দর্শকের বিপুল সাড়ার মধ্য দিয়ে কাল রাতে বিপিএল শেষ হলেও টুর্নামেন্টজুড়ে চলা পারিশ্রমিককেন্দ্রিক নেতিবাচক ঘটনার রেশ পুরোপুরি শেষ হয়নি।

বিদেশি ক্রিকেটারদের সময়মতো পারিশ্রমিক না দেওয়া নিয়ে এবার দেশে–বিদেশে যে আলোড়ন উঠেছে, ভবিষ্যতে তা এড়াতে এখন থেকেই উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

বিপিএল ও দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, এখন থেকে বিপিএলের ড্রাফটে থাকা সব বিদেশি ক্রিকেটারের দায়িত্ব নেবে বোর্ড।

বিসিবির দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিন ধরনের উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে।

প্রথমত, বিদেশি খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকের সরাসরি ব্যবস্থাপনা। বিপিএল ড্রাফটে থাকা খেলোয়াড়দের চুক্তি ও ম্যাচ ফির অর্থ স্বচ্ছভাবে ও সময়মতো পরিশোধের দায়িত্ব নেবে বিসিবি।

দ্বিতীয়ত, সার্বিক লজিস্টিক্যাল সহায়তা। বিপিএল শেষে বিদেশি খেলোয়াড়দের নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছানোর সব লজিস্টিক্যাল বিষয় তত্ত্বাবধান করা হবে।

তৃতীয়ত, ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে আর্থিক প্রটোকল উন্নততর করা। খেলোয়াড়দের স্বার্থ ও পারিশ্রমিক পরিশোধের প্রক্রিয়া সুরক্ষিত করতে ও আরও নিয়ন্ত্রিত আর্থিক প্রটোকল প্রতিষ্ঠা করা হবে।

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপ বিপিএলে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ও স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সব ক্রিকেটারদের জন্য একটি পেশাদার অভিজ্ঞতা দেওয়ার ব্যাপারে বিসিবির প্রতিশ্রুতিকে প্রমাণ করে। অর্থিক ও পরিচালনার ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করতে বিসিবি বাকি অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যাবে।’

একাদশ বিপিএল ফাইনালের পর দিন বিসিবির ‘দায়িত্বগ্রহণ’ সম্বলিত ঘোষণাটি এসেছে পারিশ্রমিক বিষয়ে টালমাটাল কয়েক সপ্তাহের জেরে। এবারের বিপিএলে খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফদের পারিশ্রমিক না দেওয়া নিয়ে বারবার শিরোনাম হয়েছে দুর্বার রাজশাহী। খেলোয়াড়দের অনুশীলন বর্জন, টাকা না পেয়ে বিদেশিদের না খেলা, একাধিকবার চেক বাউন্স, বিদেশিদের হোটেলে আটকে থাকাসহ বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়েছে দলটি। পারিশ্রমিক না পাওয়া নিয়ে বিতর্ক ছিল চিটাগং কিংস দলেও।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ