৬ গোল খাওয়া ব্রাজিল এখন আর্জেন্টিনার ওপরে
Published: 11th, February 2025 GMT
দক্ষিণ আমেরিকান অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের শুরুতে ব্রাজিলকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল আর্জেন্টিনা। তবে টুর্নামেন্ট যত গড়িয়েছে, চিত্র পাল্টে গেছে। ছন্দ হারিয়েছে আর্জেন্টিনা, আর ঘুরে দাঁড়িয়ে এগিয়ে গেছে ব্রাজিল। সর্বশেষ ম্যাচে প্যারাগুয়েকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছে সেলেসাও যুবারা।
অন্যদিকে, দিনের আরেক ম্যাচে শেষ মুহূর্তের গোলে কলম্বিয়াকে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা। তবে জয় পেলেও ব্রাজিলকে টপকাতে পারেনি দলটি। ফলে তিন ম্যাচ শেষে সমান ৯ পয়েন্ট থাকলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে ব্রাজিল।
এই প্রতিযোগিতার শুরুতে শিরোপার অন্যতম দাবিদার ছিল কলম্বিয়া, তবে চূড়ান্ত পর্বে এসে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার কাছে হেরে শিরোপার লড়াই থেকে অনেকটাই ছিটকে গেছে তারা। এখন শিরোপার মূল লড়াই ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মধ্যেই সীমিত হয়ে পড়েছে। শুক্রবার চূড়ান্ত পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, যেখানে নির্ধারিত হতে পারে শিরোপার ভাগ্য।
প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে বল দখল ও আক্রমণে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও সুযোগ কাজে লাগানোর দক্ষতায় এগিয়ে ছিল ব্রাজিল। ম্যাচের ১৫ মিনিটে গুস্তাভো প্রাদোর গোলে এগিয়ে যায় তারা, দুই মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রায়ান। ২৫ মিনিটে এক গোল শোধ করে প্যারাগুয়ে, তবে ৭৮ মিনিটে আলিসন সান্তানার গোল নিশ্চিত করে ব্রাজিলের জয়।
অন্যদিকে, আর্জেন্টিনার বিপক্ষে দারুণ লড়াই করেছে কলম্বিয়া, পেয়েছিল কয়েকটি দারুণ সুযোগও। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় তারা। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে ইয়ান সুবিয়াব্রের একমাত্র গোলেই জয় নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা, যা শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর জ ন ট ন আর জ ন ট ন র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।