নারী ফুটবলারদের বিদ্রোহের মধ্যেই আজ সন্ধ্যায় এল খবরটা। ২০২৫ সালের একুশে পদক পাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল।

বাংলাদেশের কোনো ক্রীড়া দলের একুশে পদক পাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। দুই যুগ আগে সংস্থা হিসেবে স্বাধীনতা পদক পেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

নারী ফুটবল দলের একুশে পদক পাওয়ার খবরে অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দুই শব্দে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভালো লাগছে।’

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল বলতে সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা দলটিকে বোঝানো হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে গত অক্টোবরে নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ধরে রাখার পর বাংলাদেশ জাতীয় নারী দল আর কোনো ম্যাচ খেলেনি। এর ফলে সর্বশেষ খেলা দলটিই পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়ে থাকতে পারে।
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল দুবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে। প্রথমবার ২০২২ সালে, দ্বিতীয়বার ২০২৪ সালে।

নারী ফুটবলের জন্য সুখবরটা এসেছে এমন সময়ে, যখন দুবারের সাফজয়ী ১৬ ফুটবলারসহ জাতীয় দলের ক্যাম্পে থাকা ১৮ জন নারী ফুটবলার কোচের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাফুফে ভবনের নিচে সংবাদ সম্মেলন ডেকে সাবিনা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা, মনিকা চাকমা, রুপণা চাকমা, সানজিদা আক্তার, মারিয়া মান্দারা ঘোষণা দিয়েছেন, পিটার বাটলার কোচ থাকলে তাঁরা গণ-অবসরে যাবেন। সেই ঘটনায় এখন টালমাটাল দেশের নারী ফুটবল।

সংকট সমাধানে বাফুফে গঠিত সাত সদস্যের বিশেষ কমিটি আজ রাতে বাফুফে সভাপতির কাছে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা। কমিটি নিজেদের মধ্য শেষবারের মতো সন্ধ্যায় সভা করেছে বাফুফে ভবনে। সেই সভায় কী হয়, প্রতিবেদনে কী থাকে, জল্পনার মধ্যেই বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের একুশে পদক পাওয়ার ঘোষণা এল।

বাংলাদেশে এর আগে কোনো খেলার কোনো দলই একুশে পদক পায়নি। সংস্থা হিসেবে ২০০১ সালে স্বাধীনতা পদক পেয়েছিল বিসিবি। স্বাধীনতা পদকের জন্য স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল অনেকবারই আবেদন করেছিল। কিন্তু তারা এখনো পুরস্কার পায়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল র এক শ ফ টবল র পদক প

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ