নোয়াখালী জেলার চৌমুহনী থেকে বিদ্যমান রেললাইন বর্ধিত করে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলা হয়ে চাঁদপুর জেলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জামায়াতে ইসলামী।

রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবে জেলা জামায়াতের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন:

বিরামপুরে ট্রেন থেকে পড়ে নিহত ১

ঢাকা-গোপালগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলের দাবিতে মানববন্ধন

সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে জেলা জামায়াতের আমীর এসইউএম রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, “আমরা নোয়াখালী জেলার চৌমুহনী থেকে বিদ্যমান রেললাইন বর্ধিত করে লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলা হয়ে চাঁদপুর জেলার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের দীর্ঘদিনের দাবি পুনরায় সরকারের কাছে জোরালোভাবে উত্থাপন করছি। লক্ষ্মীপুর জেলার জনসংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষিপণ্য পরিবহন, শিক্ষা ও চিকিৎসা সুবিধার উন্নয়নের জন্য রেল যোগাযোগ এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।”

তিনি বলেন, “এই বিষয়ে কিছু ঐতিহাসিক তথ্য আমরা আপনাদের মাধ্যমে সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। তা হলো- ১৯৭৩ সালে চৌমুহনী থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত রেললাইন স্থাপনের জন্য সর্বপ্রথম মাঠ জরিপ পরিচালিত হয়েছিল। ওই জরিপে কয়েকটি সম্ভাব্য রেলস্টেশন শনাক্ত করা হয় এবং স্টেশনের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট লক্ষ্মীপুরবাসীর পক্ষ থেকে রেললাইন স্থাপনের জন্য একটি চাহিদাপত্র রেল মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয় (ডিও নং–যোম/মামদ/২০১৪-৪৯১)।”

তিনি আরো বলেন, “ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন রেলমন্ত্রী বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলীয় (চট্টগ্রাম) চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এ অঞ্চলের মানুষ আজো রেল যোগাযোগের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, লক্ষ্মীপুরে রেল সংযোগ চালু হলে, আঞ্চলিক অর্থনীতিতে গতি আসবে, কৃষিপণ্য পরিবহন সহজ হবে, শিল্প, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে, কর্মসংস্থান ও বিনিযোগের সুযোগ বাড়বে এবং চট্টগ্রাম, ঢাকা ও চাঁদপুরসহ দেশের প্রতিটি অঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ আরো দ্রুত ও সহজতর হবে।”

রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, “আমরা অন্তর্বর্তী সরকার ও রেল মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি যে, জনস্বার্থ বিবেচনায় অবিলম্বে চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর-রায়পুর-চাঁদপুর রেল সংযোগ বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।”

গণমাধ্যমের জোরালো ভূমিকার মাধ্যমে এই জনপদের মানুষের ন্যায্য দাবি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং এ অঞ্চলের মানুষ দ্রুতই আধুনিক রেল যোগাযোগের সুবিধা পাবে বলে আশা করেন জামায়াত নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড.

মুহাম্মদ রেজাউল করিম সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে বলেন, “লক্ষ্মীপরে রেললাইন স্থাপন এই অঞ্চলের ২৫ লাখ মানুষের প্রাণের দাবি। লক্ষ্মীপুর একটি কৃষি প্রধান এলাকা। এই জেলায় রেললাইন স্থাপন করা হলে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের সুবিধার পাশাপাশি জেলার কৃষিপণ্য পরিবহনে বিপ্লব ঘটবে। আমরা জেলার ২৫ লাখ জনগণের প্রাণের দাবি রেললাইন স্থাপন নিয়ে কাজ করব।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এ আর হাফিজ উল্লাহ, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা নাছির উদ্দীন মাহমুদ, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মমিন উল্যাহ পাটোয়ারী, শহর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট আবুল ফারাহ নিশান প্রমুখ।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর লক ষ ম প র চ ম হন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের ক্ষমায় যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট

হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট হুয়ান অরল্যান্ডো হার্নান্দেজকে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কারা কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের অভিযোগে হার্নান্দেজ কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়ায় তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

ফেডারেল কারাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, হার্নান্দেজ গত সোমবার পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ইউএসপি হেজেলটন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন আমদানির ষড়যন্ত্র ও নিজের কাছে মেশিনগান রাখার অভিযোগে হার্নান্দেজকে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তাঁকে তখন ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

হার্নান্দেজ হন্ডুরাসের ন্যাশনাল পার্টির সদস্য। তিনি ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সহিংসভাবে মাদক চোরাচালানের ষড়যন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রে শত শত টন কোকেন পাচারে সহযোগিতার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে ২০২২ সালের এপ্রিলে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গত শুক্রবার ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছিলেন, হার্নান্দেজের সঙ্গে রূঢ ও অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল।

গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে হার্নান্দেজের স্ত্রী আনা গার্সিয়া দে হার্নান্দেজ ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার স্বামী এখন একজন মুক্ত মানুষ।’

হার্নান্দেজ হন্ডুরাসের ন্যাশনাল পার্টির সদস্য। তিনি ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সহিংসভাবে মাদক চোরাচালানের ষড়যন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রে শত শত টন কোকেন পাচারে সহযোগিতার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে ২০২২ সালের এপ্রিলে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বিচার চলাকালে নিউইয়র্কের কৌঁসুলিরা বলেছিলেন, হার্নান্দেজ মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাসকে ‘মাদক চক্রের নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রের মতো’ পরিচালনা করেছেন। তিনি চোরাচালানিদের আইনের হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে লাখ লাখ ডলার ঘুষ নিয়েছেন।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি হার্নান্দেজকে ৮০ লাখ ডলার জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত।

রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজের ভেতর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প হার্নান্দেজকে ক্ষমা করে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেন, হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সাজানো তদন্ত করেছে।

রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজের ভেতর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প হার্নান্দেজকে ক্ষমা করে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেন, হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সাজানো তদন্ত করেছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি (হার্নান্দেজ) দেশটির (হন্ডুরাস) প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আর এ কারণেই মূলত তারা তাঁকে মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে দিয়েছে।’

হার্নান্দেজকে এমন সময়ে মুক্তি দেওয়া হলো, যখন কিনা হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল নিয়ে উত্তেজনা চলছে।

হন্ডুরাসে গত রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। এরই মধ্যে ভোট গণনায় দেরি হওয়াকে কেন্দ্র করে নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মধ্যপন্থী লিবারেল পার্টির নেতা সালভাদর নাসরাল্লা রক্ষণশীল প্রার্থী নাসরি আসফুরার চেয়ে সামান্য এগিয়ে গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার প্রায় ৬৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এমন তথ্য দিয়েছে। আসফুরা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-সমর্থিত প্রার্থী।

আরও পড়ুনহন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প–সমর্থিত প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে গেলেন নাসরাল্লা৩ ঘণ্টা আগে

গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ আংশিক ভোট গণনায় প্রাপ্ত সর্বশেষ ফল প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, ৬৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষে নাসরাল্লা পেয়েছেন ৪০ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট এবং ন্যাশনাল পার্টির আসফুরা পেয়েছেন ৩৯ দশমিক ৭১ শতাংশ ভোট।

হন্ডুরাসের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রাথমিকভাবে দ্রুত ভোট গণনার ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এতে যে ওয়েব পোর্টালে তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফলের তথ্য হালনাগাদ করার কথা ছিল, সেটিতেও সমস্যা তৈরি হয়েছে।

গত সোমবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, হন্ডুরাস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যদি তারা এটা করে, তবে তাদের কঠিন পরিণতি হবে। হন্ডুরাসের মানুষ ৩০ নভেম্বর বিপুল সংখ্যায় ভোট দিয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রাম্পের ক্ষমায় যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট