Samakal:
2025-11-03@00:51:43 GMT

ধানে অনীহা, চাল দিচ্ছেন কম

Published: 16th, January 2025 GMT

ধানে অনীহা, চাল দিচ্ছেন কম

‘রিকশা-ভ্যান দিয়ে গুদামে ধান নিয়ে যেতে বাড়তি খরচ হয়। ঠিকমতো শুকনো না হওয়াসহ নানান অজুহাতে তা ফিরিয়েও দেওয়া হয়। রয়েছে দালালের দৌরাত্ম্য। গুদামে ধান দিলে নগদ টাকা পাওয়া যায় না, ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট করতে হয়। সরকারি দামের চেয়ে বাজারে দাম বেশি। পাইকাররা বাড়ি থেকে নিয়ে যান, পাওয়া যায় নগদ টাকা। এজন্য আমরা গুদামে না দিয়ে বাজারে ধান বিক্রি করছি।’ কথাগুলো রংপুরের গঙ্গাচড়ার কৃষক আহাম্মদ আলীর। 
চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলে আমন ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান চলছে ধীরগতিতে। ঝক্কি-ঝামেলা এড়ানোসহ বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় সরকারি গুদাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন আহাম্মদ আলীর মতো কৃষকগণ। পাশাপাশি গুদামে চাল সরবরাহে লোকসান হচ্ছে দাবি করে মিলাররাও অনীহা দেখাচ্ছেন। এতে চলতি মৌসুমে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে। দুই মাসে বিভাগের আট জেলায় ধানের গড় সংগ্রহ মাত্র ৩ শতাংশ। তিন জেলায় এক কেজি ধানও সংগ্রহ হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে গঙ্গাচড়া খাদ্যগুদামে ১ হাজার ২৬৭ টন ধান ও ৬৬৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ পর্যন্ত ১১২ টন চাল সংগ্রহ হলেও গুদামের জন্য এক ছটাক ধানও কেনা যায়নি। 
উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম খাতুন বলেন, বাজারে দাম বেশি হওয়ায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে খাদ্যগুদামে। তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন। ধান না পাওয়া গেলেও চাল সংগ্রহের ব্যাপারে 
তারা আশাবাদী।
রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ নভেম্বর শুরু হয় আমন ধান-চাল সংগ্রহের অভিযান, চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ধান সংগ্রহ মাত্র ৩ শতাংশ। এর মধ্যে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও পঞ্চগড়ে সংগ্রহের হার শূন্য। 
সবচেয়ে বেশি দিনাজপুরে ৭ শতাংশ, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩, নীলফামারীতে ৬ এবং গাইবান্ধা ও রংপুরে ১ শতাংশ সংগ্রহ হয়েছে। চলতি মৌসুমে আট জেলায় আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭৫ হাজার ৯৪০ টন। এ পর্যন্ত আড়াই হাজার টনের মতো সংগ্রহ হয়েছে।
আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ১৬৪ টন। এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৬ হাজার ১৬৫ টন, যা শতকরা ৩৯ শতাংশ। সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৭৫৪ টন। সংগ্রহ হয়েছে ৫৯ হাজার ৩৪ টন। শতকরা হিসাবে অর্জন ৪৮ শতাংশ। এবার চাল সরবরাহের কথা রয়েছে বিভাগের ৩ হাজার ২৩৬ জন মিলারের।
এর আগে বোরো মৌসুমে প্রতি কেজি ধানের ক্রয়মূল্য ৩০ টাকা হলেও চলতি আমন মৌসুমে তিন টাকা বাড়িয়ে ৩৩ টাকা করা হয়েছে। বোরোতে চালের কেজি ছিল ৪৪ টাকা। এবারে ৩ টাকা বাড়িয়ে ৪৭ টাকা করা হয়েছে। তারপরও তেমন সাড়া মিলছে না কৃষকের। 
তাদের অভিযোগ, খাদ্যগুদাম ১৪ ভাগ আর্দ্রতা না হলে ধান নিতে চায় না। এ কারণে গুদামে ধান দিতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়। পাশাপাশি প্রতি টনে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দিতে হয় কর্মকর্তাদের। এর সঙ্গে রয়েছে পরিবহন ভাড়া ও শ্রমিকের চাঁদা। এর চেয়ে বাজারে ধান বিক্রিতেই লাভ বেশি।
খাদ্যগুদামে ৩৩ টাকা কেজি দরে প্রতি মণ ধানের দাম ১ হাজার ৩২০ টাকা হয় জানিয়ে পীরগাছার তাম্বুলপুর এলাকার কৃষক নওশের আলী বলেন, ৩৬ টাকা কেজি দরে বাজারে বিক্রি করা যাচ্ছে। এখন বাজারে প্রতি মণ ধান ১৪০০ থেকে ১৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সরকারি দরে বিক্রি করলে তাদের লোকসান গুনতে হবে।
চাল ব্যবসায়ীরাও কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা লোকসান হওয়ায় গুদামে দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন বলে জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, ১৪০০ টাকা মণ দরে ধান কিনে চালে কেজিতে খরচ পড়ছে ৫০ টাকার বেশি। অথচ সরকারি গুদামে ৪৭ টাকা দরে দিতে হয়। এবার গুদামে চাল দিতে কেউ সাহস পাচ্ছেন না জানিয়ে গঙ্গাচড়ার আরাফাত অ্যান্ড রোমান চালকলের মালিক মশিউর রহমান বলেন, ‘এবার চালের বরাদ্দ পেয়েছি ১০ টন। না দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। বাধ্য হয়ে কেজিতে ২ টাকা লোকসানে চাল দিতে হয়েছে।’
সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ায় বাধ্য হয়ে গুদামে চাল দিতেই হবে জানিয়ে রংপুর চালকল মালিক সমিতির নেতা লোকমান মোল্লা বলেন, 
চাল সরবরাহ করে লাভ দূরের কথা, উল্টো লোকসান গুনতে হবে। না দিলে সরকার কালো তালিকাভুক্ত করবে, লাইসেন্স বাতিলসহ অন্য ব্যবস্থা নেবে। তারপরও লোকসানে চাল দিতে চাচ্ছেন না মিল মালিকরা।
এ বিষয়ে রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম বলেন, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা গুদামে দিতে আগ্রহী নন। মাড়াইয়ের পর তারা পাইকারের কাছে বিক্রি করতে পারছেন। আর্দ্রতা পরিমাপেরও প্রয়োজন হয় না। তাই গুদামে ধান দিতে অনীহা রয়েছে তাদের। তারপরও সময় আছে, ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা চলছে বলে জানান এ কর্মকর্তা ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র হওয় য়

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না

চলতি বছরের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে দাম কমার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুসারে, চলতি বছরে সামগ্রিকভাবে পণ্যমূল্য ৭ শতাংশ কমবে। আগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে পণ্যমূল্য আরও ৭ শতাংশ কমবে। এ দাম হবে ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।

কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব নেই। দেশে মূল্যস্ফীতির হার এখনো ৮ শতাংশের ঘরে। যদিও একসময় তা দুই অঙ্ক ছাড়িয়ে গিয়েছিল। গত সেপ্টেম্বর মাসে মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ হয়েছে। দেশের মানুষকে এখনো বাড়তি দামেই পণ্য ও সেবা কিনতে হচ্ছে। আগামী বছর নিত্যপণ্যের দাম কমবে কি না, সেই নিশ্চয়তাও নেই। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমলেও দেশে এর প্রভাব কম।

বিশ্বব্যাংকের ‘কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক অক্টোবর ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, ২০২৫ সালের শুরু থেকেই বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। যার মূল কারণ হিসেবে তারা চিহ্নিত করেছে জ্বালানির দাম কমে যাওয়া। সেই সঙ্গে আরও কিছু কারণ চিহ্নিত করেছে তারা। সেগুলো হলো চীনে তেলের চাহিদা বৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া এবং বিশ্ববাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় তেলের দামে বড় ধরনের পতন ঘটা। খাদ্যপণ্যের দাম বছরের শুরু থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে, কিন্তু বছরের প্রথমার্ধে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পানীয় পণ্যের দাম হঠাৎ অনেকটা বেড়ে যায়। এ ছাড়া বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সোনার দাম রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। মূলত রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে মানুষ সোনার দিকে ছুটেছেন।

বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য নির্ধারণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে জ্বালানি তেলের দাম। বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালে জ্বালানির দাম আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে আরও ১০ শতাংশ কমবে। ২০২৭ সালে তা আবার প্রায় ৬ শতাংশ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস ২০২৬ সালে কৃষিপণ্য, খাদ্য ও কাঁচামালের দাম কমবে। চলতি বছরেও এসব পণ্যের দাম কমেছে।

জ্বালানি তেল

বিশ্বব্যাংকের ২০২৬ সালের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বাড়ায় গ্যাসের দাম কিছুটা বাড়লেও তেলের দাম কমে যাবে এবং সেই প্রভাবকে ছাপিয়ে যাবে। ২০২৫ সালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম হতে পারে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬৮ ডলার; ২০২৪ সালের ৮১ ডলারের তুলনায় যা বেশ কম। ২০২৬ সালে এই দাম আরও কমে ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৬০ ডলারে নামতে পারে ধারণা করা হচ্ছে।

এই পূর্বাভাস অনুযায়ী, তেলের ব্যবহার বৃদ্ধির হার আরও কমবে—মূলত চীনের চাহিদা কমে যাওয়া, বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়ির দ্রুত প্রসার ও বৈশ্বিক তেল সরবরাহ বৃদ্ধির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

২০২৫ সালে বৈশ্বিক তেলের বাজারে সরবরাহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২৬ সালে তা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২০ সালের সর্বোচ্চ মাত্রার তুলনায় প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি হবে এ সরবরাহ।

কৃষিপণ্য

বিশ্বব্যাংক গ্রুপের পূর্বাভাস অনুযায়ী, কৃষিপণ্যের মূল্যসূচক ২০২৫ সালে স্থিতিশীল আছে। ২০২৬ সালে তা সামান্য ২ শতাংশ ও ২০২৭ সালে আরও ১ শতাংশ কমবে।

খাদ্যপণ্যের দাম, যেমন শস্য, তেল, প্রোটিনজাত খাবারসহ অন্যান্য খাদ্যের দাম সাম্প্রতিক সীমার কাছাকাছি থাকবে। তবে মাঝেমধ্যে সামান্য কিছুটা ওঠানামা থাকবে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, প্রধান ফসলগুলোর উৎপাদন বৃদ্ধির হার আবার দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতায় ফিরে আসছে।

২০২৫ সালের বাকি সময়ে সয়াবিনের দাম কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের যে সয়াবিন সাধারণত চীনে রপ্তানি হয়, তা এবার কম দামে অন্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করতে হতে পারে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের অন্যতম প্রধান ক্ষেত্রে হচ্ছে এই সয়াবিন। চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সয়াবিন কিনছে না। ফলে ২০২৬ ও ২০২৭ সালে এই পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্ববাজারে দাম কমে গেলে যুক্তরাষ্ট্রে সয়াবিন চাষের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে, তবে ব্রাজিল তার সয়াবিন আবাদ আরও বাড়ানোর পথে রয়েছে। পানীয় পণ্যের দাম ২০২৬ সালে ৭ শতাংশ ও ২০২৭ সালে প্রায় ৫ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এদিকে চলতি বছর সারের দাম সামগ্রিকভাবে ২১ শতাংশ বাড়তি। চাহিদা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা ও কিছু অঞ্চলে সরবরাহ–ঘাটতির কারণে এ দাম বেড়ে যাওয়া। ২০২৬ ও ২০২৭ সালে দাম প্রায় ৫ শতাংশ কমতে পারে। তবু ২০১৫-১৯ সালের গড় দামের তুলনায় তা অনেক বেশি থাকবে। এর কারণ হলো উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া, রপ্তানি সীমাবদ্ধতা ও চলমান আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা।

চীন ইতিমধ্যে নাইট্রোজেন ও ফসফেট সার রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। অন্যদিকে পটাশ সরবরাহকারী বড় দেশ বেলারুশ এখনো ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আছে। রাশিয়া ও বেলারুশ—উভয় দেশই সারের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরোপিত নতুন শুল্কের সম্মুখীন।

দেশে কেন দাম বেশি

বিশ্ববাজারে দাম কমলেও দেশের বাজার দাম না কমার অন্যতম প্রধান কারণ ডলারের দামের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। গত তিন বছরে ডলার দাম অনেকটা বেড়েছে। সেই সঙ্গে দেশের অনেক আমদানি পণ্যে শুল্ক বেশি বলে মনে করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে দাম কমছে না। বাজারে চাহিদা কত বা কখন কোন পণ্য আমদানি করতে হবে, সে বিষয়ে যথাযথ তথ্যের ঘাটতি আছে। ফলে সময়মতো পণ্য আমদানি হয় না।

আরেকটি বিষয় হলো দেশে যেসব পণ্য আমদানি করা হয়, তার অনেক কিছু উৎপাদিতও হয়। কিন্তু বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এসব পণ্যের সরবরাহে টান পড়েছে। বাজারের পণ্যমূল্যে তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন মোস্তাফিজুর রহমান।

তিন বছর আগে দেশে ডলারের দাম ছিল ৮৬ টাকা। এখন তা বেড়ে ১২২ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েক মাস ধরে আমদানির ঋণপত্র খোলাও কমেছে। এতে আমসদানিতে চাপ পড়ছে।

দেশের বাজার উচ্চ মূল্যের কারণ সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক সেলিম রায়হান বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। জ্বালানি ও পরিবহন ব্যয়, শুল্ক ও করের চাপ ও বাজার ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার কারণে দাম কমছে না। পাইকারি থেকে খুচরা পর্যন্ত অতি মুনাফা ও অস্বচ্ছ বাণিজ্যিক শৃঙ্খলের কারণেও বাজারে কৃত্রিমভাবে উচ্চমূল্য বিরাজ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টাকার অবমূল্যায়ন। ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে এবং আন্তর্জাতিক মূল্যহ্রাসের সুফল ভোক্তাপর্যায়ে পড়ছে না।

সেলিম রায়হান আরও বলেন, এ ছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণ ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিনিয়োগকারীরা নতুন ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না। পণ্য পরিবহন ও আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সরবরাহ শৃঙ্খল দুর্বল হয়ে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বাজারে পণ্যের ঘাটতি ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

দেশে তিন বছর ধরেই উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১০ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। সম্প্রতি তা কিছুটা কমলেও সেপ্টেম্বর মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। গত আগস্ট মাসে এই হার ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
  • যশোরে জিআই পণ্য খেজুর গুড় তৈরির রস সংগ্রহে গাছ প্রস্তুতির উদ্বোধন
  • টমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না
  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন
  • ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম আরও ৭% কমতে পারে, বাংলাদেশে কেন কমছে না
  • যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
  • ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পেন্টাগনের সায়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প
  • সবজির দাম কমতির দিকে, আটার দাম কেজিতে বাড়ল ৫ টাকা