কয়রায় জমি অধিগ্রহণ ছাড়াই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, মুখোমুখি অবস্থানে ঠিকাদার ও এলাকাবাসী
Published: 11th, February 2025 GMT
খুলনার কয়রা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ না করে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমির ওপর বাঁধের কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ঠিকাদার। এমন পরিস্থিতিতে এলাকাবাসী ও ঠিকাদারের লোকজন মুখোমুখি অবস্থানে।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার আগেই তাঁদের জোর করে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। টাকা পাবেন কি না, তা নিয়েও আছে শঙ্কা। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছে, জমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এলাকার লোকজন ক্ষতিপূরণ পাবেন।
এ বিষয়ে গতকাল সোমবার সকালে কয়রার উত্তর বেদকাশী এলাকার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য গণেশ মণ্ডল বলেন, ‘আমার এলাকার মতিয়ার সরদার ও রবীন্দ্রনাথ বাইনের বসতবাড়ির ওপর বাঁধের মাটি ফেলার প্রতিবাদ করায় ঠিকাদারের লোকজনের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে মারামারি হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়ে থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছেন। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিবেশ। বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজও আপাতত বন্ধ।’
পাউবো সূত্রে জানা যায়, ১ হাজার ১৭২ কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য যৌথভাবে দায়িত্বে আছে খুলনার পাউবো ও সাতক্ষীরা-২ বিভাগ। এ দুই বিভাগ থেকে দরপত্রের মাধ্যমে ২৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করার অনুমতি পায়। তারা কয়রার কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীতীরবর্তী প্রায় ৩২ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণকাজ করছে। তবে জমি অধিগ্রহণে ধীরগতি ও জটিলতা তৈরি হওয়ায় ঠিকাদার ও এলাকাবাসীর মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।
উত্তর বেদকাশী এলাকার মতিয়ার সরদারের মেয়ে মিনারা খাতুন বলেন, ‘বাঁধ নির্মাণের দোহাই দিয়ে নদীর চরের গাছ কাটছিলেন ঠিকাদারের লোকজন। আমি মুঠোফোনে গাছ কাটার ভিডিও ধারণ করলে তারা আমাকে বাজে ভাষায় গালাগালি করে। এর কয়েক দিন পরে খননযন্ত্র দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের বসতভিটার ওপরে মাটি ফেললে আমার স্বামী প্রতিবাদ করায় তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। এ ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ করেছি।’
১ হাজার ১৭২ কোটি ৩১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য যৌথভাবে দায়িত্বে আছে খুলনার পাউবো ও সাতক্ষীরা-২ বিভাগ। এ দুই বিভাগ থেকে দরপত্রের মাধ্যমে ২৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করার অনুমতি পায়। তারা কয়রার কপোতাক্ষ ও শাকবাড়িয়া নদীতীরবর্তী প্রায় ৩২ কিলোমিটার স্থায়ী বাঁধ নির্মাণকাজ করছে।কোনো নোটিশ ছাড়াই তাঁদের জমির ওপর দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কয়রার উত্তর বেদকাশী এলাকার বাসিন্দা গণেশ, ইদ্রিস, সোমেন, সাবিত্রাসহ কয়েকজন। তাঁদের ভাষ্য, অনেকের অন্য কোথাও জায়গাজমি নেই। তাঁরা কোথায় যাবেন, সে ব্যবস্থা করা হয়নি। তাঁদের কারও ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। কোনো কিছু জানতে চাইলেই প্রতিনিয়ত ঠিকাদারের লোকজন খারাপ আচরণ করেছেন।
সম্প্রতি সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় দেখা যায়, কিছু স্থানে মাটির কাজ করে ফেলে রাখা হয়েছে। কিছু স্থানে বালুর বস্তা ফেলার অপেক্ষায় আছে। আবার কয়েকটি স্থানে সিসি ব্লক বানানোর কাজ চলছে। উত্তর বেদকাশী গ্রামের এক পাশ দিয়ে বয়ে গেছে শাকবাড়িয়া নদী, আরেক পাশে কপোতাক্ষ নদ। দুই নদ-নদীর তীরে মাটি ফেলে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। বেড়িবাঁধের পাশে বসবাসকারীদের অনেকেই তাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙে নিচ্ছেন। তবে তাঁরা জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে কোনো তথ্য জানেন না।
উত্তর বেদকাশী এলাকায় বাঁধ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আমিন অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপক রাসেল মোল্লা বলেন, তাঁরা নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছেন। তবে স্থানীয় কিছু মানুষ তাঁদের ওপর চড়াও হয়ে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তাঁদের লোকজনের সঙ্গে ঝগড়া বাধে। এতে তাঁদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ঠ ক দ র র ল কজন এল ক ব স ক জ করছ প রকল প কর ছ ন এল ক য় ক জ কর এল ক র কয়র র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।
উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।
ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।
এএএম//