এ সময় আমি পুরস্কার আশা করি নাই: ফারুক নওয়াজ
Published: 24th, January 2025 GMT
সম্প্রতি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। শিশুসাহিত্যে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ফারুক নওয়াজ। দেশ, মাটি, মানুষ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু তার সাহিত্যে উঠে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ শিশু-কিশোরদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি কাজ করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখেছেন গল্প উপন্যাস ছড়া। এদিকে ফারুক নওয়াজের নাম প্রকাশের পর শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। সব মিলিয়ে ৩৬৫টির অধিক বইয়ের লেখক ফারুক নওয়াজ এই প্রাপ্তি এবং সমালোচনাকে কীভাবে দেখছেন? সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্বরলিপি।
রাইজিংবিডি: আপনার শিশুসাহিত্যে, ছড়ায় দেশের কথা, মুক্তিযুদ্ধের কথা, বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ ঘুরেফিরে এসেছে। শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানের পর আপনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেলেন। এই প্রাপ্তিকে কীভাবে দেখছেন?
ফারুক নাওয়াজ: শুধু মুক্তিযুদ্ধের ওপর আমার ২৮টা কিশোর উপন্যাস আছে। মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে লিখেছি। একটু ফিউশনের মতো করে লিখেছি। প্রচুর কবিতাও লিখেছি। আমি মনে করি, পুরস্কারপ্রাপ্তির কোনো সময়-অসময় নাই। বাংলা একাডেমি যখন মনে করেছে তখন দিচ্ছে। তবে এ কথা ঠিক, এই সময়টাতে আমি পুরস্কার আশা করি নাই। আমার কাছে অপ্রত্যাশিত মনে হয়েছে। তারা আমাকে পুরস্কার কেন দিলো জানি না!
রাইজিংবিডি: অনেকেই বলেন, অনেক আগেই এই পুরস্কার আপনার পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটা হয়নি। বাংলা একাডেমি হয়তো এই সমালোচনা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে। অনেক পরে, এ সময়ে এসে বাংলা একাডেমি পুরস্কার গ্রহণে মানসিকভাবে আপনি কোন দ্বিধার মধ্যে আছেন কিনা?
ফারুক নওয়াজ: বাংলা একাডেমি বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে সরকার তো কিছুই না। যারা এখানে ‘জাজ’ হিসেবে থাকেন তারা তো কয়েকজন মানুষ। সেই বিচারে পুরস্কারটা আমি গ্রহণ করতে পারি বা প্রত্যাখ্যান করতে পারি। এই অধিকার সবার আছে। যে সরকারের কাছ থেকে আমার পুরস্কার পাওয়ার কথা, সে আমাকে দেয়নি। যার কাছ থেকে পাওয়ার কথা না, সে দিয়েছে। আমি মনে করি, আমার সাহিত্য মূল্যায়ন করেই পুরস্কারটা আমাকে দেওয়া হচ্ছে। লক্ষ্য করলে দেখবেন, এবার যারা পুরস্কার পাচ্ছেন তারা প্রত্যেকে যোগ্য। সেলিনা হোসেনরা রাম, সাম, যদু, মধু যাকে ইচ্ছে পুরস্কার দিয়েছেন। আমি যোগ্য মানুষদের সঙ্গে পুরস্কার পাচ্ছি, সেক্ষেত্রে আমি কি করবো? হ্যাঁ আমি জানি, অনেক বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকের চোখে এটা বিধবে, ইতোমধ্যে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন- ফারুক নাওয়াজকে কেন পুরস্কার দেওয়া হলো? এটা হবেই।
রাইজিংবিডি: হ্যাঁ এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা হচ্ছে। তবে আপনি কি মনে করেন, এই পুরস্কার অনেক আগেই আপনার পাওয়া উচিত ছিল?
ফারুক নওয়াজ: এই পুরস্কার কে পাবে তা নির্ধারণ করে কয়েকজন মানুষ। সেজন্য আমি মনে করি না আরও আগেই পাওয়া উচিত ছিল। কত মানুষই তো পায় না।
রাইজিংবিডি: কখন জানতে পারলেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার পাচ্ছেন?
ফারুক নওয়াজ: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির একজন পরিচালক আমাকে ফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন।
রাইজিংবিডি: সাড়ে তিনশোর অধিক বই কীভাবে লিখলেন?
ফারুক নওয়াজ: আমার পরিবারে সাহিত্যচর্চা ছিল। শৈশব থেকেই লিখি। কবি কাদের নেওয়াজ আমার বড় চাচা। মা লিখতেন। আমার ভাইয়েরা লেখেন। আমি যখন স্কুলে পড়তাম তখন আমাদের বাসায় একটা দেয়াল পত্রিকা ছিল। বড় ভাই আমাকে লেখার উৎসাহ দিতেন। প্রতি মাসে দেয়াল পত্রিকায় বাসার সবাই লিখতাম। প্রাথমিক পর্যায়ে দাদা ভাইয়ের (রোকনুজ্জামান খান) পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছি। কবি আহসান হাবীবের সহযোগিতা পেয়েছি। তাদের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতায় আমি শৈশব- কৈশোর থেকেই লেখক হয়ে উঠেছি। ছাত্রজীবন থেকে লেখা নেশায় পরিণত হয়েছিল। এই নেশা আর ছাড়া যায়নি। যারা আমার সমসাময়িক লেখক তারা মোটামুটি লেখা নিয়েই ছিলেন।
রাইজিংবিডি: বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্তির জন্য আপনাকে অভিনন্দন।
ফারুক নওয়াজ: ধন্যবাদ।
//তারা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ র ক নওয় জ এই প র এক ড ম
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা, নিহত ১
খুলনা নগরের আড়ংঘাটায় কুয়েট আইটি গেট–সংলগ্ন বিএনপির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে ইমদাদুল হক (৫৫) নামের এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সোয়া নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মামুন শেখসহ আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাতে মামুন শেখ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ওই কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশে থাকা শিক্ষক ইমদাদুল হকের শরীরে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে আবার গুলি চালালে মামুন শেখসহ অন্য দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
নিহত ইমদাদুল বছিতলা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য, তিনি একটি মাহফিলের অনুদান সংগ্রহের জন্য ওই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।
আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার বলেন, মামুন শেখ প্রায়ই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে বসে আড্ডা দেন। গতকাল রাতেও তিনি আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছিল। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।