে ছড়াতে পারে। জাতিগত বৈশিষ্ট্যও অন্যতম একটি কারণ, যেমন আফ্রিকান বংশোদ্ভূতদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়।

ডা. মো. কুদরত-ই-ইলাহী আরও বলেন, মডিফায়েবল রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো পরিবর্তনযোগ্য। যেমন উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার, স্থূলতা, শারীরিক কার্যকলাপ না করা, ধূমপান, দীর্ঘমেয়াদি প্রোস্টেটাইটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল ও টেস্টোস্টেরন। কিন্তু নন-মডিফায়েবল রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো পরিবর্তনযোগ্য নয়। যেমন বয়স, পারিবারিক ইতিহাস, জিনগত মিউটেশন ও জাতিগত বৈশিষ্ট্য।

জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে প্রোস্টেট ক্যানসারের কি কোনো সম্পর্ক রয়েছে? জানতে চাইলে ডা. মো. কুদরত-ই-ইলাহী বলেন, জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে প্রোস্টেট ক্যানসার সম্পর্কিত। উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার, পরিশোধিত চিনি, ফাস্ট ফুড ও তৈলাক্ত খাবার খাওয়া স্থূলতা বাড়ায়। শারীরিক পরিশ্রম না করলে এই ঝুঁকি আরও বাড়ে, যা প্রোস্টেট ক্যানসারের জন্য অন্যতম সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।

প্রোস্টেট ক্যানসারের স্ক্রিনিং

ডা. মো. কুদরত-ই-ইলাহী বলেন, ‘স্ক্রিনিং হলো প্রারম্ভিক পর্যায়ে ক্যানসার শনাক্ত করার একটি পদ্ধতি। প্রোস্টেট ক্যানসারের জন্য সাধারণত দুটি প্রধান স্ক্রিনিং পদ্ধতি রয়েছে—প্রোস্টেট-স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন (পিএসএ) এবং ডিজিটাল রেক্টাল এক্সামিনেশন (ডিআরএ)। প্রোস্টেট-স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন একটি রক্ত পরীক্ষা, যা ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষদের করা উচিত। আর যদি পরিবারে প্রোস্টেট ক্যানসারের ইতিহাস থাকে, তাহলে ৪৫ বছর বা তারও আগে এই পরীক্ষা করানো যেতে পারে। অন্যদিকে ডিজিটাল রেক্টাল এক্সামিনেশনে প্রোস্টেটের আকার ও গঠন পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যানসার শনাক্ত করা হয়।

প্রোস্টেট ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ

প্রোস্টেট ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে ডা. মো. কুদরত-ই-ইলাহী বলেন, প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণত প্রোস্টেট বড় হয়ে যাওয়ার কারণেও হতে পারে। যেমন ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, প্রস্রাব করার পরও পরিপূর্ণভাবে প্রস্রাব না হওয়ার অনুভূতি, রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের জন্য ওঠা, প্রস্রাবে জ্বালা বা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বের হওয়া এবং প্রস্রাব করতে অসুবিধা হওয়া। ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী পুরুষদের যদি এই লক্ষণগুলো খুব বেশি দেখা যায়, তাহলে তাঁদের সচেতন হওয়া উচিত এবং স্ক্রিনিং করানো দরকার।

বাংলাদেশে প্রোস্টেট ক্যানসারের বর্তমান অবস্থা, রোগনির্ণয়, ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসাসুবিধা বিষয়ে পরামর্শ দেন ডা. মো. কুদরত-ই-ইলাহী

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস র ব

এছাড়াও পড়ুন:

দুই মিনিটের বিতর্কিত দৃশ্য দিয়ে আলোচনায়, পরে বলিউডকে বিদায় জানান সেই অভিনেত্রী

বলিউডের ইতিহাসে এমন অনেক অভিনেত্রী আছেন, যাঁরা শূন্য থেকে শুরু করে রাতারাতি পরিচিতি পেয়েছেন; পরে আবার হঠাৎই হারিয়ে গেছেন। কিমি কাতকার তেমনই একজন। ১৯৮০-এর দশকে বলিউডে তিনি ছিলেন আলোচিত ও সাহসী অভিনেত্রীদের একজন।

কিমির উত্থান
আশির দশকটি বলিউডে সৃজনশীল ও পরিবর্তনের সময় ছিল, যেখানে অনেক প্রতিভাবান অভিনেতা-অভিনেত্রী তাঁদের ছাপ ফেলেছেন। কিমি ছিলেন সেই সময়ের অন্যতম উদীয়মান নায়িকা। পর্দায় সাহসী দৃশ্যের জন্য তিনি ব্যাপক পরিচিতি পান। যদিও তাঁর চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার ছিল খুবই সংক্ষিপ্ত; কিন্তু এর মধ্যেই ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন।

মুম্বাইতে জন্ম নেওয়া কিমি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মডেল হিসেবে, পরে তিনি চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। ১৯৮৫ সালে ‘অ্যাডভেঞ্চার অব টারজান’ দিয়ে আলোচিত হন তিনি। সিনেমার সাফল্য তাঁকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে। হেমন্ত বীরজের সঙ্গে জুটি বেঁধে তিনি দর্শকদের মন মাতিয়ে দেন। তবে এ ছবিতেই একটি নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় করে রাতারাতি আলোচনায় আসেন। দৃশ্যটি নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘সেই সময় আমি জানতাম না এই দৃশ্য কতটা বিতর্কিত হবে। কিন্তু অভিনয় আমার জন্য সব সময় ছিল সত্যিই একটি চ্যালেঞ্জ।’ এরপর ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে অমিতাভ বচ্চন, অনিল কাপুর, গোবিন্দ ও আদিত্য পঞ্চোলির সঙ্গেও সিনেমা করেন তিনি। তাঁর নাচ ও অভিনয়ের দক্ষতা দর্শকদের কাছে তাঁকে প্রিয় করে তোলে।

‘অ্যাডভেঞ্চার অব টারজান’-এ কিমি কাতকার। আইএমডিবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ