ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে লাগা আগুন পুরোপুরি নিভেছে। 

রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

আরো পড়ুন:

বিমানবন্দরে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি 

ধামরাইয়ে ইনসেপটা ফার্মায় অগ্নিকাণ্ড

তিনি বলেছেন, আগুন নির্বাপণে প্রায় ২৭ ঘণ্টা লেগেছে। আগুন নেভাতে দেরি হওয়ার প্রধান কারণ—  কার্গো ভিলেজে অগ্নিসতর্কতার (ফায়ার ডিটেকশন অ্যান্ড প্রোটেকশন) ব্যবস্থা না থাকা। ভবনের ভেতরে অনেক ছোট ছোট কক্ষ (সংকীর্ণ স্টোর) থাকায় অগ্নিনির্বাপণ করা কঠিন হয়েছে। প্রচুর দাহ্য এবং হ্যাজার্ডাস (বিপজ্জনক) পদার্থ মজুত ছিল। স্টিলের কাঠামো হওয়ায় প্রচণ্ড তাপ শোষণ করেছে, পরে তাপ নির্গত করতে থাকে। দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বলতে থাকায় এবং অত্যধিক তাপমাত্রার কারণে ভবনটি কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভেতরে ফাটল দেখা গেছে। ভবন কর্তৃপক্ষকে ঝুঁকি নিরূপণের জন্য জরিপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক জানিয়েছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুজন সদস্য আহত হয়েছেন। আনসার বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্যও আহত হয়েছেন। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পর জানা যাবে। 

আগুন সম্পূর্ণ নিভে গেলেও দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী।

ঢাকা/এমআর/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ ও সুবর্ণাকে

রংপুরের তারাগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) ও তার স্ত্রী সুর্বণা রায়কে (৬০) চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে নিজ বাড়িতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার সকালে রহিমাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে তাদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে যোগেশ রায়ের মাথার পেছনে এবং সুবর্ণা রায়ের কপালে কোপ মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা। এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গ্রামবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, যোগেশ চন্দ্র রায় উত্তর রহিমাপুর নয়াহাট মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ও সাবেক প্রধান শিক্ষক। ২০১৭ সালে তিনি অবসরে যান। তার দুই ছেলে চাকরির কারণে ঢাকা থাকেন। ফলে স্বামী-স্ত্রী দুজনই গ্রামে একা থাকতেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে রংপুরের পুলিশ সুপার, মারুফাত হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ২২ মিনিটে ছোট ছেলে রাজেশ খান্না চন্দ্র রায়ের সঙ্গে শেষবার কথা হয় যোগেশের। রবিবার সকাল ৭টার দিকে দিনমজুর দীপক চন্দ্র রায় প্রতিদিনের মতো বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ করেন। প্রতিবেশীদের ডেকে মই বেয়ে ভেতরে ঢুকে তিনি খাবার ঘরে যোগেশ রায়ের এবং রান্নাঘরে সুর্বণা রায়ের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে সুরতহাল শেষে বিকেলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় ডিবি, সিআইডি, পিবিআই এবং র‍্যাব-১৩ এর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঘটনাস্থলে গিয়েছেন রংপুর-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার এবং জামায়াতের প্রার্থী এটিএম আজহারুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত নেতাকর্মী ও উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা।

এটিএম আজহারুল ইসলাম জানান, নিজ বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে এভাবে কুপিয়ে হত্যা করা দেশে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির চরম অবনতির ইঙ্গিত। তাই দ্রুত এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

এ দিকে দুপুরেই কর্মস্থল থেকে ছুটে আসেন পুলিশে কর্মরত নিহতের দুই ছেলে। মেঝেতে বাবা-মায়ের মরদেহ দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তারা। তবে বড় ছেলের স্ত্রী কল্যাণী রায় বলেন, ‘‘আমার শ্বশুর-শাশুড়ি খুব ভালো মানুষ ছিলেন। চাকরির সুবাদে আমরা ঢাকা থাকি। প্রতিনিয়ত তাদের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আমাদের। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই যখন শুনি তাদের হত্যা করা হয়েছে বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারিনি।’’

শ্বশুর-শাশুড়িকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। দ্রুত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন কল্যাণী রানী।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, বিজয়ের মাসে আমাদের মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে এভাবে হত্যা করা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দ্রুত তদন্ত করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

রংপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন বলেন, “চুরি-ডাকাতির কোনো আলামত নেই। বাড়ির উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে ঘাতকরা ঢুকতে পারে। খুব দ্রুত ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।’’

ঢাকা/আমিরুল//

সম্পর্কিত নিবন্ধ