প্রেমিকের সঙ্গে সংসার পাততে ঘর ছাড়েন ভারতীয় গৃহবধূ, আটক হলেন বিজিবির হাতে
Published: 19th, January 2025 GMT
ভারতীয় প্রেমিক যুগল অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হাতে আটক হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিনা পাসপোর্টে বাংলাদেশে প্রবেশের অপরাধে মামলা হয়েছে। পরে পুলিশের কাছে তাদের সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের সহযোগিতা করার অপরাধে বাংলাদেশি এক যুবককেও আটক করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে আজ রোববার দুপুরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বালাটারী সীমান্তে।
আটক ভারতীয় যুবক সৌরভ কুমার সাপুই (১৯) দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উশতী থানার গড়খালী গ্রামের দেব কুমার সাপুই এর ছেলে। আর ভারতীয় রেশমা মণ্ডল জান্নাত (২৭) পূর্ব বর্ধমান জেলার নাদনঘাট থানার ধামাই গ্রামের বাবর আলী মণ্ডলের মেয়ে। জান্নাতের আগে বিয়ে হয়েছিল। সেই ঘরে সাড়ে ৫ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বামীর ঘর ছেড়ে প্রেমিকার হাত ধরে পালিয়ে আসেন তিনি।
বিজিবি ও আটক প্রেমিক যুগল জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে তাদের পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং বিয়েতে তারা সম্মত হন। প্রেমিকের সঙ্গে সংসার পাততে তিন আগে ঘর ছাড়েন এই প্রেমিক যুগল। অবশেষে ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানার গিদালহাহ ও নটকো বাড়ি সীমান্তে এসে পৌঁছান তারা। সেখান থেকে তারা অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেন প্রেমিক যুগল। কিন্তু সাহস পাচ্ছিলেন না। পরে মোবাইল ফোনে বাংলাদেশি যুবক ইউনুছ আলী (২২) সঙ্গে চুক্তি করেন তারা। তাদেরকে বাংলাদেশে নিরাপদে নিয়ে আসা এবং জায়গা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ইউনুছ। রোববার ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বালাটারী সীমান্তে ৯৩৩ নং আন্তর্জাতিক মেইন পিলারের সাব পিলার ১০ এর কাছ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বালারহাট টহলরত বিজিবির হাতে আটক হন তারা। একই সঙ্গে আটক করা হয় কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কাশির ডেরা গ্রামের বাচ্ছু মিয়ার ছেলে ইউনুছকেও।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবির অধীন বালারহাট টহলরত বিজিবির নায়েক হুমায়ন আলী জানান, ভারতীয় দুজন এবং বাংলাদেশের একজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
ফুলবাড়ী থানার ওসি মামুনুর রশীদ জানান, বিনা পাসপোর্টে বাংলাদেশে প্রবেশের অপরাধে ভারতীয় প্রেমিক যুগলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বাংলাদেশি যুবকের বিরুদ্ধে মানব পাচার রোধ আইনে মামলা হয়েছে। আসামিরা থানায় রয়েছে। সোমবার তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।