অন্তর্বর্তী সরকার ১৭ অক্টোবর জুলাই সনদ সই করার আয়োজন করছে এবং তার তিন দিন আগে সনদের দলিল সব রাজনৈতিক দলের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।
সনদে এটি পরিষ্কার, তিন সপ্তাহ ধরে বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া স্পষ্ট করার যে কাজ চলছিল, তা বিফলে গেছে এবং কী প্রক্রিয়ায় সংবিধান সংস্কার করা হবে, সেটি আরও ঘোলাটে হয়ে পড়েছে।

কমিশন খুব সরলভাবে বলেছে, সনদে যেসব সংস্কার প্রস্তাব লেখা আছে, স্বাক্ষরকারীরা সেগুলো বাস্তবায়ন করবে। কীভাবে তারা সে কাজ করবে, তা তারা বলা থেকে বিরত থেকেছে। চোখ বন্ধ রাখলেই সমস্যা সমাধান হয়ে যায় না।

বাস্তবায়ন নিয়ে প্রধান সমস্যা হলো, সনদে যে ৮৪টি প্রস্তাব আছে, তার মাত্র ২৭টিতে ঐকমত্য কমিশনে অংশ নেওয়া সব কটি দল একমত হয়েছে। এর মধ্যে খুব বড় সংস্কার প্রস্তাব হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, সংসদে স্থায়ী কমিটিগুলোয় বিরোধী দল থেকে সভাপতি করা, বিচার বিভাগকে সরকারের প্রশাসনিক বিভাগ থেকে বিচ্ছিন্ন করে তাদের জন্য আলাদা সচিবালয় তৈরি করা, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ এবং স্বাধীন পুলিশ কমিশন তৈরি করা।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ নিয়ে গণভোটের সাংবিধানিক ও আইনি চ্যালেঞ্জগুলো কী০৬ অক্টোবর ২০২৫

তা ছাড়া ৭০ ধারার প্রয়োগ কমিয়ে আনার বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট থাকলেও যতটুকুতে ঐকমত্য আছে, ততটুকু বাস্তবায়ন করা গেলে সংসদ কার্যকর হওয়ার পথে আমরা পা বাড়াতে পারব।

এই ২৭টি প্রস্তাবে সবাই যেহেতু একমত হয়েছে, সেহেতু এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা সহজ হবে বলে ভাবা যেতে পারে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি হলো, এগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে, সেটা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য নেই।

এই প্রস্তাবগুলো গণভোটে তোলা হবে—এ বিষয়ে ঐকমত্য থাকলেও কীভাবে সেই গণভোট ডাকা হবে, সেটা নিয়ে শেষ পর্যন্ত ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।

অতএব এই সনদে সব কটি দল সই করলেও সম্পূর্ণ ঐকমত্যে আসা প্রস্তাবগুলোরও বাস্তবায়ন হবে না, যতক্ষণ না পর্যন্ত দলগুলো কীভাবে গণভোট ডাকা হবে, সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছে।

বড় সমস্যা অবশ্য যেসব বিষয়ে দলগুলোর পরিষ্কার দ্বিমত আছে বা অংশবিশেষ নিয়ে আপত্তি আছে (নোট অব ডিসেন্ট), সেসব নিয়ে। সম্পূর্ণ দ্বিমত আছে—এমন ৭টি প্রস্তাব আছে, যেখানে ৫টির বেশি দল সম্পূর্ণ দ্বিমত প্রকাশ করেছে। তার মধ্যে একটি প্রস্তাব, যেখানে সাতই মার্চের ভাষণ সংবিধান থেকে ফেলে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে, তার বিপক্ষে ৯টি দলের সম্পূর্ণ দ্বিমত আছে।
৩টি কর্ম কমিশন করার বিষয়ে ৭টি দলের আপত্তি আছে।

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথ সুনির্দিষ্ট না করার কারণে বাংলাদেশ ঝুঁকির ভেতর পড়ে গেল। অন্তর্বর্তী সরকার ও ঐকমত্য কমিশনের বোঝা উচিত, সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে তাড়াহুড়া করলে দেশ মহাবিপদের মধ্যে পড়ে যাবে এবং যার খেসারত দিতে এক যুগও লেগে যেতে পারে।

বড় দল বিএনপি আপত্তি করেছে ১৫টি প্রস্তাবে, যার মধ্যে একইভাবে ৯টি প্রস্তাবে আপত্তি করেছে এনডিএম, বারোদলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট। একদম কোনো প্রস্তাবে আপত্তি তোলেনি মাত্র ৪টি দল—ইসলামী ঐক্য জোট, এনসিপি, গণসংহতি আন্দোলন ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।

অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি প্রস্তাবে আপত্তি দিয়েছে বাসদ। তাদের আপত্তি ১৬টিতে। বিএনপির আপত্তি ১৫টিতে এবং বারো দলের ১৩টিতে।

কিন্তু ঐকমত্য কমিশনে দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিভাজন আছে কিছু প্রস্তাব নিয়ে, যেগুলোয় কিছু কিছু দল নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে রেখেছে। তার মধ্যে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা নিয়ে আপত্তি ৯টি দলের, তত্ত্বাবধায়ক সরকার কীভাবে তৈরি হবে তা নিয়ে আপত্তি ৭টি দলের, উচ্চকক্ষে ভোটের অনুপাতে সিট দেওয়া নিয়ে আপত্তি ৭টি দলের

আর সাংবিধানিক পদ ন্যায়পাল, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কমিশনার কীভাবে নিয়োগ পাবেন, সেটা নিয়েও আপত্তি সেই ৭টি দলের।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ নিয়ে মতভেদ এত প্রবল কেন?৩০ আগস্ট ২০২৫

মজার বিষয় হচ্ছে, বিএনপি যেসব বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে, তার প্রায় সব কটিতেই দেখা যায়, এনডিএম, বারোদলীয় জোট ও জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটও গলা মিলিয়েছে।

এসব সরাসরি আপত্তি ও নোট অব ডিসেন্ট নিয়ে সমস্যা হচ্ছে, প্রস্তাবগুলো একতরফাভাবে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিলে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে পড়বে এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হবে। দেশের প্রায় সব বিশ্লেষক মনে করেন, নির্বাচন পিছিয়ে গেলে বাংলাদেশ অস্থিতিশীলতার দিকেই ছুটবে।

তার মানে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথ সুনির্দিষ্ট না করার কারণে বাংলাদেশ ঝুঁকির ভেতর পড়ে গেল। অন্তর্বর্তী সরকার ও ঐকমত্য কমিশনের বোঝা উচিত, সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে তাড়াহুড়া করলে দেশ মহাবিপদের মধ্যে পড়ে যাবে এবং যার খেসারত দিতে এক যুগও লেগে যেতে পারে।

তাদের মনে রাখতে হবে, যে দলগুলোর মধ্যে ভিন্নমত আছে, তাদের নিয়েই ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হবে। সেটা করতে যতটুকু সময় প্রয়োজন, সেটার বরাদ্দ দিতে হবে।

আরও পড়ুনজুলাই সনদ নিয়ে যেসব বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্তর্বর্তী সরকার গণভোটের আয়োজন করতে পারে। কমিশনে নির্বাচনের একই দিনে সেই গণভোট হওয়ার দিকেই দল ভারী ছিল। জুলাই সনদে যেসব বিষয়ে সম্পূর্ণ ঐকমত্য আছে, সেসব বিষয়কে লক্ষ্য করেই এই গণভোট সাজাতে হবে।

দ্বিমত ও নোট অব ডিসেন্ট হিসেবে আসা প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের দিকেই যেতে হবে। সেই লক্ষ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি সংবিধান সংস্কার সভা তৈরি করা যেতে পারে। জাতীয় ঐক্য নিশ্চিত করতে সেই সভায় ১৯৩৭ সালের লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির মতো বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষদের সংযুক্ত করা যেতে পারে।

সামনের নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করবে, তারাও থাকবে; আবার তাদের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনে অংশগ্রহণ করা দলগুলোর প্রতিনিধি, নারী প্রতিনিধি, নাগরিক প্রতিনিধি, পেশাজীবী প্রতিনিধি, সংখ্যালঘু প্রতিনিধি ও অবাঙালি প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি জাতীয় ঐক্যের মঞ্চ তৈরি করা যায়। এই সংবিধান সংস্কার সভা ঐকমত্য কমিশনের কমিশনাররাই পরিচালনার দায়িত্ব পেতে পারেন।

এ সভা সময়ের চাপ না নিয়ে জুলাই সনদে যেসব প্রস্তাবে আপত্তি বা নোট অব ডিসেন্ট আছে, সে বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছে সেগুলো বাস্তবায়ন করার দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে।

আমরা ইন্দোনেশিয়ার চলমান সংবিধান তৈরির উদাহরণ নিলে দেখব, তারা ধাপে ধাপে ১৯৯৯ সালে শুরু করে চার ধাপে সংস্কার করে ২০০২ সালে এসে শেষ ধাপের সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করে। সেই চতুর্থ ধাপে এসে তারা শরিয়াহ আইন, সাংবিধানিক কোর্ট ও প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের সাংবিধানিক সমাধানে পৌঁছাতে পারে। জাতীয় ঐক্য টিকিয়ে রাখার জন্য তারা তাদের সংবিধানে সবচেয়ে কট্টর প্রদেশকে শরিয়াহ আইনে চলার বন্দোবস্ত করে দেয়। এই ধাপে ধাপে বাস্তবায়নের দীর্ঘ প্রক্রিয়া ইন্দোনেশিয়ার বিভাজিত জনগোষ্ঠীকে ঐক্যের সুতায় বাঁধতে সমর্থ হয়।

বাংলাদেশকেও তার মধ্যের মতদ্বৈততাকে সম্মান করতে হবে। বিপরীত মেরুর গোষ্ঠীগুলো যাতে আলাপ চালিয়ে যেতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। সময়ের চাপে দেখা যাবে, তারাই একসময় সমাধান বের করে নিয়ে আসবে।

অন্তর্বর্তী সরকার তার অনেক প্রতিশ্রুত কাজ সময় নিয়ে করছে, যাতে কাজের মান ঠিক থাকে। সংবিধান তৈরির এই মোড়ে এসে তারা একইভাবে সংবিধান সংস্কারের ক্ষেত্রে কাজের মানের দিকেই মনোযোগ রাখলে দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষা হবে।
সেই পর্যন্ত জুলাই সনদ সই অনুষ্ঠান অপেক্ষা করলে কারও আপত্তি থাকবে না।

সৈয়দ হাসিবউদ্দীন হোসেন বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের একজন রাজনৈতিক কর্মী।
ই–মেইল: [email protected]

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ট অব ড স ন ট জ ল ই সনদ প রস ত ব দলগ ল র দ ব মত আপত ত গণভ ট সরক র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ নিয়ে নতুন সংকট, ‘অতি জরুরি’ বৈঠক সন্ধ্যায়

জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক মতভিন্নতার কারণে এই অনিশ্চয়তায় তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে।

এমতাবস্থায় আজ বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘অতি জরুরি’ বৈঠক ডেকেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর আগে কমিশনের সদস্যরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে।

ছয়টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। আগামী শুক্রবার এই সনদ সই হওয়ার কথা। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সনদের চূড়ান্ত অনুলিপি দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। এ বিষয়ে কমিশন আলাদা সুপারিশ দেওয়ার কথা। কিন্তু সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। সনদ বাস্তবায়নে গণভোট করার বিষয়ে একমত হলেও ভোটের দিন ও পথ-পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মতভিন্নতা আছে। কোনো কোনো দল সনদে সই করার আগে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে নিশ্চয়তা চায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সেখানে দলটির পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান তুলে ধরা হয়। ‘সংবিধান আদেশ’ জারির মাধ্যমে সংস্কার প্রক্রিয়া আগানো না হলে এনসিপি সনদে সই করবে না বলে ওই বৈঠকে জানানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এনসিপি বলছে, তারা মনে করে এর আগে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের সময় তারা ছাড় দিয়েছে। এবার আর ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারা সংস্কার বিশেষ করে সংবিধান সংস্কার প্রশ্নে নতুন করে পুরো আলোচনা শুরু করার পক্ষে।

এদিকে  চূড়ান্ত করা জুলাই সনদে বাস্তবায়নের পন্থা উল্লেখ না থাকায় এই সনদে জামায়াতে ইসলামী সই করবে কি না, তা নিয়েও সংশয় আছে। তবে এ বিষয়ে দলটি এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়নি। আজ রাতে এ নিয়ে দলটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বলে দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে।

এই বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর নীতি–নির্ধারনী পর্যায়ের এক নেতা আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সনদের চূড়ান্ত কপিটা পেয়েছি আজ সকালে। গড়মিল থাকলে আমরা জানাব। যতটুকুতে আমরা রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে, সেগুলো যদি সনদে উল্লেখ থাকে অবশ্যই আমরা সই করব। তবে যেটা শুনছি, এই সনদ নিয়ে নানামুখী অপতৎপরতা আছে।’

এ ছাড়া বামপন্থী একাধিক দলও সনদে সই না করার আশঙ্কা আছে। অন্যদিকে বিএনপি সনদের অঙ্গীকার অংশে একটি ধারা যুক্ত করার প্রস্তাব করেছিল। কমিশন সেটা করেনি।

ছয়টি সংস্কার কমিশনের ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে তৈরি হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ। এর খসড়া চূড়ান্ত হলেও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্য হয়নি। এ কারণে আটকে আছে জুলাই সনদ।

গত ৩১ জুলাই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়। কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরে ঐকমত্য কমিশন সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দলগুলো ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করে। ৯ অক্টোবর এই আলোচনা শেষ হয়। আলোচনায় গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নে ঐকমত্য হয়। কিন্তু গণভোটের ভিত্তি, সময় ও পথ-পদ্ধতি নিয়ে দলগুলো বিশেষ করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মধ্যে মতভিন্নতা আছে।

৯ অক্টোবর দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় কমিশন জানিয়েছিল, বিশেষজ্ঞ ও দলগুলোর মতামত সমন্বয় করে কমিশন সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সরকারকে সুপারিশ করবে। এরপর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির সঙ্গে সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে মতপার্থক্য কমাতে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা করে কমিশন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গণভোটের ভিত্তি কী হবে, গণভোট কি সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে নাকি আগে, গণভোটে কী কী প্রশ্ন থাকবে-এসব বিষয়ে দলগুলোর মতভিন্নতা এখনো কাটেনি।

ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, আজ সন্ধ্যার বৈঠকে দলগুলো সনদে সই করবে কি না এবং প্রয়োজনে সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আবার আলোচনা হবে। এ আলোচনা বিটিভি নিউজে সরাসরি সম্প্রচার করার কথা আছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, আজ সন্ধ্যায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জরুরি বৈঠক হবে। এর আগে কমিশন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইনি ভিত্তি ছাড়া জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের অংশীদার হবে না এনসিপি: নাহিদ ইসলাম
  • জুলাই সনদে সই করার বিষয়ে কোন রাজনৈতিক দল কী বলল
  • এনসিপি সনদে স্বাক্ষর করবে কি না, সিদ্ধান্ত এখনো বিবেচনাধীন: আখতার
  • সনদে সই করব কি না অনুষ্ঠানে গেলে দেখতে পারবেন: তাহের
  • জুলাই সনদ: ‘অতি জরুরি’ বৈঠক চলছে
  • প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দলগুলোর সঙ্গে ‘জরুরি’ বৈঠক চলছে
  • সন্ধ্যায় দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • ঐকমত্য কমিশনের ‘অতি জরুরি’ বৈঠক সন্ধ্যায়, অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা
  • জুলাই সনদ নিয়ে নতুন সংকট, ‘অতি জরুরি’ বৈঠক সন্ধ্যায়