অস্কারের মনোনয়ন ঘোষণা: ‘এমিলিয়া পেরেজ’ এর বাজিমাত
Published: 24th, January 2025 GMT
লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলের জেরে দু-বার পিছিয়েছিল অস্কারের মনোনয়ন ঘোষণার দিনক্ষণ। অবশেষে আজ শুক্রবার ২৩শে জানুয়ারি অস্কারের ৯৭তম এডিশনের চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা প্রকাশ্যে আনল অস্কার কমিটি। আমেরিকান অভিনেত্রী র্যাচেল সেনোট ও চীনা বংশোদ্ভূত আমেরিকান কমেডিয়ান বোয়েন ইয়াং ঘোষণা করেন মনোনীতদের নাম।
এবার সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন পেয়েছে নেটফ্লিক্সের ক্রাইম মিউজিক্যাল সিনেমা ‘এমিলিয়া পেরেজ’। ১৩ বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে সিনেমাটি। এই প্রথম ইংরেজি ভাষার বাইরের কোনো সিনেমা ১৩টি মনোনয়ন পেল। ১০টি করে মনোনয়ন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’ ও ‘উইকড’।
অস্কারের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে মনোনয়ন পেলেন যাঁরা—
সেরা সিনেমা
‘আনোরা’, ‘দ্য ব্রুটালিস্ট’, ‘আ কমপ্লিট আননোন’, ‘কনক্লেভ’, ‘ডুন: পার্ট টু’, ‘এমিলিয়া পেরেজ’, ‘আই এম স্টিল হিয়ার’, ‘নিকেল বয়েজ’, ‘দ্য সাবস্ট্যান্স’, ‘উইকড’
পরিচালক
শেন বেকার (আনোরা)
ব্র্যাডি করবেট (দ্য ব্রুটালিস্ট)
জেমস ম্যানগোল্ড (আ কমপ্লিট আননোন)
জ্যাক অঁদিয়ার (এমিলিয়া পেরেজ)
কোরালি ফার্গেট (দ্য সাবস্ট্যান্স)
সেরা অভিনেতা
অ্যাড্রিয়েন ব্রডি (দ্য ব্রুটালিস্ট)
টিমোথি শ্যালামেট (আ কমপ্লিট আননোন)
কোলম্যান ডোমিঙ্গো (সিং সিং)
রেফ ফাইঞ্জ (কনক্লেভ)
সেবাস্টিয়ান স্ট্যান (দ্য অ্যাপ্রেন্টিস)
সেরা অভিনেত্রী
সিনথিয়া এরিভো (উইকড)
কার্লা সোফিয়া গ্যাসকন (এমিলিয়া পেরেজ)
মাইকি ম্যাডিসন (আনোরা)
ডেমি মুর (দ্য সাবস্ট্যান্স)
ফার্নান্ডা টরেস (আই এম স্টিল হিয়ার)
আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম
আই এম স্টিল হিয়ার (ব্রাজিল)
দ্য গার্ল উইদ দ্য নিডল (ডেনমার্ক)
দ্য সিড অব দ্য স্যাক্রেড ফিগ (জার্মানি)
ফ্লো (লাটভিয়া)
অ্যানিমেটেড সিনেমা
ফ্লো
ইনসাইড আউট টু
মেমোয়ার অব আ স্নেইল
ওয়ালেস অ্যান্ড গ্রোমিট
দ্য ওয়াইল্ড রোবোট
এ ছাড়া পার্শ্ব অভিনেতা, পার্শ্ব অভিনেত্রী, স্বল্পদৈর্ঘ্য অ্যানিমেটেড সিনেমা, পোশাক পরিকল্পনা, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, মৌলিক আবহসংগীত, শব্দ, অ্যাডাপ্টেড চিত্রনাট্য, মৌলিক চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রাহক, প্রামাণ্যচিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য প্রামাণ্যচিত্র, সম্পাদনা, রূপসজ্জা ও চুলসজ্জা, মৌলিক গান, শিল্প নির্দেশনা এবং ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস শাখার মনোনয়ন তালিকা ঘোষণা করা হয়।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।