ইসলামী ব্যাংকের আমানত বর্তমানে ১ লাখ ৬১ হাজার কোটি টাকা। যা গত বছরের চেয়ে ৮ হাজার কোটি টাকা বেশি। ব্যাংকের ২ দিনব্যাপী ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রধান অতিথি হিসেবে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ।

এতে জানানো হয়, ইসলামী ব্যাংক বর্তমানে ৪০০টি শাখা, ২৬৫টি উপশাখা, ২৭৮৩টি এজেন্ট আউটলেট, ৩,০৪০টি এটিএম/সিআরএম বুথের মাধ্যমে ২ কোটি ৫০ লাখ গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ইসলামী ব্যাংকের ১ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের মাইলফলক স্পর্শ করেছে ২০২৪ সালেই। বিগত বছরে এ ব্যাংক আমদানি, রফতানি এবং রেমিট্যান্স আহরণ করেছে যথাক্রমে ৬৪,৭৮২ কোটি, ৩২,৪৩৮ কোটি এবং ৬৬,০১৭ কোটি টাকা। ডিজিটাল ওয়ালেট সেলফিন অ্যাপের ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ। ৩৪ হাজার গ্রামের ১৮ লক্ষাধিক পরিবারকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ দিয়েছে এই ব্যাংক।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা। ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড.

এম মাসুদ রহমান, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল এবং শরী‘আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্যসচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ওমর ফারুক খান এবং ধন্যবাদ জানান অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আলতাফ হুসাইন। ব্যাংকের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন মজুমদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্ল্যাহ আল মাসুদ বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক দেশের এক নম্বর ব্যাংক এবং জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ এ ব্যাংকের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। ৬,৫০০ ইউনিটের বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক দেশজুড়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ২ কোটি ৫০ লাখ গ্রাহক আর এ বিস্তৃত নেটওয়ার্কই প্রমাণ করে এ ব্যাংকের জনপ্রিয়তা।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ৩৪ হাজার গ্রামে পল্লী উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে ইসলামী ব্যাংক। আমরা এই সেবা দেশের ৬৮ হাজার গ্রামেই ছড়িয়ে দিতে চাই। ৫ আগস্টের পট পরিবর্তনের পর এ ব্যাংক প্রায় ৯ লাখ নতুন গ্রাহক এবং ১৩ হাজার কোটি টাকা নতুন ডিপোজিট সংগ্রহ করেছে। বিগত বছরেই ব্যাংক ৪০০তম শাখা উদ্বোধনের মাইলফলক অর্জন করেছে।’

সভাপতির বক্তব্যে ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইসলামী ব্যাংকের অবদান অবিস্মরণীয়। ২০২৪ সালে নানান চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেও ইসলামী ব্যাংক সব ব্যবসায়িক সূচকে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বেশি ডিপোজিট সংগ্রহ করেছে। দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের প্রায় ৯ ভাগ এ ব্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা এ ব্যাংকে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশের মোট রেমিট্যান্সের এক চতুর্থাংশ। এ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে বক্তারা আরও বলেন, এ ব্যাংকের কর্মীরা অত্যন্ত সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। একই ছাদের নিচে এতো সৎ ও দক্ষ মানুষের সমাবেশ কোথাও নেই। তারা রেমিট্যান্স আহরণ, বিনিয়োগ ও আমানতের অগ্রগতি অর্জনের জন্য দিকনির্দেশনা দেন। ইসলামী ব্যাংকের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অব্যাহত রাখতে সর্বোচ্চ পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।

সম্মেলনে ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাহমুদুর রহমান, মো. রফিকুল ইসলাম, মুহাম্মাদ সাঈদ উল্লাহ, কে এম মুনিরুল আলম আল-মামুন, ড. এম কামাল উদ্দীন জসীম ও মো. মাকসুদুর রহমান এবং প্রধান কার্যালয়ের উইং ও ডিভিশনের প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন নির্বাহীরা, ১৬টি জোনের জোনপ্রধান ও ৮টি করপোরেট শাখাসহ ৪০০টি শাখার ব্যবস্থাপকরা অংশ নেন।

ঢাকা/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কম ট র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ