এনসিটিবি কি কর্তৃত্ববাদের পুনর্বাসন কেন্দ্র
Published: 18th, January 2025 GMT
পাঠ্যবই থেকে ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃত্ববাদের পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছে বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, এনসিটিবির এ সিদ্ধান্ত ও পরবর্তী সময়ে সংক্ষুব্ধ আদিবাসীদের ওপর ধারাবাহিক হামলা বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের চেতনা ও প্রত্যাশার সঙ্গে প্রতারণা। সংস্থাটি জবাবদিহিসহ এই প্রতিষ্ঠানকে কর্তৃত্ববাদের দোসরমুক্ত করে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড.
যাবে না– এমন কথা বলেছিল কর্তৃত্ববাদী সরকার। আদিবাসী পরিচয়ের ব্যাখ্যা না জানা এনসিটিবির জন্য লজ্জাজনক। শুধু তাই না, সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে বিচার-বিবেচনা না করে এক পক্ষের আব্দারের দোসর হওয়া ফ্যাসিবাদী আচরণের প্রতিফলন।
পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি রাখা-না রাখা নিয়ে রাজধানীর মতিঝিলে এনসিটিবি ভবনের সামনে গত বুধবার সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা করা হয়। পরে সংক্ষুব্ধরা অভিযোগ করে, স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি এই হামলা চালায়।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও পরিচয় হিসেবে আদিবাসী শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি। এটা জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত প্রধান উপদেষ্টার ২৫ আগস্ট ২০২৪-এর ভাষণে আদিবাসী পরিচয়বিষয়ক শব্দচয়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?