ময়মনসিংহের ত্রিশালে বন্ধুকে হত্যা করে থানায় ‘চাইনিজ কুড়াল’ নিয়ে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন অহিদুল ইসলাম অনিক (২৩) নামে এক যুবক। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ত্রিশাল সরকারি নজরুল একাডেমি মাঠে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।

পুলিশের ধারণা, ব্যক্তিগত বিরোধ থেকে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে।

আরো পড়ুন:

খুলনায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

নোয়াখালীতে তুচ্ছ ঘটনায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা

নিহত যুবকের নাম মুনতাসীর ফাহিম (২২)। তিনি ত্রিশাল ইউনিয়নের চিকনা মনোহর গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে। অভিযুক্ত অনিক ত্রিশাল পৌরসভার দরিরামপুর গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে।

এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত অনিক রাত ৯টার দিকে কুড়াল হাতে নিয়ে ত্রিশাল থানায় গিয়ে ডিউটি অফিসারকে জানান, তিনি তার বন্ধু ফাহিমকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। এরপর পুলিশ তাকে শান্ত করে হেফাজতে নেয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, পুলিশ সরকারি নজরুল একাডেমির ভোকেশনাল শাখার দক্ষিণ পাশের পানির ট্যাংকির কাছ থেকে ফাহিমের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে।

নিহত ফাহিমের নানি মাকসুদা আক্তার বলেন, “আমার নাতি পৌর এলাকার হাসপাতালের পেছনে ভাড়া বাসায় থাকতো। মালয়েশিয়াতে অর্নাসে পড়ালেখা করত। চার মাস আগে সেখান থেকে দেশে আসে। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তার ফেরার ফ্লাইট ছিল। ফাহিম সব সময় বাসায় থাকত, অনিক তাকে ডেকে নিয়ে যাইতো। সে পরিকল্পনা করে আমার নাতিকে হত্যা করেছে।” 

ত্রিশাল থানার তদন্ত (ওসি) গোলাম মুস্তফা রুবেল বলেন, “ফাহিমকে হত্যা করে অনিক রক্তমাখা চাইনিজ কুড়াল নিয়ে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে, তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। ব্যক্তিগত বিরোধ থেকেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মিলন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য উদ ধ র আটক অভ য গ

এছাড়াও পড়ুন:

বিব্রতকর পরাজয়ের সঙ্গে মিলল ‘‘ভুয়া, ভুয়া’ দুয়োধ্বনি

উইকেটে মাত্রই গিয়েছিলেন লিটন দাস। ঠিকঠাক থিতুও হতে পারেননি। আগেই অযাচিত শট খেলতে গেলেন। ঠিকঠাক টাইমিং মেলাতে পারেননি। ডিপ পয়েন্টে ক‌্যাচ দিয়ে ফিরলেন সাজঘরে।

গ‌্যালারিতে শোরগোল পড়ে যায়, ‘ভুয়া-ভুয়া-ভুয়া’ দুয়োধ্বনি। পরের ব‌্যাটসম‌্যান ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলও খেলে ফেলেন। কিন্তু দর্শকদের ক্ষোভ থামে না! শুধু অধিনায়ক লিটনের জন‌্যই না, তানজিদ, পারভেজ, সাইফ যারাই আয়ারল‌্যান্ডের দেওয়া ১৮২ রানের লক্ষ‌্য তাড়া করতে নেমে আত্মসমর্পণ করে ফিরেছেন প্রত‌্যেকের জন‌্যই দর্শকদের জবাব প্রস্তুত ছিল! এই মাঠে আগের তিন ম‌্যাচেই হেরেছে দল। নতুন শুরুতে আবার সেই পুরো ফল। দর্শকদেরই বা দোষ কোথায়!

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং টার্গেট দিল আয়ারল্যান্ড

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

স্বাগতিকদের শুরুর হতশ্রী ব‌্যাটিং শুধুমাত্র আয়ারল‌্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে হয়নি। চরম বাজে ব‌্যাটিং অ‌্যাপ্রোচও ছিল ক্রিকেটারদের। বিশাল লক্ষ‌্য তাড়া করতে নেমে প্রথম বাউন্ডারি পেতে যদি ২৮ বল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়, তাহলে টি-টোয়েন্টি খেলার মূল‌্য কোথায়? অসহায় আত্মসমর্পণে বাংলাদেশ প্রথম টি-টোয়েন্টি হেরেছে ৩৯ রানের ব‌্যবধানে। ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪২ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর আয়ারল‌্যান্ডের সঙ্গে ভালো করবে এই আশাতেই বুক বেঁধেছিল সমর্থকরা। কিন্তু বৃহস্পতিবার ব‌্যর্থতার জলে হাবুডুবু খেয়েছে গোটা দল। না হয়েছে বোলিং, না হয়েছে ব‌্যাটিংয়ে। ২২ গজে বাজে একটি দিন কাটিয়ে বিব্রতকর পরাজয়কে সঙ্গী করেছেন ক্রিকেটাররা।

টস হেরে ব‌্যাটিং করতে নেমে আয়ারল‌্যান্ডের ব‌্যাটিং ছিল দারুণ। প্রথম ওভারে অধিনায়ক পল স্টারর্লিং দুটি বাউন্ডারি পান। তৃতীয় ওভারে টিম টেক্টর পেসার শরিফুলের ওভারে চারটি বাউন্ডারি মারেন। তানজিম সাকিব বোলিংয়ে এসে ব্রেক থ্রু এনে দিলেও আয়ারল‌্যান্ড ১ উইকেটে ৪৮ রান তুলে নেয় পাওয়ার প্লে’তে।

শুরুর ঝড়ো ব‌্যাটিং পরে ধরে রাখেন টিম টেক্টর। ১৯ বলে ৩২ রান করেন তিনি। তাকে রিশাদ থামালেও হ‌্যারি টেক্টর ও কার্টিস ক‌্যাম্ফারের ৪৪ রানের জুটি আইরিশদের এগিয়ে নেয়। টেক্টর ছিলেন দারুণ। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে তুলে নেন টি-টোয়েন্টির সপ্তম ফিফটি। ৪২ বলে করেন ৬৯ রান।

শেষ ওভারে তানজিম হাসানকে দুটি ছক্কা হাঁকান চোখের পলকে। ওই ওভারে ১৭ রান আসলে বাংলাদেশের মনোবলে কিছুটা ধাক্কা খায়। ৪১ রানে ২ উইকেট নিয়ে তানজিম ছিলেন দলের সেরা বোলার। মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ছিলেন সবচেয়ে নিয়ন্ত্রিত। তবে উইকেট পাননি কোনো। শরিফুল ও রিশাদ পেয়েছেন ১টি করে উইকেট।

বাংলাদেশের শুরুর চার ব‌্যাটসম‌্যানের কেউ ডাবল ডিজিটে যেতে পারেননি। তানজিদ (২), পারভেজ (১), লিটন  (১) ও সাইফ (১৩ বলে ৬) আউট হন। ১৮ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলীর ব‌্যাটে প্রতিরোধ বাংলাদেশ। ৩৪ বলে ৪৮ রান আসে তাদের জুটিতে।

জাকের ১ ছক্কায় ১৬ বলে ২০ রান করে ফিরে আসলেও তাওহীদ হাল ছাড়েননি। তুলে নেন টি-টোয়েন্টির পঞ্চম ফিফটি। তানজিম (৫) ও নাসুম (০) দ্রুত আউট হলে তাওহীদ নিজেকে গুটিয়ে নিতে বাধ‌্য হন। তবে নবম উইকেটে বাংলাদেশ পায় প্রতিরোধ। সেটা ম‌্যাচ জয়ের জন‌্য নয় অবশ‌্যই। পরাজয়ের ব‌্যবধান কমিয়ে আনার। শরিফুল ও তাওহীদ ৩১ বলে ৪৮ রান করেন। যেখানে শরিফুলের অবদান ১২। তাদের এই জুটিতেই দলের রান তিন অঙ্কে যায়। শেষ পর্যন্ত তাওহীদের একার লড়াইয়ে ১৪২ করতে পারে দল। ৫০ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৩ রানে নটআউট তাওহীদ।

বাংলাদেশকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বাঁহাতি স্পিনার ম‌্যাথু হ‌ামফ্রিজ ১৩ রানে ৪ উইকেট পেয়েছেন। ৩ উইকেট নেন ব‌্যারি ম‌্যাকার্থি। ২টি পেয়েছেন মার্ক আডায়ার।

যেখানে শেষ, সেখানেই শুরু। গত ৩১ অক্টোবর এই মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। হারের যন্ত্রণা সইতে না পেরে সমর্থকরা পুরো দলকে ‘ভুয়া-ভুয়া’ দুয়ো দেন। ঠিক পরের ম‌্যাচেই আবার একই স্লোগানে মুখরিত চট্টগ্রামের গ‌্যালারি। বাংলাদেশের ব‌্যাটিংয়ের শুরু থেকে, ম‌্যাচ হারের পর পর্যন্ত বারবার ভেসে এসেছে ‘ভুয়া-ভুয়া’ স্লোগান।

২৯ নভেম্বর একই মাঠে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি। সিরিজ বাঁচাতে পারবে কিনা বাংলাদেশ সেই প্রশ্নও উঠা শুরু হয়ে গেছে।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিব্রতকর পরাজয়ের সঙ্গে মিলল ‘‘ভুয়া, ভুয়া’ দুয়োধ্বনি