চুম্বন দৃশ্যের শুটিংয়ের পর কেন কেঁদেছিলেন মাধুরী?
Published: 12th, February 2025 GMT
বলিউডের ‘ধকধক গার্ল’ মাধুরী দীক্ষিতে মুগ্ধ হননি এমন দর্শক খুঁজে পাওয়াই মুশকিল! তার রূপ, অভিনয় আর ঝড় তোলা নাচ ভোলার মতো নয়। অভিনয় ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে বিনোদ খান্নার সঙ্গে চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করে দারুণ আলোচিত হয়েছিলেন মাধুরী। এরপর আর কোনো অন্তরঙ্গ দৃশ্যে দেখা যায়নি তাকে। কিন্তু এই চুম্বন দৃশ্যের শুটিং শেষ হওয়ার পর ভীষণ কেঁদেছিলেন মাধুরী।
বলিউড লাইফ ডটকম এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘দয়াবান’ সিনেমায় বিনোদ খান্নার স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন মাধুরী দীক্ষিত। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় এটি। পর্দায় এ জুটির রসায়ন দর্শক হৃদয়ে ঝড় তুলেছিল। সিনেমাটিতে তাদের বিখ্যাত দৃশ্য রয়েছে ‘আজ ফির তুম পে প্যায়ার আয়া হ্যায়’ গানে। এই গানে মাধুরীকে বিনোদের চুমু খাওয়ার দৃশ্যটি রয়েছে।
চুমুর দৃশ্যের শুটিং শুরু হয়। পরিচালক ‘কাট’ বলার পরও বিনোদ মাধুরীর ঠোঁটে অনবরত চুমু খেতে থাকেন। এক পর্যায়ে মাধুরীর ঠোঁট কেটে রক্ত ঝরতে থাকে। এরপর অঝোরে কাঁদতে থাকেন মাধুরী। পরে পরিচালক ফিরোজ খান ও বিনোদ খান্না মাধুরীর কাছে ক্ষমা চান। শুধু তাই নয়, দৃশ্যটির জন্য মাধুরীকে অনেক টাকা বাড়িয়েও দেন নির্মাতারা।
আরো পড়ুন:
সালমানকে নিয়ে অ্যাটলির নয়া মিশন, বাজেট ৭০০ কোটি টাকা!
বাবা তুমি কি মারা যাচ্ছো, আহত সাইফকে প্রশ্ন করেছিল পুত্র তৈমুর
চুম্বন দৃশ্যে যখন অভিনয় করেন তখন মাধুরীর বয়স ২০ বছর আর বিনোদ খান্নার ৪২। এ নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে মাধুরী দীক্ষিত বলেছিলেন, “আমি যখন অতীতে ফিরে তাকাই, তখন মনে হয়— আমার বলা উচিত ছিল, ‘না, আমি এটা করতে চাই না।’ কিন্তু তারপর হয়তো এটা করতে আমার একটু ভয় লেগেছিল। এটা এমন ছিল যে, আমি একজন অভিনেত্রী এবং পরিচালক দৃশ্যটি বিশেষ উপায়ে কল্পনা করেছেন। সুতরাং আমি এটি ‘না’ করলে গল্প ব্যাহত হবে।”
চুম্বন দৃশ্যে অভিনয়ের কারণ ব্যাখ্যা করে মাধুরী দীক্ষিত বলেছিলেন, “আমি কোনো ফিল্মি পরিবার থেকে আসিনি। সুতরাং আমি এই ইন্ডাস্ট্রি এবং পরিচালনার নিয়ম সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। তখন আমি জানতাম না যে, চুম্বন দৃশ্য করতে ‘না’ বলা যেতে পারে। তাই আমি এটি করেছিলাম। কিন্তু পরে যখন সিনেমাটি দেখি, তখন মনে হয়েছে আমি কেন এটি করেছি? চুম্বন দৃশ্যটি সিনেমায় বাড়তি কিছু যোগ করেনি। এরপর আর কোনো চুম্বন দৃশ্য না করার সিদ্ধান্ত নিই এবং কখনো কোনো চুম্বন দৃশ্যে অভিনয় করিওনি।”
মণি রত্নমের গল্প নিয়ে ‘দয়াবান’ সিনেমা নির্মাণ করেন ফিরোজ খান। অ্যাকশন-ক্রাইম ঘরানার সিনেমাটিতে আরো অভিনয় করেন— অমরিশ পুরি, আদিত্য পাঞ্চোলি, অমলা আক্কেনিনি, অনুরাধা প্যাটেল, অরুণা ইরানি প্রমুখ। সিনেমাটির আইটেম গানে পারফর্ম করেছিলেন ‘বাহুবলি’ সিনেমার শিবগামী চরিত্র রূপায়নকারী রম্যা কৃষ্ণান। ২ কোটি ২৫ লাখ রুপি ব্যয়ে নির্মিত সিনেমাটি আয় করেছিল ৭ কোটি ৪০ লাখ রুপি।
তথ্যসূত্র: ডিএনএ, বলিউড লাইফ, ইন্ডিয়া ডটকম
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ম বন দ শ য কর ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে ব্যবসায়ী জাকিরকে হত্যা করা হয়
রাজধানীর সবুজবাগের প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেনের সঙ্গে থাকা আড়াই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তাঁকে ছয় টুকরা করে লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে কাছের একটি ঝোপের ভেতরে পুঁতে রাখা হয়। এর আগে আজহারুল ইসলাম (গ্রেপ্তার) মুঠোফোনে সবুজবাগের ভাইগদিয়ায় তাঁর ভাড়া বাসায় জাকিরকে (৫৫) ডেকে নেন।
গ্রেপ্তার আজহারুল ইসলাম (৩৯) আজ শুক্রবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। আদালত তাঁর জবানবন্দি নিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এ ছাড়া এ হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী (৪৪), মো. রাজীব (২৬) ও স্বপনকে (২৫) পাঁচ দিন করে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গ্রেপ্তার শুক্কুর আলী পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং বাকিরা রংমিস্ত্রি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সামছুল আমিন আজ প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় দুপুরে তাঁদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে আজহারুল আদালত জবানবন্দি দেন। অপর তিনজন জবানবন্দি দিতে রাজি হননি। পরে তাঁদের সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বলেন, জাকির হোসেনের সঙ্গে তাঁদের চারজনের (আজহারুল, শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপন) বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরা একসঙ্গে আড্ডা দিতেন। মাঝেমধ্যে জাকিরের সঙ্গে তাঁর ভাইগদিয়ার ভাড়া বাসায় তাঁরা একসঙ্গে মদ্যপান করতেন। ৪ জুন রাতে জাকির নন্দীপাড়ায় শেখের বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফিরছিলেন। তখন আজহারুল মুঠোফোনে জাকিরকে তাঁর বাসায় ডেকে নেন। ওই বাসায় আজহার একা থাকতেন। আগেই জাকির তাঁদের জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে কোরবানির গরু কেনার আড়াই লাখ টাকা আছে এবং ডেমরার আমুলিয়া পশুরহাট থেকে কোরবানির জন্য গরু কিনবেন। জাকির তাঁর বাসায় পৌঁছানোর পর ওই টাকার ওপর তাঁদের সবার লোভ জাগে। তাঁরা টাকা ছিনিয়ে নিতে গেলে জাকির বাধা দেন। তখন ইস্পাতের পাইপ দিয়ে জাকিরের মাথায় সজোরে আঘাত করেন আজহারুল। এতে জাকির অচেতন হয়ে যান। এ সময় তাঁর কাছ থেকে এক হাজার টাকার দুটি বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে সেই টাকা শুক্কুর আলীর কাছে জমা রাখেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, আজহারুল আদালতকে জানান, জাকিরকে বাঁচিয়ে রাখা হলে তাঁরা সবাই ফেঁসে যাবেন—এমন আশঙ্কায় জাকিরকে হত্যা করে লাশ গুম করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাকিরের শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। এরপর শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন তাঁর শরীর টুকরা টুকরা করেন। পরে লাশের ছয়টি টুকরা রঙের দুটি পাত্রে ভরে একটি অটোরিকশায় করে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় নিয়ে যান। শুক্কুর, রাজীব ও স্বপন অন্য পথ দিয়ে দক্ষিণ ভাইগদিয়ায় আসেন। তখন তাঁরা সবাই মিলে বালতিভর্তি লাশের টুকরাগুলো পাশের ঝোপে নিয়ে যান। এরপর সেখানে খুঁড়ে লাশের টুকরাগুলো পুঁতে রাখেন।
আজহারুল আদালতকে বলেন, জাকিরের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া টাকা ভাগাভাগি করার আগেই তাঁরা পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।
পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, আজহারুলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাহেরচরে। বাকি তিনজন ঢাকার সবুজবাগের ভাইগদিয়ার স্থায়ী বাসিন্দা।
প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেন সপরিবার সবুজবাগ থানার ভাইগদিয়া এলাকায় থাকতেন। ৪ জুন জাকির হোসেন নিখোঁজ হন। এরপর স্বজনেরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান পাননি। পরদিন জাকির নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাঁর স্ত্রী রেখা বেগম সবুজবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এর মধ্যে জাকিরের খোঁজ না পাওয়ায় তিনি ১০ জুন আজহার আলীসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সবুজবাগ থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা সামছুল আমিন বলেন, এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এলাকার ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত আজহারুলকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আজহারের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় জড়িত অভিযোগে গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রাতে জাকির হোসেনকে ভাইগদিয়ায় দাফন করা হয়।
সবুজবাগ থানার ওসি ইয়াছিন আলী প্রথম আলোকে বলেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে জাকিরকে হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করলেও তদন্তে এখন পর্যন্ত এর সত্যতা পাওয়া যায়নি। জাকির হত্যায় আরও একজন জড়িত। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।