মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র এবং দৈনিক গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ে প্রবেশাধিকার বাতিল করছেন।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “জো বাইডেনের গোপন তথ্য পাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তাই তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করা হচ্ছে এবং তার দৈনিক গোয়েন্দা ব্রিফিং বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।”

আরো পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে আবারো বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১০

অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র?

বিবিসি বলছে, বাইডেন যখন ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসেন, তখন তিনি ট্রাম্পের নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রত্যাহার করেছিলেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বাইডেনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র তুলে নিলেন।

বাইডেন ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিলের পেছনে যুক্তি ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় ট্রাম্পের ভূমিকা। বাইডেন সেসময় বলেছিলেন, “ট্রাম্পের আচরণ প্রমাণ করে, তিনি আর গোপন গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার উপযুক্ত নন।”

আর এবার ২০২৫ সালে ক্ষমতায় ফিরে এসে ট্রাম্প প্রতিশোধ নিলেন বাইডেনের বিরুদ্ধে। 

ট্রাম্প লিখেছেন, “২০২১ সালে বাইডেন এই নজির স্থাপন করেছিলেন, যখন তিনি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেন, যেন তারা যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট (আমার!)-কে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া বন্ধ করে। এটি সাধারণত সাবেক প্রেসিডেন্টদের প্রতি সৌজন্য হিসেবে প্রদান করা হয়।”

ট্রাম্প আরো লিখেছেন, “রিপোর্টে দেখা গেছে, বাইডেনের স্মৃতিশক্তি বেশ কম। গোপন তথ্য নিয়ে তাকে ভরসা করা যায় না।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি বাইডেনকে এক ধরনের তির্যক ব্যঙ্গাত্মক টিপ্পনি দিয়েছেন।

গত মাসে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকেই লোকচক্ষুর আড়ালে আছেন বাইডেন। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি তিনি। বিবিসি বাইডেনের ট্যালেন্ট এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে।

এছাড়া বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত আরো অনেক কর্মকর্তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র ও নিরাপত্তা সুরক্ষা বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক মার্কিন সামরিক প্রধান মার্ক মিলি, যিনি ট্রাম্পের একজন উন্মুক্ত সমালোচক ছিলেন। নতুন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ মিলির ‘আচরণ’ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তার সামরিক পদমর্যাদা পুনর্মূল্যায়ন করতে বলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক শীর্ষ চিকিৎসা উপদেষ্টা ড.

অ্যান্থনি ফাউচির নিরাপত্তা সুরক্ষাও প্রত্যাহার করেছেন ট্রাম্প। ফাউচি কোভিড-১৯ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত ‘একেবারেই স্বাভাবিক’। কারণ আজীবন সরকারি নিরাপত্তা সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়।

ট্রাম্প ২০২০ সালে বাইডেনের পক্ষে কথা বলা দুইজন সাবেক সিআইএ পরিচালকসহ ৫০ জনের বেশি সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার নিরাপত্তা ছাড়পত্রও বাতিল করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের পক্ষে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ত ল কর ছ ড়পত র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কালচে হয়ে যাচ্ছে মোগল আমলের লালকেল্লা
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
  • তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী
  • কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মেয়র শাহাদাত
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
  • ৫ কোম্পানির শেয়ার কারসাজি: ৩ জনকে দেড় কোটি টাকা অর্থদণ্ড