কোহলির ঘোষণা, ‘‘শারীরিক ভাবে এখন আগের থেকেও বেশি ফিট”
Published: 19th, October 2025 GMT
ভারতের হয়ে এখন আর টি-টোয়েন্টি বা টেস্ট, কিছুই খেলেন না বিরাট কোহলি। তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার পরিচয় টিকে আছে কেবল ওয়ানডেতেই।
ভারত লম্বা সময় পর ওয়ানডেতে ফিরেছে। তাই বিরাটেরও মাঠে ফিরতে লাগল সময়। সময়ের হিসেবে ২২৪ দিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরলেন সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান। আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে পঞ্চাশ সেঞ্চুরির মালিক অস্ট্রেলিয়ার পার্থে ফিরেছেন লম্বা বিরতির পর।
আরো পড়ুন:
বৃষ্টির দাপটের পর ভারতকে সহজেই হারাল অস্ট্রেলিয়া
স্পিন দূর্গে জয়ের ছবি আঁকল বাংলাদেশ
নিশ্চিতভাবেই তার ব্যাটের দিকেই তাকিয়ে ছিল সবাই। কিন্তু ২২ গজে বিরাট পারেননি নিজেকে মেলে ধরতে। ৮ বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি। স্টার্কের বলে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে।
তবে ম্যাচের আগে বিরাট জানিয়েছেন, এখন আগের থেকেও অনেক বেশি ফিট তিনি। ‘ফক্স স্পোর্টস’-এ অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন বিরাট। সেখানেই শাস্ত্রী তার ফিটনেস ও মানসিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করেন।
দুইটি ফরম্যাট ছেড়ে দেওয়ার পর শুধুমাত্র একটি ফরম্যাটের জন্য নিজেকে তৈরি রাখা কতটা কঠিন, সেই প্রশ্নও উঠে আসে। জবাবে বিরাট বলেছেন, ‘‘গত ১৫-২০ বছরে প্রচুর ক্রিকেট খেলেছি। বিশ্রামই পাইনি। আমিই বোধহয় সবচেয়ে বেশি ক্রিকেট খেলেছি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি আইপিএলও খেলেছি। তাই এই বিশ্রাম আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মানসিকভাবে নিজেকে তরতাজা রাখতে খুব সুবিধা হয়েছে।”
বিরতিতে থাকলেও শারীরিক ভাবে তিনি এখনও আগের মতোই রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিরাট, ‘‘এই সিরিজ়ের আগে নিজেকে শারীরিক ভাবে তৈরি রাখাটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। লন্ডনে যে সময় কাটিয়েছি সেটা কাজে লাগিয়েছি। আমি এমন একজন ক্রিকেটার, যে প্রস্তুতি ছাড়া খেলতে নামে না। এই সিরিজ়েও সেটাই দেখা যাবে। আমি তৈরি। শারীরিক ভাবে এখন আগের থেকেও বেশি ফিট।”
আজকের ইনিংসের শুরু থেকে তার মাঝে জড়তা ছিল। ওয়ানডেতে এর চেয়ে বেশি বল খেলে একবারই কেবল শূন্যতে আউট হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়াতে তার বহু স্মরণীয় ইনিংস রয়েছে তার। সে কথা তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন গিলক্রিস্ট। বিরাটের বিশ্বাস সেই অভিজ্ঞতাই সামনে কাজে আসবে, ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে সব সময় ভাল লাগে। এখানে খেলা কঠিন। অনেক লড়াই লড়েছি। অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকেরা সব সময় আপনাকে চাপে রাখবে। কিন্তু ভাল খেললে দু’হাত তুলে হাততালিও দেবে। এখানে খেলার অভিজ্ঞতাই আমাকে কোহলি বানিয়েছে।”
ঢাকা/ইয়াসিন
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টানা দরপতনে আবার আতঙ্ক শেয়ারবাজারে
বড় ধরনের টানা দরপতনে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারও আতঙ্ক ভর করেছে। টানা পতনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ হাজার পয়েন্টের মাইলফলকের কাছাকাছি চলে আসায় এই আতঙ্ক আরও বেড়েছে। এ কারণে আজ রোববার ঢাকার বাজারে ক্রেতা না থাকায় অনেক কোম্পানির শেয়ারের সর্বোচ্চ দরপতন হয়।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে প্রধান এই শেয়ারবাজারের প্রধান সূচকটি আজ ৭৫ পয়েন্ট বা প্রায় দেড় শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৪৪ পয়েন্টে। গত প্রায় তিন মাসের মধ্যে এটিই ডিএসইএক্সের সর্বনিম্ন অবস্থান। এর আগে সর্বশেষ গত ৯ জুলাই ডিএসইএক্স সূচকটি ৫ হাজার ৩৫ পয়েন্টের সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল। শেয়ারবাজারে সূচকের ৫ হাজার পয়েন্টের অবস্থানকে মনস্তাত্ত্বিক সীমা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ কারণে সূচক যখনই এ ধরনের মনস্তাত্ত্বিক সীমার কাছাকাছি নেমে আসে, তখন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ভর করে। সেই আতঙ্ক থেকে অনেক বিনিয়োগকারী লোকসানেও শেয়ার বিক্রি করে দেন। তাতে সূচক আরও দ্রুত কমতে থাকে। বাজারে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে একধরনের অস্থিরতা দেখা দেয় বাজারে, যেটি এখন চলছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচকটি ৪০৪ পয়েন্ট বা সাড়ে ৭ শতাংশ কমে গেছে। চলতি মাসের প্রথম কার্যদিবসে অর্থাৎ ৫ অক্টোবর ডিএসইএক্স সূচকটি ছিল ৫ হাজার ৪৪৮ পয়েন্টে। আর আজ তা কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৪৪ পয়েন্টে।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ভর করেছে। ফলে নতুন করে কেউ বিনিয়োগ করছেন না। উল্টো হাতে থাকা শেয়ারও লোকসানে বিক্রি করে দিচ্ছেন। অন্যদিকে শেয়ারের দাম টানা কমতে থাকায় বাজারে জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেলও বেড়েছে। শেয়ারের বিপরীতে যেসব প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগকারীদের ঋণ দিয়েছিল, এখন শেয়ারের দাম কমতে থাকায় সেসব প্রতিষ্ঠান ঋণ আদায়ে জোরপূর্বক শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে। শেয়ারের বিপরীতে ঋণের ক্ষেত্রে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জোরপূর্বক এই বিক্রির আইনি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
বাজারের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা মানুষের মনে শঙ্কা ও অনিশ্চয়তা বাড়িয়ে দিয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ও রাজনৈতিক অনৈক্যে মানুষের মনে নানা সন্দেহ দানা বাঁধছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতিও কমে এসেছে। সব মিলিয়ে অনিশ্চয়তার প্রভাব শেয়ারবাজারেও পড়ছে। এ ছাড়া অতীতের নানা অনিয়ম তদন্ত ও একের পর এক শাস্তির বিধানে বড় বিনিয়োগকারীরা নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছেন। দীর্ঘ মেয়াদে এসব পদক্ষেপের সুফল হয়তো পাওয়া যাবে, কিন্তু স্বল্প মেয়াদে যে প্রভাব পড়ছে, সেটি কাটিয়ে ওঠা এখন বড় চ্যালেঞ্জ। সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীরা এখন দিশাহারা অবস্থায় রয়েছেন। তাঁদের সঠিক পথ দেখাতে না পারলে বাজারের প্রতি আস্থা ফিরবে না।
এদিকে বড় দরপতনের বাজারে লেনদেনও কমে গেছে। আজ ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৪২ কোটি টাকা, গত পাঁচ মাসের মধ্যে এটি সর্বনিম্ন লেনদেন। এর আগে সর্বশেষ ডিএসইতে সর্বনিম্ন ৪১৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল ২৫ জুন।