১২ দাবি আদায়ে সম্মেলন করবে রিকশা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন
Published: 1st, February 2025 GMT
দেশের সড়ক উপযোগী নকশায় আধুনিকায়নসহ ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে বিআরটিএর লাইসেন্স ও যৌক্তিক রুট পারমিট দেওয়াসহ ১২ দফা দাবি আদায়ে জাতীয় সম্মেলন করতে যাচ্ছে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন। এই সম্মেলন আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানান রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম নাদিম।
সম্মেলনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ১২ দফা দাবিতে আমরা দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলন করব আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি। দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন ২৪’র গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যরা। আমাদের সম্মেলনে ৬৩ জেলা সংগঠনের শ্রমিক সদস্যসহ সারাদেশের শ্রমিক জনতা অংশগ্রহণ করবেন।
রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে; ব্যাটারিচালিত যানবাহন চলাচলে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে; শ্রমিকদের ওপর সব জুলুম-নির্যাতন-চাঁদাবাজি-হয়রানি বন্ধ করতে হবে; শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সড়ক ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা কমিটি গঠন করতে হবে; সড়কের লেন পদ্ধতি সচল ও সার্ভিস লেন এবং চার্জিং স্টেশন নির্মাণ করতে হবে; শ্রমিক নেতাদের নামে মিথ্যা হয়রানিমূলক সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে; জীবিকা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও ব্যাটারিচালিত যানবাহন সংক্রান্ত সব রিট দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে; ব্যাটারিচালিত যানবাহনকে গণপরিবহন ও শিল্প হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে; অসৎ বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে রিকশা যন্ত্রাংশসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমাতে হবে; শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক ও মানবিক বিবেচনায় ব্যাটারিচালিত যানবাহনের পুঁজিকে নিরাপদ করে পর্যায়ক্রমে প্যাডেলচালিত বাহনের অমানবিক শ্রম থেকে মানুষকে মুক্ত করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল হাকিম মাইজভান্ডারি প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।
আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।
নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।