মিরপুরে আগুন: ১০ জনের লাশ শনাক্তের দাবি স্বজনদের
Published: 15th, October 2025 GMT
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে ১০ জনের মরদেহ শনাক্তের দাবি করেছেন স্বজনেরা।
এই তথ্য জানিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সবগুলো লাশের চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। তবে ১০ জনের লাশ শনাক্তের দাবি করেছেন স্বজনেরা। ভবিষ্যতে সমস্যা এড়াতে এখন সবগুলো লাশের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হবে। পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে স্বজনদের কাছে আপাতত এই ১০টি লাশ হস্তান্তর করা যাবে।
শিয়ালবাড়ির একটি টিনশেড দোতলা রাসায়নিক গুদামে গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আগুন লাগে। গুদামে আগুন ধরে বিস্ফোরিত হয়ে পাশের চারতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। পরে চারতলা ভবনের দোতলা ও তিনতলার বিভিন্ন স্থান থেকে ১৬টি লাশ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া ১৬টি লাশ গতকাল সন্ধ্যার পর ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়। হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.
শিয়ালবাড়ির ৩ নম্বর সড়কে টিনশেডের রাসায়নিক গুদাম ও চারতলা ভবনটি অবস্থিত। ভবনটির দোতলায় স্মার্ট প্রিন্টিং নামের একটি কারখানায় টি-শার্ট প্রিন্ট করা হয়। আর তিন ও চারতলায় আরএন ফ্যাশন নামের একটি পোশাক কারখানা আছে।
আরও পড়ুনবিস্ফোরণের পর ছড়িয়ে পড়ে ‘বিষাক্ত গ্যাস’, কারখানার ছাদের দরজা ছিল তালাবন্ধ১৫ ঘণ্টা আগেসরেজমিন দেখা গেছে, ভবনটি চারতলা হলেও ছাদে টিনশেড দিয়ে আরও একটি তলা করা হয়েছে। এই ভবন ও টিনশেডের রাসায়নিক গুদামে কোনো অগ্নিনিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না। ভবন ও গুদাম কোনোটিরই ফায়ার সেফটি প্ল্যান বা লাইসেন্স ছিল না।
আরও পড়ুনমিরপুরে আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬১৮ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনস্বামী-স্ত্রী ছিলেন কারখানায়, আগুন লাগার পর দুজনই নিখোঁজ১৪ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ রতল
এছাড়াও পড়ুন:
স্বজনদের ফেরত দিন, না পারলে জড়িতদের বিচার করুন
ছাত্রদল নেতা সেলিম রেজা পিন্টু গুম হওয়ার পর এক যুগ পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো তাঁর কোনো খোঁজ নেই। তাঁর বোন রেহানা পারুল বলেন, ভাই কোথায় তা তাঁরা জানতে চান। এ বিষয়ে গুম কমিশন ও ট্রাইব্যুনাল কেন কিছু বলছে না—তার উত্তর চান তিনি।
আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচার দাবিতে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারগুলো কথা বলে। ওই মানববন্ধনে পিন্টুর বোন রেহানা পারুল এ কথা বলেন।
গুমের শিকার খালেদ হোসেনের স্ত্রী সৈয়দা শারমিন সুলতানা পরিচয় দিতে গিয়ে দ্বিধায় থাকেন। তাঁর পরিচয় দাঁড়িয়েছে গুম খালেদের স্ত্রী হিসেবে। তিনি বলেন, ‘এক যুগ ধরে ছবি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। প্রধান উপদেষ্টার কাছে গেলাম। গুম কমিশন হলো। কিন্তু তারা আমাদের কোনো খবর দেয় না।’
সৈয়দা শারমিন সুলতানা আরও বলেন, তিনি চান না তাঁর সন্তান এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বাবার খোঁজ চাইবে। এই বিচার প্রহসনের। এসব ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের আলাদা করে রাখা হচ্ছে। বৈষম্য থেকেই গেল।
আদিবা ইসলামের ছোট ভাই তার বাবা পারভেজ হোসেনের মুখ দেখেনি। সে জানে না বাবা কেমন, বাবার আদর কেমন। আদিবা বলে, এভাবে দাঁড়াতে দাঁড়াতে তারা ক্লান্ত। তারা বাবাকে ফেরত চায়। ফেরত দিতে না পারলে বিচার চায়, কিন্তু তা–ও হচ্ছে না।
শাহরিয়ার কবির রাতুলের বাবা ও দাদাকে একসঙ্গে গুম করা হয়। তিনি বলেন, বাবার নাম লিখতে গেলে জানেন না কী লিখবেন। বাবা মৃত না জীবিত, তা–ও জানেন না। কী লিখতে হবে, দেশ কি তাঁকে এই উত্তর দেবে?
শাহরিয়ার কবির বলেন, গুম কমিশন এখন পর্যন্ত অন্ধকারে রেখেছে। যাঁরা ফিরে এসেছেন, তাঁদের নিয়ে তারা ব্যস্ত।
গুমের শিকার কাজী ফরহাদের স্বজন আমানুল হক আমান বলেন, স্বাধীন হওয়ার পরও তাঁদের রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে। তাঁরা সংখ্যা জানতে চান না। গুম কমিশন শুধু আয়নাঘর আর যাঁরা ফিরে এসেছেন, তাঁদের কথা বলছে। কিন্তু যাঁরা ফিরে আসেনি, তাঁদের কথা বলে না।
‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত এই মানববন্ধনে গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার বিচার দাবিতে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার কথা বলেন। আজ মঙ্গলবার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–সংলগ্ন হাইকোর্ট ভবনের প্রধান গেটের সামনে