কেবল প্রাণের বিনিময়ে সব বৈষম্য দূর হবে না: আলী রিয়াজ
Published: 11th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান প্রফেসর ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, ‘‘বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ ধরে কাঠামোগতভাবে যে বৈষম্য তৈরি হয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাকে স্থায়ী করা হয়েছে, সেগুলো কেবল প্রাণের বিনিময়ে অবিলম্বে দূর করতে পারব, এ রকম ভাবার সুযোগ নেই।’’
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ বর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ উপলক্ষে আয়োজিত ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রফেসর ড.
এ সময় প্রফেসর ড. আলী রিয়াজ বলেন, ‘‘সবাই দায়িত্ববোধ আর জ্ঞান দিয়ে, আচরণ দিয়ে একটু একটু করে সেই বৈষম্য কমানো সম্ভব। অর্জনের প্রথম কাজ হলো পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতাবোধ তৈরি করা। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও বাংলাদেশের মানুষ নিজস্ব কর্মউদ্যোগে অনেককিছুই অর্জন করেছে। তরুণরাই হচ্ছে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তাই এই তরুণদের প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা, ভিন্নমতদের প্রতি সহমর্মিতাবোধ তৈরি, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের প্রাপ্য সুবিধা নিশ্চিত করা, সকলকে সমতার জায়গায় নেয়ার চেষ্টা থাকলে সাফল্য অর্জিত হবে।’’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রফেসর ড. আলী রিয়াজ বলেন, ‘‘গত ৫৪ বছর ধরে মানুষ নিজ উদ্যোগে অনেক কিছু অর্জন করেছে। ফলে সমাজ এগিয়েছে। ২০২৪ বলে দিচ্ছে আপনারা পারেন। এই কমিটমেন্ট ধরে রাখতে হবে। যে বীর শহীদরা নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন; তাদের মেধা, পরিশ্রম, আন্তরিকতা, সহযোগিতা ও আন্দোলনের ফসল নতুন বাংলাদেশ। আমি অনুভব করি, এটার প্রয়োজন ছিল। তাদের অবদান আপনি যদি না স্বীকার করেন, তাহলে সেটা ব্যক্তির উদ্যাপন হবে। কোথাও অন্যায় হলে কণ্ঠস্বর স্পষ্ট হওয়া উচিত। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হওয়া দরকার। ছোট অন্যায্য একদিন বড় হয়ে যায়। অন্যায্য সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকুন। সৃষ্টিশীল মানুষ সম্পদশালী হয়।’’
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে নিহত শহীদদের জন্য দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে নিহত শহীদ ও আহতদের জন্য দোয়া করা হয়।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ড. এস এম আব্দুল আওয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আনোয়ারুল আজিম আকন্দ, কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নকীব মুহাম্মদ নাসরুল্লাহ, রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এস এম আব্দুর রাজ্জাক।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মো. নজরুল ইসলাম। এছাড়া আরও বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শামীম আহসান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা দপ্তরের পরিচালক, হল প্রভোস্ট ও নবাগত শিক্ষার্থীরা। সভার শুরুতে অতিথিদের ক্রেস্ট উপহার দেন রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক হুমায়ন কবির ও সায়মুন্নাহার রিতু। বিকালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা/শাহীন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য র য় জ বল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন
রাজশাহীতে জুলাই শহীদদের স্মরণে মিনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে নগরের বিনোদপুর এলাকা থেকে এ দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) রাজশাহী মহানগর শাখা এ ম্যারাথনের আয়োজন করে।
ম্যারাথনে অংশ নিতে প্রতিযোগীরা আজ ভোর সাড়ে পাঁচটার পর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে জমায়েত হতে থাকেন। সকাল ছয়টার পর শুরু হয় পাঁচ কিলোমিটারের ম্যারাথন প্রতিযোগিতা।
অংশগ্রহণকারীরা বিনোদপুর থেকে শুরু হয়ে নগরের তালাইমারী মোড় হয়ে আবার বিনোদপুর হয়ে চৌদ্দপায় ফায়ার সার্ভিস মোড় হয়ে আবার বিনোদপুরে ফিরে আসেন।পরে সেখানে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। প্রথম পুরস্কার ১০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৮ হাজার টাকা, তৃতীয় পুরস্কার হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী তিন নারীসহ আরও ১০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।
ম্যারাথন উপলক্ষে আগে থেকেই মেডিকেল টিমসহ একটি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। এ ছাড়া সবার জন্য টি-শার্ট, গ্লুকোজ পানিসহ বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। ম্যারাথনে অংশ নেওয়াদের বেশির ভাগই ছিল তরুণ। তাঁদের মধ্যে বেশি বয়সী নারীরাও অংশ নেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া ৫৮ বছর বয়সী পিয়ারুল ইসলাম বলেন, এ উদ্যোগ খুবই ভালো হয়েছে। অসুস্থমুক্ত জীবন গড়তে হলে দৌড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। শারীরিক বিভিন্ন অ্যাকটিভিটিসের মধ্যে থাকলে সুস্থ জীবন গড়া যায়। এ বয়সে তাঁর কোনো ওষুধ লাগে না। তাঁরও অনেক সিনিয়র আছেন, কারও বয়স ৭৫, তাঁদেরও ওষুধ লাগে না। তাই এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। সবাইকে উদ্ধুব্ধ করতে হবে। যাতে নিজেদের শরীরকে সব সময় উপযুক্ত রাখে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, অনেক দিন পর তিনি দৌড়াবেন। সাধারণত দৌড়ানো হয় না। আজকের পর থেকে তিনি প্রতিদিন সকালে উঠে দৌড়াবেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নাঈম হাসান বলেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুধু সরকারের পতন নয়। এর মাধ্যমে এ দেশের মানুষ একটি নতুন নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। সেই নতুন নিশ্বাস নিয়ে ম্যারাথনে তিনি অংশ নিয়েছেন।
ম্যারাথন প্রতিযোগিতায় ১৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকায়