বাইডেনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করেছেন ট্রাম্প
Published: 8th, February 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র এবং দৈনিক গোয়েন্দা ব্রিফিংয়ে প্রবেশাধিকার বাতিল করছেন।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “জো বাইডেনের গোপন তথ্য পাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তাই তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করা হচ্ছে এবং তার দৈনিক গোয়েন্দা ব্রিফিং বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।”
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে আবারো বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১০
অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র?
বিবিসি বলছে, বাইডেন যখন ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসেন, তখন তিনি ট্রাম্পের নিরাপত্তা ছাড়পত্র প্রত্যাহার করেছিলেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বাইডেনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র তুলে নিলেন।
বাইডেন ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্পের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিলের পেছনে যুক্তি ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় ট্রাম্পের ভূমিকা। বাইডেন সেসময় বলেছিলেন, “ট্রাম্পের আচরণ প্রমাণ করে, তিনি আর গোপন গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার উপযুক্ত নন।”
আর এবার ২০২৫ সালে ক্ষমতায় ফিরে এসে ট্রাম্প প্রতিশোধ নিলেন বাইডেনের বিরুদ্ধে।
ট্রাম্প লিখেছেন, “২০২১ সালে বাইডেন এই নজির স্থাপন করেছিলেন, যখন তিনি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেন, যেন তারা যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট (আমার!)-কে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া বন্ধ করে। এটি সাধারণত সাবেক প্রেসিডেন্টদের প্রতি সৌজন্য হিসেবে প্রদান করা হয়।”
ট্রাম্প আরো লিখেছেন, “রিপোর্টে দেখা গেছে, বাইডেনের স্মৃতিশক্তি বেশ কম। গোপন তথ্য নিয়ে তাকে ভরসা করা যায় না।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি বাইডেনকে এক ধরনের তির্যক ব্যঙ্গাত্মক টিপ্পনি দিয়েছেন।
গত মাসে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকেই লোকচক্ষুর আড়ালে আছেন বাইডেন। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি তিনি। বিবিসি বাইডেনের ট্যালেন্ট এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে।
এছাড়া বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত আরো অনেক কর্মকর্তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র ও নিরাপত্তা সুরক্ষা বাতিল করেছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে রয়েছেন সাবেক মার্কিন সামরিক প্রধান মার্ক মিলি, যিনি ট্রাম্পের একজন উন্মুক্ত সমালোচক ছিলেন। নতুন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ মিলির ‘আচরণ’ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তার সামরিক পদমর্যাদা পুনর্মূল্যায়ন করতে বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক শীর্ষ চিকিৎসা উপদেষ্টা ড.
ট্রাম্প ২০২০ সালে বাইডেনের পক্ষে কথা বলা দুইজন সাবেক সিআইএ পরিচালকসহ ৫০ জনের বেশি সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার নিরাপত্তা ছাড়পত্রও বাতিল করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের পক্ষে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ত ল কর ছ ড়পত র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সবুজ এলাকায় পুলিশের প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার কম হয়
উন্মুক্ত স্থান সবুজ থাকার সঙ্গে পুলিশি সহিংসতার সম্পর্ক আছে। সবুজ পরিসর বেশি এমন এলাকায় পুলিশ প্রাণঘাতী গুলি কম চালায়। সবুজ ভূমির সঙ্গে পুলিশের আচরণের এই সম্পর্ক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে।
গবেষণাটি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্লেমসন বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক ও গবেষক। গবেষণার ফলাফল নিয়ে একটি প্রবন্ধ ‘এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড বিহেভিয়ার’ নামের সাময়িকীতে ছাপা হয়েছে। ওই প্রবন্ধে বলা হয়েছে, নিরাপদ পাড়াপড়শি ও এলাকা নিরাপদ হওয়ার পেছনে ভূপ্রকৃতির মান ও পরিমাণের সম্পর্ক আছে।
গবেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের ৩ হাজার ১০০ কাউন্টির (যুক্তরাষ্ট্রের সর্বনিম্ন প্রশাসনিক অঞ্চল) সবুজ পরিসর ও পুলিশের প্রাণঘাতী গুলির ঘটনার পাঁচ বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করেছেন। সময় ছিল ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল। কাউন্টির মধ্যে মেট্রোপলিটন এলাকার ৮০৫টি কাউন্টিও ছিল।
গবেষণায় সামাজিক একটি পরিপ্রেক্ষিত যুক্ত করার জন্য গবেষকেরা সামাজিক বঞ্চনার কিছু সূচক ব্যবহার করেছিলেন। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য, শিক্ষার স্তর, শুধু বাবা অথবা মা থাকা পরিবার, ভাড়া বাস, ঘন বসতি, গাড়িবিহীন পরিবার, চাকরিতে থাকা ৬৫ বছরের কম বয়সীদের হার। গবেষকেরা দাবি করেছেন, কঠোর নিয়মকানুন মেনে গবেষণাটি করা হয়েছে।
গবেষকদের মধ্যে একজনের সংশয় ছিল যে সবুজের সঙ্গে প্রাণঘাতী গুলি বেশি ব্যবহারের সম্পর্ক থাকতে পারে। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে নেতিবাচক সম্পর্কই পাওয়া যায়। অর্থাৎ সবুজ যেখানে বেশি, গুলির ব্যবহার সেখানে কম।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মেট্রোপলিটন এলাকার যেসব কাউন্টিতে সবুজ বেশি, সেখানে প্রাণঘাতী গুলির ব্যবহার ১৫ শতাংশ কম। আর পুরো যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কাউন্টিতে সবুজ বেশি, সেখানে প্রাণঘাতী গুলির ব্যবহার ৯ শতাংশ কম। আবার সবুজের পাশাপাশি বঞ্চনা বেশি এমন এলাকাগুলোতে পুলিশের গুলির ঘটনা কম। সামাজিক বঞ্চনার নানা স্তরেই এটা দেখা গেছে।
সবুজের সঙ্গে পুলিশি সহিংসতার সম্পর্ক কী
গবেষকেরা বলছেন, সবুজ এলাকা যত বেশি, পুলিশি সহিংসতা তত কম হওয়ার সম্ভাব্য চারটি কারণ থাকতে পারে: ক. কোনো এলাকা সবুজ থাকার অর্থ এলাকাটিতে আশপাশের মানুষের আনাগোনা বেশি; খ. কোনো এলাকা সবুজ থাকার অর্থ এলাকাটির নিয়মিত যত্ন নেওয়া হয়, দেখভাল করা হয়; গ. সবুজ এলাকায় স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে; ঘ. সবুজ পরিবেশে অপরাধ কম হয়।
গবেষণা প্রবন্ধে আগের গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, সবুজ পরিসর মানসিক চাপ থেকে দ্রুত সামলে উঠতে সহায়তা করে। সবুজের কারণে অপরাধ ও সহিংসতা কম হয়।
গবেষকেরা বলছেন, সবুজ এলাকায় পুলিশ কর্মকর্তারা কম মানসিক চাপে থাকেন, তাঁরা দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ পেশাদারত্ব দেখাতে চান। তাঁরা সহিংস আচরণ থেকে বিরত থাকেন। অন্যদিকে সবুজের ভেতরে বেশি সময় কাটানোর কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় হয়, এলাকায় একধরনের অনানুষ্ঠানিক নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে ওঠে এবং ঝগড়া-দ্বন্দ্ব অহিংস পন্থায় মিটমাট হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। গবেষকেরা এ-ও বলছেন, বিষয়টি আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য আরও গবেষণা হওয়া দরকার। কারণ, অনেক সবুজ এলাকায় দুষ্কৃতকারীদের দল বা গ্যাং সক্রিয় থাকে, সবুজ ঝোপঝাড়ের আড়ালে কিছু মানুষ লুকিয়ে অবৈধ কাজ করে। এসব বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নেওয়ার জন্য সবুজের সঙ্গে সহিংসতার সম্পর্ক নিয়ে আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।