কলম্বিয়ায় অভিবাসীবাহী উড়োজাহাজ নামবে, বাড়বে না শুল্ক
Published: 28th, January 2025 GMT
অভিবাসী ও বাণিজ্য বিরোধ ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। হোয়াইট হাউস বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো অবৈধ অভিবাসীবাহী সামরিক বিমান নামতে দেবে কলম্বিয়া। ট্রাম্প প্রশাসনও কলম্বিয়ার ওপর আরোপ করা শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ থেকে সরে আসবে।
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়, কলম্বিয়া সব অভিবাসীকে গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে। কাজেই ওয়াশিংটন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কলম্বিয়া সরকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সব শর্ত মেনে নিয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক বিমানে কলম্বিয়ায় ফেরা সব অবৈধ অভিবাসীকে কোনো বিধিনিষেধ বা দেরি ছাড়া ফেরানোর বিষয়টিও রয়েছে।
ট্রাম্প ও পেত্রোর পাল্টাপাল্টি অবস্থান দেখা যায় রোববার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে পাঠানো অবৈধ অভিবাসী বোঝাই দুটি সামরিক বিমান কলম্বিয়ায় অবতরণে বাধা দেন পেত্রো। এতে বেজায় চটে যান ট্রাম্প। তিনি বলেন, কলম্বিয়া থেকে আসা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন তিনি। জারি করা হবে ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞাও। ট্রাম্পের এমন ঘোষণায় চুপ থাকেননি প্রেসিডেন্ট পেত্রো। এমন করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যেও পাল্টা শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দেয় দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশ। তবে দিন না পেরোতে উত্তেজনা কমে আসে হোয়াইট হাউসের ঘোষণায়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ (আইসিই)-এর নেতৃত্বে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত দেশব্যাপী অভিযানে ৯৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর এটিই সবচেয়ে বড় অভিযান বলে জানিয়েছে আইসিই। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর, যেমন শিকাগো, নিউয়ার্ক (নিউজার্সি) ও মিয়ামিতে পরিচালিত এই অভিযানে সম্প্রসারিত ক্ষমতাসম্পন্ন একাধিক ফেডারেল সংস্থা অংশ নেয়। খবর বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ানের।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কলম ব য়
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।