আধুনিক জীবনে নেতিবাচক ঘটনার ভিড়ে অনেকেই হাসতে ভুলে গেছেন। এসব মানুষের কথা চিন্তা করে ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবে চালু হয়েছে একটি হাসির জাদুঘর। এ জাদুঘরের নাম ‘হাহা হাউস’। এটি হলো বিশ্বের প্রথম জাদুঘর, যা সম্পূর্ণরূপে দর্শনার্থীদের হাসানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে।
এ জাদুঘরের অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে হাস্যরস সৃষ্টি করা। এটি তৈরিতে শিল্প এবং প্রযুক্তির সমন্বয় করা হয়েছে। দেশি-বিদেশি নকশাবিদ, স্থপতি, শিল্পী এবং বিশেষজ্ঞদের একটি দল এ জাদুঘর তৈরিতে কাজ করেছেন। হাস্যরসের দিক থেকে ব্যক্তির পছন্দ যেমনই হোক না কেন, এ জাদুঘরের লক্ষ্য হলো সব বয়সের দর্শনার্থীদের হাসাতে সাহায্য করা।
হাহা হাউসে খেলাধুলা ও নানা অংশগ্রহণযোগ্য প্রদর্শনী রাখা হয়েছে, যাতে দর্শনার্থীরা অংশগ্রহণ ও উপভোগ করতে পারেন। তবে জাদুঘরে প্রবেশের আগে তাদের একটি স্ক্যানারের মধ্য দিয়ে যেতে হয়।
এ সময় সাদা ধোঁয়ার মধ্য দিয়ে গেলে তাঁদের উদ্বেগ দূর হতে শুরু করে। এরপর তাঁদের বড় আকারের একটি ওয়াশিং মেশিনের মধ্যে ঢোকানো হয়। একে বলা হচ্ছে ‘সেন্ট্রিফিউজ অব লাইফ’। এখান থেকে দর্শনার্থীকে সাদা বলভর্তি একটি পুকুরে ফেলা হয়। এখান থেকেই মূলত দর্শনার্থীর বিভিন্ন আনন্দদায়ক স্থানে যাত্রা শুরু হয়।
জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা আন্দ্রেয়া গোলুবিক বলেন, করোনা মহামারির সময় যখন মানুষজন উদ্বেগ, একাকিত্বে ভুগছিলেন, তখন তাঁর মাথায় এ জাদুঘর করার পরিকল্পনা আসে। ৪৩ বছর বয়সী উদ্যোক্তা আন্দ্রেয়া বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি যে আমার একটা লক্ষ্য আছে। আর তা হচ্ছে হাসি দিয়ে মানুষকে সুস্থ করা। ধারণাটি সরাসরি হৃদয় থেকে এসেছিল।’
আন্দ্রেয়া বলেন, তাঁর সাত বছর বয়সের সময়কার চিন্তামুক্ত জীবন এ জাদুঘর তৈরিতে তাঁকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রথম গ্রেডে পড়ার সময়কার আমার একটি ছবি ছিল, যাতে বড় দাঁত বের করে হেসে লুটোপুটি খেতাম। আমি শিশু বেলায় সব সময় মজা করতাম।’
জাদুঘরে ঢুকে দর্শনার্থীকে একটি বোতাম চাপতে হয়, যাতে জীবনের নেতিবাচকতা থেকে তিনি মুক্তি পান। এরপর জাদুঘরে ঢুকলে আটটি আলাদা অংশগ্রহণমূলক ক্ষেত্র পাওয়া যাবে। সেখানে রাবারের মুরগি, বেতাল সুরের কারাওকে কিংবা সুমো কুস্তির মতো ব্যবস্থাও রয়েছে।
থিয়েটার, চলচ্চিত্র বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক কাল পর্যন্ত হাস্যরসের কিছু গুরুতর ইতিহাসও জানার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া এখানে নানা উপায়ে বিভিন্ন ধরনের হাস্যরসের ধরন জানার সুযোগও রয়েছে।
জাদুঘরটি কিছু পছন্দের ওয়ান-লাইনারের সাহায্যে শব্দের খেলা, চড় মারা, টয়লেট এবং অন্ধকার হাস্যরস থেকে শুরু করে ব্যঙ্গাত্মক হাস্যরসের ধরনগুলোও ব্যাখ্যা করে।
আন্দ্রেয়া বলেন, শিশু থেকে বয়স্ক সব বয়সী লোকজনকেই আকর্ষণ করছে হাহা হাউস। বয়স্করা এখানে এসে তাঁদের ছেলেবেলা আবার খুঁজে দেখার সুযোগ পান। যাঁরা নিজেদের ভেতরের শিশুকে এখনো অনুভব করেন, তাঁরা এখান থেকে রিচার্জ হতে পারেন।
জাদুঘরে ঘুরতে আসা অবসরজীবন উপভোগ করা ব্রুনো ড্যাডিক বলেন, জাদুঘর ভ্রমণ করে তিনি অত্যন্ত খুশি। এর আগে জীবনে এত হাস্যরস আর উপভোগ করেননি। তিনি বলেন, হাস্যরস আত্মার ওষুধ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ দ ঘর র এ জ দ ঘর র একট
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকতে না পেরে বিদেশ চলে যান পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। যতটুকুই করি, আমার মেয়ে ও হাজব্যান্ড ওরাই বলে। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।