৭ গোলের এল ক্লাসিকো ফাইনাল কি আগে দেখেছেন
Published: 13th, January 2025 GMT
প্রতি বছর অন্তত দুটি এল ক্লাসিকো তো হয়ই। সেটা লা লিগায়। কোপা দেল রে, স্প্যানিশ সুপার কাপ যোগ হলে তা আরও বাড়ে। এই করে করে প্রথম দেখা থেকে শুরু করে গত ১২৩ বছরের মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা অফিশিয়াল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে মোট ২৫৯ বার। এত এত বেশি বার মুখোমুখি হওয়ায় রিয়াল–বার্সা ম্যাচে গোলবন্যাও অনেকবারই হওয়ার কথা।
তবে এমনটা যাঁরা ভাবছেন, তাঁরা পুরোপুরি সঠিক নন। বরং প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় বলে রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মুখোমুখি লড়াইয়ে গোল সচরাচর কমই হয়। যে অল্প কিছু ম্যাচে একের পর এক গোল দেখা গেছে, তার মধ্যে গতকাল রাতের স্প্যানিশ সুপার কাপ ফাইনাল একটি (৫–২)। আর যদি শুধু শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ বিবেচনায় নেওয়া হয়, তাহলে ৭ গোলের এল ক্লাসিকো ফাইনাল দেখা গেল এই প্রথম।
রিয়াল–বার্সার মুখোমুখি লড়াইয়ে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ গোল হয়েছে ১২টি। তাও দুবার। প্রথমবার ১৯১৬ সালে, রিয়ালের মাঠে। সে বার কোপা দেল রে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগ শেষ হয়েছিল ৬–৬ সমতায়। একই টুর্নামেন্টে ১৯৪৩ আসরের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগও ছিল ১২ গোলের ম্যাচ।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর সেই ম্যাচে ১১ গোলই ছিল রিয়াল মাদ্রিদের। বিধ্বস্ত হওয়ার ম্যাচে বার্সা শোধ করতে পেরেছিল মাত্র ১টি। এখন পর্যন্ত এল ক্লাসিকোয় সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়–হারের ম্যাচও এটিই।
১২ গোলের মতো ১০ গোলের এল ক্লাসিকোও আছে দুটি। একটি ১৯৩৫ সালে, রিয়াল জিতেছিল ৮–২ গোলে। আরেকটি ১৯৪৩ সালে, ড্র হয়েছিল ৫–৫ গোলে। দুটি ম্যাচই ছিল লা লিগার।
তবে গত শতাব্দীর তুলনায় একবিংশ শতাব্দীতে এল ক্লাসিকোয় গোলবন্যা কমই দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি গোলের ম্যাচটি হয়েছে ২০০৯ সালের ২ মে লা লিগায়। সে দিন সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে লিওনেল মেসি ও থিয়েরি অঁরির জোড়া গোলে রিয়ালকে ৬–২ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল বার্সেলোনা।
এর পর গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৭ গোল দেখা গেছে ২০১৪ সালের মার্চে। বার্নাব্যুতে মেসির হ্যাটট্রিকে বার্সা জিতেছিল ৪–৩ গোলে। এক যুগ পর আবার ৭ গোল দেখা গেল নতুন বছরের শুরুতে, সৌদি আরবের জেদ্দায়। এবারও জয়ী দল সেই বার্সেলোনাই।
একটা জায়গায় লামিনে ইয়ামাল–রবার্ট লেভানডফস্কিদের এই জয় বিশেষ। এবারের আগে আর কোনো এল ক্লাসিকো ফাইনালে এত বেশি গোল হয়নি। সর্বোচ্চ ৫ গোল দেখা গেছে তিনবার। প্রতিবারই জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। সর্বশেষটি গত বছরের স্প্যানিশ সুপার কাপ ফাইনালে, ৪–১ ব্যবধানে।
তবে চলতি ২০২৪–২৫ মৌসুমে টানা দুই ম্যাচেই বড় ব্যবধানে হারল রিয়াল। গত অক্টোবরে লা লিগার প্রথম লেগে হান্সি ফ্লিকের দল জিতেছিল ৪–০ ব্যবধানে। এল ক্লাসিকোর ইতিহাসে বার্সেলোনা টানা দুই ম্যাচে রিয়ালের জালে ৪ বা তার বেশি গোল দিতে পারল এই প্রথম। রিয়াল অবশ্য একই কীর্তি গড়েছে সেই ১৯৬৩ সালে (৫–১ ও ৪–০)।
অবশ্য দিন শেষে হাসি কিন্তু বার্সেলোনারই। এবারের আগে রিয়াল কোনো ফাইনালে ৫ গোল হজম করেছে মাত্র দুবার। প্রথমবার ১৯৬২ ইউরোপিয়ান কাপে (বর্তমানে চ্যাম্পিয়নস লিগ) ইউসেবিরও বেনফিকার কাছে, দ্বিতীয়বার ২০০৭ স্প্যানিশ সুপার কাপে সেভিয়ার কাছে। তৃতীয়বার ৫ গোল হজম করল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার কাছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় নারী এশিয়া কাপ: শক্তিশালী গ্রুপে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে।
আগামী বছরের ১-২৩ মার্চ অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে নারী এশিয়া কাপ। ১২ দলের এই টুর্নামেন্টের ড্র সিডনিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ দুপুরে। যেখানে শক্তিশালী গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ।
‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। জাঁকজমকপূর্ণ ড্রতে বাংলাদেশ ছিল চার নম্বর প্লটে। সঙ্গী ছিল ইরান ও ভারত। গ্রুপিং ড্রতে টুর্নামেন্টের একমাত্র অভিষিক্ত দল বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপের তৃতীয় দল নির্বাচিত হয়।
পরের রাউন্ডে ‘বি’ গ্রুপের চতুর্থ দল হয় উজবেকিস্তান। এরপর ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন চীন বাংলাদেশের গ্রুপের দ্বিতীয় দল হয়। সবশেষ দল হিসেবে এই গ্রুপে যুক্ত হয় উত্তর কোরিয়া। যারা ২০১০ সালে প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হয়েছিল।
ড্র অনুষ্ঠানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ও এএফসি অংশগ্রহণকারী সকল দেশের অধিনায়ক ও কোচকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রথমবার নারী এশিয়া কাপে সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের কেউ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। গতকাল অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কোচ, খেলোয়াড়রা ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন করে হারবার ব্রিজের সামনে। সেখানে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ছাড়া, তাইওয়ান,ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও ভিয়েতনামের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাছাইপর্বে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল দুর্বার। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ পড়েছিল কঠিন ‘সি’ গ্রুপে, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল বাহরাইন (র্যাঙ্কিং ৯২), তুর্কমেনিস্তান এবং স্বাগতিক মিয়ানমার (র্যাঙ্কিং ৫৫)। র্যাঙ্কিংয়ের বিচারে পিছিয়ে থাকলেও মাঠের পারফরম্যান্সে বোঝার উপায় ছিল না।
প্রথম ম্যাচেই বাহরাইনকে ৭-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ঋতুপর্ণার জোড়া গোলের নৈপুণ্যে ২-১ ব্যবধানে হারায় মিয়ানমারকে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানকেও ছাড়েনি মেয়েরা। ৭-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নেয় তারা।
এই জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। আগামী বছর মার্চে বসবে টুর্নামেন্টের ২১তম আসর, যেখানে খেলবে ১২টি দেশ।
ঢাকা/ইয়াসিন