ওপেনএআইয়ের তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত (এআই) চ্যাটবট ‘চ্যাটজিপিটি’ যেকোনো প্রশ্নের উত্তর দ্রুত ও নির্ভুলভাবে জানাতে পারে। ব্যবহারকারীর নির্দেশমতো নিজ থেকে বার্তা, নিবন্ধ বা কবিতাও লিখে দেয় চ্যাটবটটি। ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করতে চ্যাটজিপিটিতে এবার অ্যাপস এসডিকে যুক্ত করেছে ওপেনএআই। নতুন এ সুবিধা চালুর ফলে চ্যাটজিপিটির চ্যাট উইন্ডো থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তৈরি অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইনে হোটেল রুম ও বাসা ভাড়া নেওয়া যাবে। চাইলে গান শোনার তালিকা তৈরিসহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিভিন্ন বিষয়ের প্রেজেন্টেশনও দ্রুত তৈরি করা যাবে।
ওপেনএআই জানিয়েছে, বর্তমানে চ্যাটজিপিটির ব্যবহারকারী সংখ্যা ৮০০ কোটির বেশি। নতুন এই উদ্যোগের লক্ষ্য দৈনন্দিন অনলাইন কার্যক্রমকে এক জায়গায় এনে ব্যবহারকারীদের জন্য আরও বেশি সুবিধা দেওয়া। প্রাথমিকভাবে চ্যাটজিপিটিতে বুকিং ডটকম, ক্যানভা, কুরসেরা, এক্সপিডিয়া, ফিগমা, স্পটিফাই ও জিলো অ্যাপ যুক্ত করা হয়েছে। ফলে চ্যাটজিপিটিতে এখন কেউ যদি লেখেন, ‘প্যারিসে থাকার জন্য হোটেল খুঁজে দাও’, তাহলে বুকিং ডটকমের রিয়েলটাইম তালিকা সরাসরি চ্যাটজিপিটির চ্যাটে দেখা যাবে। আবার কেউ চাইলে ক্যানভার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রেজেন্টেশনের খসড়া তৈরি করতে পারবেন।
চ্যাটজিপিটির এই নতুন অ্যাপ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে অ্যাপস এসডিকের ওপর ভিত্তি করে, যা মূলত কনটেক্সট প্রটোকল মানদণ্ড মেনে তৈরি করা হয়েছে। এটি একটি উন্মুক্ত প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে ডেভেলপাররা নিজেদের টুল ও ডেটা চ্যাটজিপিটির সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন, এমনকি নিজেদের মতো করে ইন্টারফেসও নকশা করতে পারেন। ফলে ডেভেলপাররা চাইলে নিজস্ব কোড ব্যবহার করে চ্যাটজিপিটিতে ব্যাকএন্ড সিস্টেম যুক্তের পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের জন্য লগইন বা প্রিমিয়াম সেবা চালু করতে পারবেন।
ওপেনএআইয়ের তথ্যমতে, চ্যাটজিপিটিতে যুক্ত হওয়া প্রতিটি অ্যাপকেই ওপেনএআইয়ের নীতিমালা মেনে চলতে হবে এবং সব বয়সের ব্যবহারকারীর জন্য উপযোগী হতে হবে। পাশাপাশি অ্যাপ ব্যবহারের আগে ব্যবহারকারীকে জানানো হবে, কোন তথ্য কীভাবে ব্যবহৃত হবে। ভবিষ্যতে ব্যবহারকারীরা নিজেদের তথ্য নিয়ন্ত্রণের আরও সুযোগ পাবেন। চলতি বছরেই ওপেনএআই ডেভেলপারদের জন্য নতুন করে অ্যাপ জমা দেওয়ার ও সেখান থেকে আয়ের সুযোগ চালু করবে। একই সঙ্গে চালু হবে একটি অ্যাপ ডিরেক্টরি, যেখানে ব্যবহারকারীরা অ্যাপ ব্রাউজ ও অনুসন্ধান করতে পারবেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে ক্রিকইনফো ব্লকের আলোচনা তুললেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে অনলাইন জুয়া নিষিদ্ধ, অথচ ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো ডটকমে দেখানো হচ্ছে জুয়ার বিজ্ঞাপন। তাই দেশে এই ওয়েবসাইট চলতে দেওয়া যায় কি না, সেই আলোচনা তুলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা নিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব সোমবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে এ নিয়ে আলোচনা তোলেন।
তৈয়ব লিখেছেন, ‘এককভাবে বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে সবচেয়ে বেশি জুয়ার বিজ্ঞাপন দেয় ইএসপিএন ক্রিকইনফো ডটকম। অনলাইন জুয়া, এর প্রচার-প্রচারণা বিজ্ঞাপন ইত্যাদি বাংলাদেশের সাইবার সুরক্ষা আইন ২০২৫–এ নিষিদ্ধ। জুয়ার কালো থাবায় বাংলাদেশের যুবকরা সর্বস্বান্ত, পাচার হয়ে যাচ্ছে দেশের সম্পদ। আমরা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডসহ বেশকিছু ক্রিকেট প্লেইং দেশের ক্রিকইনফো অ্যাডভার্টাইজমেন্ট স্টাডি করে দেখেছি। সেখানে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন শতভাগ অনুপস্থিত।’
জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ) ক্রিকইনফোকে এ বিষয়ে ই–মেইল পাঠিয়েছে। পরবর্তী সময়ে তাদের ডাকযোগে চিঠিও পাঠানো হবে বলে জানান ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব।
আরও পড়ুনসমালোচনাকারীরা কার পক্ষে বলছেন: ফয়েজ আহমদ১২ অক্টোবর ২০২৫তৈয়ব বলেন, একদিকে অবৈধভাবে জুয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে আইন ভঙ্গ করছে ক্রিকইনফো, অন্যদিকে জুয়ার বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের উপর আয়কর কিংবা ভ্যাট হিসেবে বাংলাদেশকে কোনো অর্থ দেয়নি আইন পাসের আগে-পরে। জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধ না করলে বাংলাদেশে ক্রিকইনফো ব্লক করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত হবে কি না, এ বিষয়ে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি জনমত সংগ্রহ করবে।
বাংলাদেশের সংবিধানে বলা আছে, গণিকাবৃত্তি ও জুয়াখেলা নিরোধের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। জুয়া দমনে ব্রিটিশ আমলে ১৮৬৭ সালে প্রণীত একটি আইনও রয়েছে।
আরও পড়ুনব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় আইন হচ্ছে, জাতীয় কর্তৃপক্ষ গঠনের চিন্তা: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব২৮ জুন ২০২৫অন্তর্বর্তী সরকার যে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ করেছে, সেখানে সাইবার জগতে জুয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি সাইবার স্পেসে জুয়াখেলার জন্য কোনো পোর্টাল বা অ্যাপস বা ডিভাইস তৈরি করেন বা পরিচালনা করেন বা জুয়া খেলায় অংশগ্রহণ করেন বা খেলায় সহায়তা বা উৎসাহ প্রদান করেন বা উৎসাহ প্রদানের জন্য বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রচার বা বিজ্ঞাপিত করেন, তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর শাস্তি দুই বছর কারাদণ্ড অথবা এক কোটি টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড।
আরও পড়ুনফোর–জির সর্বনিম্ন গতি ১০ এমবিপিএস নির্ধারণ: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব৩১ আগস্ট ২০২৫