হায়দার ঝড়ে শেষ চারের পথে চিটাগং, ছিটকে গেল ঢাকা
Published: 29th, January 2025 GMT
সমীকরণটা সহজ ছিল চিটাগং কিংসের জন্য। হাতে ৫ উইকেট রেখে রংপুর রাইডার্সকে হারাতে ১৮ বলে ২০ রান লাগত তাদের। রংপুরের পথের কাঁটা হয়ে ছিলেন হায়দার আলী। চিটাগংয়ের জন্য ভরসা।
১৮তম ওভারে রংপুরের হয়ে আক্রমণে আসেন পেসার আকিফ জাভেদ। আগের ৩ ওভারে মাত্র ১৩ রান দেওয়া বাঁহাতি পেসার আকিফ শেষ ওভার করতে এসে দলকে ডোবাবেন তা কল্পনাও করতে পারেননি কেউ। স্বদেশী হায়দার আলী টানা চার ছক্কা উড়িয়ে ১৪ বল আগে চিটাগংকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। ১৮ বলে ১ চার ও ৬ ছক্কায় ৪৮ রান করে হায়দার চিটাগংয়ের জয়ের নায়ক।
এই জয়ে প্লে’অফের লড়াইয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেল চিটাগং কিংস। তাদের ৫ উইকেটের জয়ে লড়াই থেকে ছিটকে গেল ঢাকা ক্যাপিটালস। ১০ ম্যাচে ৬ জয়ে চিটাগংয়ের পয়েন্ট ১২। সমান ম্যাচে ৩ জয়ে ঢাকার পয়েন্ট ৬। শেষ ২ ম্যাচ জিতলেও তাদের পয়েন্ট ১০ এর বেশি হবে না। অন্যদিকে চিটাগং দুই ম্যাচের একটিতে জিতলেই নিশ্চিত করবে শেষ চার।
আরো পড়ুন:
‘দেশ সেটেল নেই’- পারিশ্রমিক ইস্যুতে মিরাজ
ইফতেখারে ‘মুখ রক্ষা’ রংপুরের
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ইফতেখার আহমেদের ৪৭ বলে ৬৫ রানের হার না মানা ইনিংসে ভর করে ৫ উইকেটে ১৪৩ রান তুলে রংপুর। ৭ চার ও ৩ ছক্কায় নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন ইফতেখার। এছাড়া তার সঙ্গে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন মাহেদী হাসান। ২০ বলে ৩ চারে ২২ রান করেন তিনি। দুজন ষষ্ঠ উইকেটে ৪৭ বলে ৭৫ রান করেন।
রংপুরের ইনিংসের প্রথম ওভারটিই ছিল মেডেন। শ্রীলঙ্কান পেসার বিনুরা ফার্নান্দোর ওভার থেকে কোনো রান নিতে পারেননি স্টিভেন টেইলর। বাঁহাতি ওপেনার দ্বিতীয় ওভারে ফেরেন সাজঘরে। পেসার শরিফুল ইসলাম তার উইকেট উপড়ে ফেলেন।
আরেক ওপেনার সৌম্য জীবন পাওয়ার পরও ভালো করতে পারেননি। ১৭ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৩ রান করেন। শরিফুলকে তিনে নামা সাইফ পরপর দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ভালো শুরু করেছিলেন। কিন্তু ওই রানেই থেমে যেতে হয় তাকে। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের সংগ্রামী ইনিংস শেষ হয় বাজে শটে। ২১ বলে মাত্র ৯ রান করেন তিনি।
ইরফান শুক্কুর পারেননি সুযোগটি কাজে লাগাতে। ২ বলে ১ রান করে শামীমের বলে এলবিডব্লিউ হন। ১২.
চিটাগংকে আটকানোর জন্য যা যথেষ্ট ছিল না। যদিও জয়ের পথে উঠা-নামা করেছে তাদের অবস্থান। ওপেনার লাহিরু মিলান্থা ৬ রানে আউট হন। গ্রাহাম ক্লার্কের ব্যাট থেকে ১৫ রানের বেশি আসেনি। মোহাম্মদ মিঠুনের ইনিংস থেমে যায় ২০ রানে। শামীম পাটোয়ারী ৮ রানে রান আউট হন।
বিপদে পড়া দলকে উদ্ধারে জুটি গড়েছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন ও হায়দার আলী। দুজন ৪৩ রান জমা করেন। ধীর গতির ব্যাটিংয়ে ফিফটির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ইমন। একাদশে ফিরে ২টি করে চার ও ছক্কায় সাজান ইনিংসটি। কিন্তু সাইফ উদ্দিনের বলে ক্যাচ দিয়ে তাকে থামতে হয় ৪১ রানে। সেখান থেকে হায়দার একাই দলের হাল ধরে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
রংপুরের হয়ে বল হাতে ২টি করে উইকেট নেন আকিফ জাভেদ ও সাইফ উদ্দিন। বোলাররা চেষ্টা চালালেও স্কোরবোর্ডে পর্যাপ্ত পুঁজি না থাকায় ম্যাচটা হারতে হয়েছে রংপুরকে। টানা আট জয়ে বিপিএল শুরু করা রংপুর টানা তিন হারে ছন্দ হারিয়েছে বেশ ভালোভাবেই।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল র ন কর ন ইফত খ র প র নন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
চাকরিতে না ফেরালে রাজপথ ছাড়বেন না ইআরপিপি স্বাস্থ্যকর্মীরা
পাঁচ মাস ধরে বেতন নেই। পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কেউ, কেউ আবার চাকরির বয়সসীমা পার করে এখন আর নতুন কোথাও আবেদন করার সুযোগ পাচ্ছেন না। এর মধ্যেই প্রকল্প শেষের অজুহাতে চাকরিচ্যুত হয়েছেন তারা—যারা ২০২০ সালের করোনা মহামারির সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। এই অবস্থায় নিজেদের চাকরি স্থায়ীকরণ এবং অবিলম্বে বকেয়া বেতনের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ারডনেস (ইআরপিপি) প্রকল্পের আউটসোর্সিং স্বাস্থ্যকর্মীরা।
আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, তাদের প্রধান দাবি হলো স্থায়ীকরণের মাধ্যমে চাকরি বহাল রাখতে হবে এবং রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির লিখিত নিশ্চয়তা দিতে হবে। সেইসঙ্গে গত চার মাসের বকেয়া ভাতা অবিলম্বে পরিশোধ করতে হবে। তা না হলে অবস্থান কর্মসূচি চলবে, প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
বিক্ষোভরত কর্মীদের একজন বলেন, সরকারের ডাকেই তো আমরা এসেছিলাম। ভয়ঙ্কর সময় ছিল সেটা। তখন যদি পেছনে না ফিরে মানুষকে সেবা দিতে পারি, আজ যখন একটু স্থিতি এসেছে—তখন কেন আমরা উপেক্ষিত হবো? ৫ মাস ধরে একটা টাকাও পাইনি, পরিবার চালানো দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিপসমে কর্মরত ইআরপিপির মেডিকেল টেকনোলজিস্ট আবু সুফিয়ান বলেন, প্রায় পাঁচ বছর এই প্রকল্পে কাজ করেছি। এখন বয়স ৩৫ ছাড়িয়েছে। সরকারি চাকরির আবেদনের শেষ সীমা পেরিয়ে গেছি। এখন আমাদের বাদ দিয়ে নতুন অদক্ষ জনবল নেয়ার চেষ্টা চলছে। এটা শুধু অবিচার না, আমাদের মর্যাদায় আঘাত।
ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি সেন্টারের ডাটা অপারেটর আব্দুর রহমান বলেন, ঘরে ছোট বাচ্চা, স্কুলের বেতন দিতে পারিনি। স্ত্রী-সংসার নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছি। করোনার সময় এই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডাকেই আমি কাজে গিয়েছিলাম, এখন সেই অধিদপ্তরের সিঁড়িতেই বসে থাকতে হচ্ছে দাবি আদায়ের জন্য।
ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায় কর্মরত এসব স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিযোগ, করোনার সময় গড়ে তোলা আরটি-পিসিআর ল্যাব, ডেডিকেটেড আইসিইউ বা আইসোলেশন ইউনিটে তারাই প্রথম দিন থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন। অথচ আজ তাদের বাদ দিয়ে সেই পদে নতুন লোক নিয়োগের পাঁয়তারা চলছে।
তারা বলছেন, আমরা চাকরি ভিক্ষা চাই না। আমরা যেটুকু প্রাপ্য, সেটুকু চাই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্প চলবে, তবে আমাদের চাকরি কেড়ে নেয়া হলো কেন? আমাদের রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত না করে অন্যদের সুযোগ দেওয়া মানে অবিচারকে পুরস্কৃত করা।