পবিত্র শবে ববরাত উপলক্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ইতোমধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক করে গণবিজ্ঞপ্তিও প্রচার করা হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ, র‍্যাব, সেনাবাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়, এলাকা ও পাড়া-মহল্লায় টহল অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শেখ মো.

সাজ্জাত আলী জানান, শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত উদযাপিত হবে। রাতের পবিত্রতা রক্ষা ও পবিত্র শবে বরাত শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৮ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে ডিএমপি কমিশনা ১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে  ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় সব ধরনের আতশবাজি, পটকা ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য কেনাবেচা, পরিবহন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রতিবারের মতো এবারও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৫০টি থানা এলাকার প্রধান সড়ক থেকে পাড়া মহল্লার অলিগলি পর্যন্ত সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা নিরাপত্তা নিশ্চিন্তে কাজ করছে। একই সঙ্গে কেউ যেন আতশবাজি ফুটিয়ে পবিত্র এই রজনীর শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করতে না পারে, সেজন্য সরকারের সবগুলো সংস্থা সমন্বয় করে কাজ করছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্পর্শকাতর জায়গাগুলোতে পোশাক পরিহিত পুলিশের সঙ্গে গোয়েন্দারা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশে সেনাশাসন আসার কোনো প্রেক্ষিত নেই: মাহফুজ

ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ‘কর্নেল অব দ্য রেজিমেন্ট’ হলেন সেনাপ্রধান

পুলিশ জানায়, এই রাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশিসংখ্যক পুলিশ, র‌্যাবের টহল বাড়ানো হয়েছে। ডিবি, এসবি, এনএসআইয়ের সদস্যরাও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরাও এই রাতে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।  

এদিকে র‌্যাব থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানী ঢাকাতে র‌্যাবের প্রতিটি ব্যাটালিয়ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। নিয়মিত টহল বাড়ানো হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে বোম ডিসপোজার ইউনিট।

ঢাকা/এমআর/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম ন শ চ ত করত আতশব জ ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের
  • চট্টগ্রামে সাংবাদিক পরিচয়ে হোটেল কক্ষে তল্লাশি, সমালোচনা 
  • ভারতে কোনো বাংলাদেশি থাকলে উপযুক্ত চ্যানেলে পাঠাতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচনের জন‌্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • গাজীপুরে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে মারধর, আটক ৪৩
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা