গোপালগঞ্জে শরীরে পেট্রোল ঢেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ
Published: 8th, February 2025 GMT
গোপালগঞ্জ সভা চলার সময় বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার সদস্যদের ওপর হামলা ও শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এসময় সংস্থাটির কোষাধ্যক্ষ শ্যামল মন্ডল (৪৯) দগ্ধ হন।
তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের বেদগ্রাম বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থায় (ডগলাস) ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪
সিরাজগঞ্জে বাসচাপায় স্বামী-স্ত্রীসহ নিহত ৩
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, “জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, বেদগ্রাম বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার সভা চলাকালীন হামলা চালানো হয়েছে। একইসাথে একজনকে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দগ্ধ শ্যামল মন্ডল গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা করপাড়া ইউনিয়নের হাটবাড়িয়া গ্রামের নকুল বিশ্বাসের ছেলে। তিনি ঢাকায় কৈননিয়া নামের একটি সংস্থায় চাকরি করেন। তিনি গোপালগঞ্জের খ্রিস্টানদের সেচ্ছাসেবী সংগঠন বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার কার্যকরী কমিটির কোষাধ্যক্ষ।
বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার নির্বাহী পরিচাক শলোমন অপূর্ব বাড়ৈ বলেন, “গোপালগঞ্জের বেদগ্রামে বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার সামনে ও ভেতরের জায়গা দখল করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পাঁয়তারা করছেন এন্ড্রু বিশ্বাস। আজ আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্ধারিত সভা ছিল। এন্ড্রু সংস্থার বর্তমান কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সহ-সভাপতির দ্বায়িত্ব পালন করছেন। এন্ড্রু বিশ্বাস আজ সভায় উপস্থিত ছিলেন না। সভা শুরু হওয়ার কিছু সময় পর এন্ড্রু বিশ্বাস সভা বানচাল করার জন্য ৪০-৫০ লোকজন নিয়ে সভাকক্ষে প্রবেশ করেন। এক পর্যায়ে তিনি উপস্থিত সদস্যদের মারধর করতে শুরু করেন। এসময় সংস্থার ট্রেজারার শ্যামল মন্ডলকে কক্ষে আটকে প্রথমে মারধর ও পরে তার শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সংস্থার সদস্যরা শ্যামল মন্ডলকে উদ্ধার করে প্রথম গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়।”
সংস্থা সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল বৈদ্য বলেন, “আমি খুলনার ট্রাবোনাকাল গ্রেস এজি চার্জের পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করছি। গত বৃহস্পতিবার এন্ড্রু বিশ্বাস তার ভাগ্নে মজুমদার ও আকাশ মজুমদার খুলনায় গিয়ে আমাকে আজকের সভায় উপস্থিত না হওয়ার জন্য হুমকি এবং আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। আমি গোপালগঞ্জে গেলে আমাকে দেখে নেবেন বলেও হুমকি দিয়ে আসে। তার উদ্দেশ্য গোপালগঞ্জে বিশ্ব মুক্তবানী সংস্থার জায়গা দখল করে নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। আজ এন্ড্রু বিশ্বাসের নেতৃত্ব প্রভাস বাড়ৈ, দীলিপ বাড়ৈ, আইজ্যাক বাড়ৈ, জুয়েল বাড়ৈ, মিকাইল বাড়ৈ, লিটন বল্বব, সুকলাল মজুমদারসহ ৪০-৫০ জন লোক হামলা করে।”
এ বিষয়ে এন্ড্রু বিশ্বাস বলেন, “আমার বিরুদ্ধে জায়গা দখলের যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়।”
সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দানিয়েল বৈদ্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমি বড় ভাই হিসেবে তাকে একটা থাপ্পড় মেরেছি। তবে আজ আমার কোনো লোক হামলা করেনি। কারা তাদের ওপর হামলা করেছে বা আগুনে পুড়িয়েছে তা আমার জানা নেই।”
গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো.
ঢাকা/বাদল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ প লগঞ জ র জন য কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।