কৃষকরা কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ব‌লে‌ছেন, ‘‘রাস্তায় রাস্তায় চল‌ছে চাঁদাবাজি। চাঁদাবাজি আর মধ্যস্বত্বের মুনাফার লোভে জীবন যাচ্ছে কৃষকের। কৃষকদের বাঁচাতে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নি‌তে হ‌বে।’’

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে তি‌নি এসব কথা ব‌লেন।

জিএম কা‌দের ব‌লেন, ‘‘গেলো বছর কয়েক দফা বন্যায় ফসলের বিপুল ক্ষতি মেটাতে এবার ব্যাপকভাবে শীতকালীন শাকসবজি আবাদ করেছে কৃষক। ভালো ফলন পেলেও ফসলের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। তার স‌ঙ্গে যোগ হ‌য়ে‌ছে রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের মুনাফার লোভ।’’

তি‌নি ব‌লেন, ‘‘বীজ, সার, কীটনাশক ও কৃষি শ্রমিকের মজুরি দিয়ে ফসল ফলাতে কৃষক যে ব্যয় করেছে, তা তুলতে পারছে না ফসল বিক্রি করে। কৃষক ২-৩ টাকা মূল্যে যে লাউ বিক্রি করেছে, তা রাজধানীতে ১৫-২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। আবার ২-৩ টাকা দামের টমেটো রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫-১৭ টাকায়। ৩-৪ টাকা দামের বেগুন রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে ১৫-১৮ টাকায়। কৃষক প্রতি পিস ফুলকপির দাম ২ থেকে ৩ টাকা পেলেও রাজধানীতে বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে কৃষিপণ্য সংরক্ষণ ও শুধুমাত্র বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক হিমাগারসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সাথে বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম কমাতে হ‌বে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাঝপথে জ্বালানি শেষ স্পিডবোটের, ২৭ যাত্রী নিয়ে ভেসে ছিল আড়াই ঘণ্টা

সন্দ্বীপ চ্যানেলে দুর্ঘটনায় পড়া একটি স্পিডবোট আড়াই ঘণ্টা সাগরে ভেসে থাকার পর কূলে পৌঁছেছে। বোটটিতে ৩ শিশু, ২ নারীসহ মোট ২৭ জন যাত্রী ছিলেন।

আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা বোটটি বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার ছোট কুমিরা উপকূলে পৌঁছায়। বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি হলো সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিস।

বোটের কয়েকজন যাত্রী প্রথম আলোকে জানান, কুমিরা ঘাটের কাছাকাছি আসতেই বোটটির গতি কমে যায়। এরপর প্রবল ঢেউ ও স্রোতের মুখে বারবার পানিতে আছড়ে পড়তে থাকে। চালক তখন যাত্রীদের জানান, বোটের জ্বালানি শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে বোটের সামনের অংশে পানি ঢুকতে দেখা যায়। আতঙ্কিত যাত্রীরা তখন চিৎকার করতে থাকেন। পরে বোটটি ভাসতে ভাসতে কূলে পৌঁছায়।

বোটে থাকা যাত্রী ফুয়াদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বোটের তলা ফেটে পানি ঢুকছে আর আমরা এক কিলোমিটার দূরে উত্তাল সাগরে ভাসছি। একপর্যায়ে মনে হচ্ছিল বেঁচে ফিরতে পারব না, এমনকি সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার কথাও ভাবছিলাম। কিন্তু ভাগ্য ভালো, শেষ পর্যন্ত কূলে পৌঁছাতে পেরেছি।’

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সবাই নিরাপদে কূলে নামতে সক্ষম হন বলে জানান ফুয়াদ।

বিকেলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্পিডবোট ডুবে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রাণহানির আশঙ্কায় অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বিষয়টির কারণ জানতে বিভিন্ন মন্তব্য করেন।

জানতে চাইলে বোট পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান সন্দ্বীপ মেরিন সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বোটের জ্বালানি শেষ হয়নি। তীব্র স্রোতের কারণে বোটটি কুমিরা ঘাট থেকে উত্তরে সরে গিয়ে তীরের কংক্রিট ব্লকে ধাক্কা খায়। এতে বোটের নিচের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু যাত্রীরা সবাই নিরাপদে কূলে পৌঁছাতে সক্ষম হন।’

বৈরী আবহাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বোট চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সার্ভিস বন্ধ ছিল। তবে বিদেশগামী কয়েকজন যাত্রীর অনুরোধে এই একটি ট্রিপ চালু করতে হয়েছে।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এই সময়ে বোট চলাচলের অনুমতি ছিল না। তিনি বলেন, মাঝ সাগরে জ্বালানি শেষ হওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তার দায় চালক ও মালিকের। ইতিমধ্যে স্বত্বাধিকারীদের কাছে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে। চালকের লাইসেন্স স্থগিত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ