সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও পত্রপত্রিকায় সম্প্রতি ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ জাল টাকার নোট দেশে প্রবশ করার মতো খবরের বিষয়ে সাবধান করে চারটি সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এই ধরনের খবর বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। তবে জনগণকে অযথা উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।

আরো পড়ুন:

৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক

সিএমএসএমই ঋণ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, জাল নোট তৈরি, বহন ও লেনদেন করা প্রচলিত আইনে গুরুতর অপরাধ। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জাল টাকার প্রচলন রোধে নিয়মিত কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা জাল নোটের উৎস, প্রবাহ ও ব্যবহার রোধে কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে।

জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চারটি পরামর্শ দিয়েছে: নোট গ্রহণের সময় এর নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য যেমন জলছাপ, অসমতল ছাপা, নিরাপত্তা সুতা, রং পরিবর্তনশীল কালি ও ক্ষুদ্র লেখা ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। বড় অঙ্কের লেনদেন অবশ্যই ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে করতে হবে। নগদ টাকার লেনদেনের পরিবর্তে ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করতে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। সন্দেহজনক কোনো নোট পেলে তাৎক্ষণিকভাবে কাছের কোনো থানায় বা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

‘আসল নোট চিনুন, নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করুন’— এই আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, আসল নোটের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট www.

bb.org.bd  ভিজিট করা যেতে পারে। প্রতিটি ব্যাংক শাখায় আসল নোট শনাক্তকরণে এক্স-ব্যানার ও পোস্টার দেওয়া আছে।

সম্প্রতি কাতারভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানী সাংবাদিক তার ফেসবুক আইডিতে এ-সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন। এটি ভাইরাল হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নড়েচড়ে বসে। তারা এই অপতৎপরতা রুখতে সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন বলে জানিয়েছেন।

ঢাকা/রাসেল/নাজমুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল নদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

এবার দুর্গাপূজায় বড় অঘটন হয়নি, তবে সরকারের পদক্ষেপে আয়োজকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়

এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসাহ–উদ্দীপনায় উদ্‌যাপিত হলেও কোনো কোনো প্রতিমার অবয়বে অশুভশক্তির প্রকাশে শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গি বা অসচেতনতাকে কেন্দ্র করে সরকারের আইনি পদক্ষেপ পূজার আয়োজক ও প্রতিমাশিল্পীদের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক তৈরি করেছিল বলে জানিয়েছে পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ।

আজ সোমবার ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। উপস্থিত ছিলেন পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সহসভাপতি অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সহসভাপতি গোপাল চন্দ্র দেবনাথ প্রমুখ।

সারা দেশে এবার অত্যন্ত সুন্দরভাবে পূজা উদ্‌যাপিত হয়েছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনের বাসুদেব ধর বলেন, এই উৎসব আয়োজনে সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা অত্যন্ত আন্তরিকতা নিয়ে তাঁদের পাশে ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোরও সক্রিয় সহযোগিতা তাঁরা পেয়েছেন। এই মাটির হাজার হাজার বছরের ইতিহাসে যে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি পথ দেখিয়েছে, এবারের উৎসব তারই ধারা বহন করতে পেরেছে।

দুর্গোৎসব শুরু হওয়ার আগে অন্তত ১৪টি জেলায় প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে জানিয়ে বাসুদেব ধর বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের কারণে কয়েকটি স্থানে দুর্বৃত্তরা ধরাও পড়ে। পূজার পাঁচ দিন দেশের কোথাও বড় মাত্রায় অঘটনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পূজার পরও সে রকম কোনো খবর আসেনি। সরকারের কঠোর অবস্থান, বিশেষ করে সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সক্রিয় ও সতর্ক ভূমিকা এই ইতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

পূজা ‘সুন্দরভাবে’ হলেও কোনো কোনো প্রতিমার অবয়বে অশুভশক্তির প্রকাশে শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গি বা অসচেতনতাকে কেন্দ্র করে সরকারের পদক্ষেপে পূজার আয়োজক ও প্রতিমাশিল্পীদের মধ্যে উদ্বেগ ও শঙ্কা তৈরি হয়েছিল বলে জানান বাসুদেব।

‘প্রতিমায় যে অবয়ব প্রকাশের কথা বলা হচ্ছে, তা নতুন বা হঠাৎ এ বছরই হয়েছে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। অতীতে অনেক প্রতিমায় তা শিল্পী বা অয়োজকেরা নানাভাবে প্রকাশ করেছেন। এবার কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি না।বাসুদেব ধর, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি

বাসুদেব ধর বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে দুর্গাপূজা সম্পন্ন হওয়ার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ৫ অক্টোবর “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত” হানার অজুহাতে শিল্পী, পূজারি ও আয়োজকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার কথা ঘোষণার পর কিছু পদক্ষেপের কথা জানা যাচ্ছে। থানায় সাধারণ ডায়েরি দায়ের ও সরকারি তদন্তের কথা বলা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্যের পর পূজার আয়োজক ও প্রতিমাশিল্পীদের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে, যা পরবর্তী সময়ে যেকোনো পূজা-পার্বণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।’

সরকার বিষয়টি নজরে আনার পর সম্ভাব্য অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি এড়াতে পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল জানিয়ে বাসুদেব বলেন, ‘সরকার, সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি একযোগে সমস্যাটির সমাধান করে। এতে পূজার উৎসবে ভাটা পড়েনি। অথচ পূজা শেষ হওয়ার পর বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্নধারায় প্রবাহিত করার চেষ্টা হচ্ছে, যা সাম্প্রদায়িক শক্তিকে উৎসাহিত করতে পারে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী নানাভাবে হয়রানি ও নিপীড়নের মুখে পড়তে পারে। অন্যদিকে একসঙ্গে কাজ করার যে নজিরবিহীন ধারাটি তৈরি হয়েছে, তা–ও গতি হারাতে পারে।’এ প্রসঙ্গে পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, প্রতিমায় যে অবয়ব প্রকাশের কথা বলা হচ্ছে, তা নতুন বা হঠাৎ এ বছরই হয়েছে, তা ভাবার কোনো কারণ নেই। অতীতে অনেক প্রতিমায় তা শিল্পী বা অয়োজকেরা নানাভাবে প্রকাশ করেছেন। এবার কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে করা হয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন না।

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ‘অস্বীকারের রাজনীতি’ দেখে আসার কথা জানিয়ে বাসুদেব ধর বলেন, ‘দুঃখজনক হচ্ছে, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। বাস্তবতা এড়িয়ে সমস্যা-সংকটের অবসান হবে না। পরিসংখ্যান অস্বীকার করার উপায় নেই যে এই ৫৪ বছরে হিন্দু সংখ্যালঘু জনসংখ্যা ১৮ থেকে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে।’

আরও পড়ুনএবার সারা দেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫ মণ্ডপ-মন্দিরে দুর্গাপূজা হবে২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কোনো মহল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা: রাজশাহীর কমিশনার
  • জাল টাকা নিয়ে সতর্ক করল বাংলাদেশ ব্যাংক
  • রাকসু নির্বাচন: একটি ভোটের জন্য ১৪ সেকেন্ড বরাদ্দ
  • চাকসু নির্বাচনে পুলিশ সর্বদা সতর্ক ও প্রস্তুত: পুলিশ সুপার
  • চমেক কর্তৃপক্ষের আশ্বাস কত দিনে ফুরোবে
  • নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ, ৪ হলে সভা বাতিল করল ছাত্রশিবির
  • গণভোটে বিভাজনের ঝুঁকি এড়ানোর উপায় কী
  • ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িকভাবে ‌‘কারাগার ঘোষণা’
  • এবার দুর্গাপূজায় বড় অঘটন হয়নি, তবে সরকারের পদক্ষেপে আয়োজকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়