সরকারি জায়গায় বিএনপি নেতার ঘর নির্মাণের অভিযোগ
Published: 8th, February 2025 GMT
সরকারি হাটের জায়গা দখল করে পাকা ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে কফিল উদ্দিন নামের এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। একই এলাকায় হাটের আরেকটি সরকারি জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ করছেন মফিজ উদ্দিন। তিনিও বিএনপির কর্মী বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চড়ইকোল বাজারে ঘটনাটি ঘটেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে এমন দখল চললেও কেউ কিছুই বলার সাহস পাচ্ছেন না।
অভিযুক্ত কফিল উদ্দিন চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি।
আরো পড়ুন:
ফেসবুকে পোস্ট
বুলডোজার দিয়ে আ.
আ.লীগ নেতাদের সম্পত্তিতে হামলা না চালানোর আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
চড়ইকোল বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা কফিল উদ্দিন দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে হরিপুর ইউনিয়নের চড়ইকোল বাজারে সরকারি হাটের জায়গা দখল করেন। কিছুদিন হলো তিনি সেখানে একটি পাকা ঘর নির্মাণ করছেন। তার দেখাদেখি, একই বাজারে বিএনপি কর্মী মফিজ উদ্দিনও হাটের জায়গা দখল করে আরেকটি ঘর নির্মাণ করছেন।”
আমজাদ হোসেন নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “প্রকাশ্যে সরকারি জায়গায় ঘর নির্মাণ কাজ চলমান থাকলেও অদৃশ্য কারণে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে।”
সরকারি জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা কফিল উদ্দিন বলেন, “বাজারে আমার বসার মতো কোন জায়গা নেই। তাই বাজারের এই জায়গাটিতে একটি ঘর নির্মাণ করছি। আমি বিএনপির অনেক নির্যাতিত একজন কর্মী। আমি অনেকবার জেল জুলুম সহ্য করেছি। যদি আপনারা নিউজ করেন তাহলে আমার ওই জায়গা ফাঁকা করে দিতে হবে।”
জায়গাটি সরকারিভাবে লিজ নেওয়ার জন্য আবেদন করবেন বলেও জানান কাফিল উদ্দিন।
অপর অভিযুক্ত মফিজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। এমন ঘটনা ঘটলে দলের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়। কোনো অবস্থাতেই আমরা দখলদারিত্বে বিশ্বাস করি না।”
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ সদস্য কে এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আমি কিছুই জানি না। বর্তমানে আমি দলীয় কোনো পদে নেই। সুতরাং, তার বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আমি কেউ না।”
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, “সরকারি জায়গা দখল করে ভবন নির্মাণের বিষয়টি আমি আপনার কাছে থেকেই শুনলাম। যদি ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়, অবশ্যই ওই জায়গা দখলমুক্ত করা হবে। প্রয়োজনে দখলকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ঘর ন র ম ণ ক ব এনপ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।