বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বিভ্রান্তিমূলক কথা বলে কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা এই সরকারকে বলতে চাই, আপনারা ডিসেম্বরের ঘোষণা দিয়েছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিন। আমরা সব সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত ইনশা আল্লাহ।’

আজ শুক্রবার দুপুরে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মির্জা আব্বাস এ কথাগুলো বলেন।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন, কখনো বলেন যাবেন না, কখনো বলেন যাবেন, কখনো বলেন এটা হলে যাব, কখনো বলেন ওটা হলে যাব। আরে ভাই আপনাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ২০০৮ সালে বিএনপি এবং আমাদের জোট নির্বাচনে গিয়েছিল, ফলে বাংলাদেশের অনেক নামীদামি, অনেক বিখ্যাত-প্রখ্যাত মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে ফাঁসির কাষ্ঠে। ওই রকম ভুল আর করবেন না দয়া করে। একটি ভুল লাখ লাখ মানুষের জীবন কেড়ে নিতে পারে। সুতরাং নির্বাচন নিয়ে কোনো টালবাহানা করবেন না।’ বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এটা আমি সরকারকে বলছি না, আমি বলছি এই সরকারকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্নভাবে নির্বাচন নিয়ে কথা বলছেন। এই সরকারকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দিচ্ছেন।’

সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন করে মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের কিংবা সুযোগসন্ধানী কিছু লোক এ সময়ে দলের নতুন করে সদস্য হওয়া চেষ্টা করবেন। এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানান তিনি।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সরকারের পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু সিন্ডিকেটের কোনো পরিবর্তন হয় নাই এবং এরা এই সরকারকে একটি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে।’

অপারেশন ডেভিল হান্ট নিয়েও কথা বলেন মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে অভিযান শুরু হয়েছে ভালো। কিন্তু হাতের সামনে যে ডেভিলরা রয়ে গেছে, তাদের ধরছেন না কেন?’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনুর সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম আজাদ, শিল্পবিষয়ক সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ