নিপীড়নমূলক শাসন এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র ও তরুণদের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানের পর ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার ইতালির রাজধানী রোমে আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (আইএফএডি) গভর্নিং কাউন্সিলের ৪৮তম অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এ আহ্বান জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, আইএফএডি ৪৮তম অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের একটি রেকর্ড করা ভিডিও সম্প্রচার করা হয়।

বক্তব্যে ড. ইউনূস বৈশ্বিক দারিদ্র্য ও বৈষম্য কমাতে অবদানের জন্য আইএফএডিকে অভিনন্দন জানান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সঙ্গে আইএফএডি চার দশকের সহযোগিতা বিশেষ করে কৃষি ও জলবায়ু খাতে সমর্থিত প্রকল্পগুলির প্রশংসা করেন যা বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়ন করে। 

তিনি তার ‘সামাজিক ব্যবসা’-এর ধারণাকে গ্রামীণ উন্নয়নের একটি নতুন মাত্রা হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা একটি সৎ চক্র তৈরি করে যেখানে ব্যবসা সম্প্রদায়ের চাহিদা পূরণ করে উন্নতি লাভ করে, যার ফলে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নকে উৎসাহিত করেছে। ড. ইউনূস আইএফএডির প্রচেষ্টা এবং ‘৩ জিরো’ বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে একটি সমান্তরাল আঁকেন- অসম্পদ ঘনত্বের মাধ্যমে শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব এবং শূন্য নেট কার্বন নির্গমনের আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা আইএফএডি গভর্নিং কাউন্সিলকে জলবায়ু-স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো, টেকসই কৃষি অনুশীলন এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সমাধানে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান, যাতে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নতি করতে পারে। তিনি আইএফএডির সদস্য রাষ্ট্রগুলো সবচেয়ে দুর্বলদের জন্য সুযোগগুলো কাজে লাগাতে এবং একটি উন্নত বিশ্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানান, যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আইএফএডির নেতাদের তরুণ ও শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইএফএডির গভর্নিং বোর্ডের গভর্নর হিসেবে কাউন্সিল সভায় উপস্থিত ছিলেন এবং এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউন স গভর ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাড়ব্যথার কারণগুলো কী কী, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা জেনে রাখুন

অনেক কারণে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—

১. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

২. সারভাইক্যাল স্পন্ডেলোসিস

৩. সারভাইক্যাল রিবস

৪. সারভাইক্যাল ক্যানেল স্টেনোসিস বা স্পাইনাল ক্যানাল সরু হওয়া

৫. সারভাইক্যাল ডিস্ক প্রলেপস বা হারনিয়েশন যেখানে হারনিয়াটেড ডিস্ক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করে

৬. মাংসপেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, ডিস্ক (দুই কশেরুকার মাঝখানে থাকে) ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি

৭. অস্বাভাবিক পজিশনে নিদ্রা

৮. উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্‌রোগ

৯. হাড় ও তরুণাস্থির প্রদাহ এবং ক্ষয়

১০. অস্টিওপরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় ও ভঙ্গুরতা রোগ

১১. হাড় নরম ও বাঁকা হওয়া

১২. রিউমাটয়েড-আর্থ্রাইটিস ও সেরো নেগেটিভ আর্থ্রাইটিস

১৩. সারভাইক্যাল অস্টিও-আর্থ্রাইটিস

১৪. ফাইব্রোমায়ালজিয়া

১৫. সামনে ঝুঁকে বা পাশে কাত হয়ে ভারী কিছু তুলতে চেষ্টা করা

১৬. হাড়ের ইনফেকশন

১৭. ডিস্কাইটিস (ডিস্কের প্রদাহ)

১৮. পেশাগত কারণে দীর্ঘক্ষণ ঘাড় নিচু বা উঁচু করে রাখলে ইত্যাদি।

উপসর্গ

ঘাড়ব্যথা কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুল পর্যন্ত ছড়াতে পারে।

কাঁধ, বাহু, হাত ও আঙুলে অস্বাভাবিক অনুভূতি বা অবশ ভাব।

বাহু, হাত ও আঙুল দুর্বল হতে পারে।

সব সময় ঘাড় ধরে বা জমে আছে মনে হয়।

ঘাড়ের মুভমেন্ট করলে, ঘাড় নিচু করে ভারী কিছু তোলার পর তীব্র ব্যথা।

হাঁচি, কাশি দিলে বা সামনে ঝুঁকলে ব্যথা বেড়ে যায়।

ব্যথা মাথার পেছন থেকে শুরু হয়ে মাথার সামনে আসতে পারে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

ঘাড়ব্যথার কারণ নির্ণয় করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরি পরীক্ষা হতে পারে—রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ঘাড়ের এক্স-রে, এমআরআই বা সিটি স্ক্যান।

চিকিৎসা

চিকিৎসা এর কারণগুলোর ওপর নির্ভর করে।

কনজারভেটিভ চিকিৎসা: ১. ব্যথা বা প্রদাহনাশক ওষুধ ২.ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। বিভিন্ন ধরনের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যেমন ম্যানুয়াল বা ম্যানুপুলেশন থেরাপি, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ ব্যবহৃত হয়। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রোমেডিকেল ইকুইপমেন্ট যেমন ইন্টারফ্যারেনশিয়াল থেরাপি, অতি লোহিত রশ্মি, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথারমি, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ও ইন্টারমিটেন্ট ট্র্যাকশন ইত্যাদির মাধ্যমে চিকিৎসা করা যায়।

সার্জিক্যাল চিকিৎসা: মেডিকেল চিকিৎসায় ভালো না হলে, ব্যথা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকলে, স্নায়ু সমস্যা দেখা দিলে, বাহু, হাত ও আঙুলে দুর্বলতা এবং অবশ ভাব দেখা দিলে এবং প্রস্রাব বা পায়খানার নিয়ন্ত্রণ না থাকলে দ্রুত সার্জিক্যাল চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

ঘাড়ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়

১. সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না।

২. মাথার ওপর কোনো ওজন নেবেন না।

৩. প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিতে হবে।

৪. শক্ত বিছানায় ঘুমাবেন।

৫. শোবার সময় একটা মধ্যম সাইজের বালিশ ব্যবহার করবেন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও অর্ধেকটুকু ঘাড়ের নিচে দেবেন।

৬. তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ঘাড় নিচু বা উঁচু করা, মোচড়ানো (টুইসটিং) বন্ধ করা।

৭. সেলুনে কখনোই ঘাড় মটকাবেন না।

৯. কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন না বা টেলিভিশন দেখবেন না।

১০. কম্পিউটারে কাজ করার সময় মনিটর চোখের লেভেলে রাখবেন।

১১. গরম প্যাড, গরম পানির বোতল দিয়ে গরম সেঁক দেবেন।

১২. ঘাড়ের পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে।

এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ঢাকা

আরও পড়ুনকাঁধের ব্যথা বা কাঁধ জমে যাওয়ার কারণ ও করণীয়১৭ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ