ভারতে নেতাসহ ৬০ মাওবাদীর আত্মসমর্পণ
Published: 14th, October 2025 GMT
ভারতের এক মাওবাদী বিদ্রোহী নেতা ও প্রায় ৬০ জন যোদ্ধা আত্মসমর্পণ করেছেন। আজ মঙ্গলবার মহারাষ্ট্র রাজ্যের গাদচিরোলি এলাকায় তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
ওই মাওবাদী নেতার নাম মাল্লোজুলা ভানুগোপাল রাও। তিনি ‘সোনু’ নামে পরিচিত। মাওবাদী গেরিলাদের সঙ্গে গত শতকের আশির দশক থেকে যুক্ত ছিলেন সোনু।
এমন সময় আত্মসমর্পণের ঘটনা ঘটল, যখন মাওবাদীদের বিদ্রোহীদের থামাতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে ভারত সরকার। আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে এই বিদ্রোহীদের দমন করতে চায় নয়াদিল্লি।
গাদচিরোলি নামের যে এলাকায় মাওবাদী সদস্যরা আত্মসমর্পণ করেছেন, তার কাছে ছত্তিশগড় রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় শর্মা বলেন, ‘যাঁরা স্বাভাবিক জীবনধারায় ফিরে এসেছেন, তাঁদের স্বাগত জানাই। তবে যাঁরা ফিরে আসবেন না, তাঁদের যথাযথভাবে সশস্ত্র বাহিনীর মাধ্যমে মোকাবিলা করা হবে।’
এর আগে গত আগস্টে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া (মাও) এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল, তারা তাদের সশস্ত্র সংগ্রাম স্থগিত করছে। ভারত সরকারের বারবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ভারতে মাওবাদী সবচেয়ে শক্তিশালী হয়েছিল চলতি শতকের শুরুর দিকে। তখন তাদের ১৫ থেকে ২০ হাজার যোদ্ধা ছিল। ভারতের তিন ভাগের প্রায় এক ভাগ নিয়ন্ত্রণ করত তারা। তবে বিগত কয়েক বছরে ভারত সরকারের কঠোরতার কারণে মাওবাদীদের তৎপরতা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াত ও ধর্মীয় বিষয়ে হেফাজতের আমিরের বক্তব্য ব্যক্তিগত: মামুনুল হক
জামায়াতে ইসলামীকে ভোট না দেওয়ার আহ্বানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় বিষয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর বক্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত বলে জানিয়েছেন মাওলানা মামুনুল হক।
কোনো সাংগঠনিক বক্তব্য থাকলে সেটি সাংগঠনিক ব্যানার থেকেই আসবে বলে জানান হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সেক্রেটারি মামুনুল।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন মামুনুল হক। সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ বাতিল ও ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিধিমালা প্রণয়ন, পবিত্র কোরআন অবমাননার বিচার, কাঠামোগত ইসলামবিদ্বেষ ও ধর্ম অবমাননা রোধে সর্বোচ্চ কঠোর আইন প্রণয়ন এবং ৫ মে–কে ‘শাপলা গণহত্যা দিবস’ ঘোষণার দাবিতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
৩ অক্টোবর চট্টগ্রামে শানে রেসালত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের সমালোচনা করেন শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি আগামী সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানান।
আজকের সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে মামুনুল হকের কাছে সাংবাদিকেরা হেফাজতের অবস্থান জানতে চান। জবাবে মামুনুল হক বলেন, শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী শুধু হেফাজতে ইসলামের আমির নন, তিনি দেশের বর্ষীয়ান ও শীর্ষ একজন আলেম। আলেমদের মুরব্বি হিসেবে তিনি ধর্মীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন ইসলামিক বিষয়ে তাঁর পক্ষ থেকে যে মতামত ও বক্তব্য আসে, সেসব খুবই প্রয়োজনীয়। ইসলামবিষয়ক কোনো বিভ্রান্তি নিরসন অথবা ভুল মতবাদের খণ্ডন করে দেওয়া বক্তব্য শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর ব্যক্তিগত।
মামুনুল হক আরও বলেন, হেফাজতে ইসলাম সরাসরি কখনোই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বা রাজনৈতিক তৎপরতার সঙ্গে জড়িত নয়; বিশেষ করে দলীয় রাজনীতির সঙ্গে হেফাজতের কোনো সাংগঠনিক সম্পৃক্ততা নেই। সে হিসেবে নির্বাচনী তৎপরতা, কোনো জোট বা অ্যালায়েন্স করা হেফাজতের মৌলিক নীতিমালার পরিপন্থী। সেটি করার সুযোগ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে মামুনুল হক বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে মাজারে হামলা বা আক্রমণ করাকে হেফাজত সমর্থন করে না।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, ‘কোনো অভিভাবক তার সন্তানকে নাচগান শেখানোর জন্য স্কুলে ভর্তি করে না। তাই গানবাজনার শিক্ষক নিয়োগের আইন প্রত্যাহার করতে হবে। স্কুলগুলোয় ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।’
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
হেফাজতে ইসলামের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কঠোর আইন না থাকার সুযোগে একের পর এক ধর্ম অবমাননার মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদ অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির সুযোগ পাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।