অর্ধযুগ পর রাবিতে শুরু হচ্ছে শিক্ষক নিয়োগ
Published: 8th, February 2025 GMT
অবশেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শুরু হতে যাচ্ছে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম। প্রায় অর্ধযুগ পর আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
তবে এবারের শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালায় থাকছে না পরিবর্তন। ২০২২ সালের নিয়োগ নীতিমালায় শিক্ষক নিয়োগ হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হবে। পরে ধাপে ধাপে সব বিভাগেই শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে। এরপরেই শুরু হবে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ। তবে শিক্ষক নিয়োগ আগে শেষ করতে চান রাবি প্রশাসন। তবে বর্তমান প্রশাসনের নিয়োগ নীতিমালা কেমন হবে এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আগ্রহের কমতি নেই।
এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা শিথিল ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজের মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০২০ সালের ১০ ও ১৩ ডিসেম্বর পৃথক ১২টি নোটিশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম সমুন্নত রাখার স্বার্থে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর জারি করা নিয়োগ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান ও নীতিমালা অনুসরণ করে সুষ্ঠুভাবে সব নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়।
জানা যায়, বিগত সময়গুলোতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের মতো করে যোগ্যতা নির্ধারণ করে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে। এমনকি নিজেদের স্বজনদের নিয়োগ দিতে নিয়োগের যোগ্যতা শিথিল করেছে বলে ইউজিসির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ নীতিমালা-২২ অনুসারে শিক্ষক পদে আবেদনের জন্য একজন প্রার্থীর অনার্স ও মাস্টার্স ফলাফল ন্যূনতম সিজিপিএ-৩.৫ এবং মেধাক্রমে ১-৭ এর মধ্যে থাকতে হবে। তবে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে কোনো প্রার্থীর অনার্স ও মাস্টার্সের ফলাফল সিজিপিএ-৩.৫ এর নিচে হলে তা শিথিলযোগ্য হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রদত্ত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা অনুসারে গণ্য করা হবে।
২০১৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ে-জামাইকে চাকরি দিতে নিয়োগ নীতিমালা শিথিল করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান। এতে অনার্স-মাস্টার্সে সিজিপিএ কমিয়ে ৩.২৫ এবং মেধাক্রমের শর্ত তুলে দেয়া হয়, যা ১৯৭৩-এর অধ্যাদেশের বহির্ভূত ছিল। এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্ত সাপেক্ষে ওই নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করা হয় এবং নতুন নীতিমালা প্রণয়নে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের ১০ মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৬তম সিন্ডিকেট সভায় নতুন এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়।
রেজিস্ট্রার দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাবিতে বর্তমানে ১ হাজার ৪৯০টি শিক্ষক পদের মধ্যে শূন্য ৪৪০টি। অর্থাৎ বর্তমানে শিক্ষক রয়েছেন প্রায় এক হাজার ৫০জন। তাদের মধ্যে আবার ৫৮জন সম্প্রতি অবসরে গেছেন। মারা গেছেন কিছু সংখ্যক শিক্ষক। অন্যদিকে কর্মকর্তার ৭৯২টি পদের মধ্যে শূন্য ২০০টি, সহায়ক কর্মচারীর ১ হাজার ৪২টি পদের মধ্যে শূন্য ২৫১টি। এছাড়া সাধারণ কর্মচারীর ১ হাজার ৯০৯টি পদের মধ্যে ৯০৯টি পদ শূন্য রয়েছে।
বিশ্বব্যাপী উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর গড় অনুপাতের ন্যূনতম মানদণ্ড ধরা হয় ১:২০। অর্থাৎ প্রতি ২০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন করে শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, প্রতি ৩৫ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র একজন শিক্ষক। নিয়োগ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় এ অনুপাত কমতে পারে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিয়োগ নীতিমালার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “বিজ্ঞপ্তির মধ্যে যে শর্ত দেওয়া ছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আবেদন করেছিলেন। আপাতত সেই অনুযায়ী নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রে আমরা নতুন করে পরিকল্পনা গ্রহণ করব।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আমার স্ত্রী খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করছেন না: জেডি ভ্যান্স
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স ক্যাথলিক গির্জার মাধ্যমে প্রভাবিত হয়ে কোনো একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিজের এ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বিশাল এক পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
জেডি ভ্যান্স বলেন, তাঁর যে মন্তব্য নিয়ে কথা হচ্ছে, সেটি মূল বক্তব্য থেকে কেটে নেওয়া একটি অংশ। কোন প্রসঙ্গে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন, সেটা দেখানো হয়নি।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে তরুণদের সংগঠন ‘টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ’র একটি অনুষ্ঠানে এক তরুণীর প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ভ্যান্স তাঁর স্ত্রী উষা একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা হিন্দু সংস্কৃতিতে বেড়ে উঠেছেন।
স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।
স্ত্রী একদিন খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করবেন, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করা ভিডিও ভাইরাল হওয়া পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, ভ্যান্সের এ মন্তব্য কি তাঁর স্ত্রীকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়ার ইঙ্গিত।জবাব দিতে এক্স পোস্টে ভ্যান্স বলেন, একটি পাবলিক ইভেন্টে তাঁকে তাঁর আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তিনি ওই প্রশ্ন এড়িয়ে যেত চাননি, উত্তর দিয়েছেন।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘প্রথমেই বলি, প্রশ্নটি আসে আমার বাঁ পাশে থাকা একজনের কাছ থেকে, আমার আন্তধর্মীয় বিয়ে নিয়ে। আমি একজন পাবলিক ফিগার, লোকজন আমার ব্যাপারে জানতে আগ্রহী এবং আমি প্রশ্নটি এড়িয়ে যেতে চাচ্ছিলাম না।’
এ বছর জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে জেডি ভ্যান্স ও তাঁর স্ত্রী উষা ভ্যান্স