ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক সাব্বির আহমেদ সেন্টুর উপন্যাস গ্রন্থ ‘‘স্বপ্নভরা দুটি চোখ’’। নারী নেতৃত্ব নিয়ে লেখা বইটি ইতোমধ্যে পাঠক মহলে বেশ সাড়া পেয়েছে। ‘‘রকমারি ডটকম’’ ও ‘‘বই সদাই’’সহ বিভিন্ন অনলাইনেও বইটি ধুম বেচাকেনা চলছে।

বইটি প্রকাশিত হয়েছে ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীর ১২০ আউটার সার্কুলার রোডের তুষার ধারা প্রকাশনী থেকে। যার প্রকাশনায় ছিলেন প্রকাশক আমিনুল ইসলাম মামুন। হার্ডকভার বাইন্ডিংয়ের চার ফর্মার এই বইটির দাম রাখা হয়েছে ২২৫টাকা।

বইমেলায় ২৫%কম মূল্যে পাওয়া গেলেও অনলাইনে তারচেয়ে আরো ৩% কমে ক্রয় করা যায়। একুশের বইমেলায় বইটি পাওয়া যাবে সোহরাওয়ার্দ্দী উদ্যানের ৫৫৮ ও ৬৬৯নং স্টলে। বইটি নিয়ে কথা হয় এটির প্রকাশক আমিনুল ইসলাম মামুনের সঙ্গে।

তিনি জানান,তথ্য প্রযুক্তির যুগে এতো এতো বইয়ের ভিড়ে স্বপ্নভরা দুটি চোখ মেলার পাশাপাশি অনলাইনেও বিক্রি হচ্ছে বেশ। একজন লেখকের এরচেয়ে সফলতা আর কি হতে পারে। শেষ পর্যন্ত বইটির সম্মানজনক সেল হবে বলে আশা করি।

লেখক সাব্বির আহমেদ সেন্টু বলেন,বর্তমান সময়ে বইয়ের পাঠক তেমন নেই বললেই চলে। মেলায় প্রতিদিন যে সকল লোকের আনাগোনা দেখা যায় তাদের অধিকাংশই ঘুরতে কিংবা টাইম পাস করতে আসা দর্শনার্থী। প্রকৃতপক্ষের যদি তারা কিনতে আসতো তাহলে সব লেখকের মিলিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১লাখের মতো বই বিক্রি হতো।

তবে আলহামদুলিল্লাহ কিছুটা হলেও আমার বইয়ের কাটতি হচ্ছে। কোন প্রকার প্রচার প্রচারণা ছাড়াই যেভাবে চলছে মন্দের ভাল। তিনি আরো বলেন,আসলে বই বিক্রির বিষয়টি আগে ভাল ছিল এখন মানুষ তেমন একটা পড়েও না আবার কেউ কাউকে উপহার দেয় না।

অথচ এমন একটা সময় ছিল যখন মানুষ বিয়ে,জন্মদিন,মুসলমানি এমনকি প্রিয়জনকেও এই বই উপহার দেয়া হতো। আমি মনে করি আগের মতো বই উপহার দেয়াটা বাধ্যতামূলক করা উচিত। সরকারিভাবে এই উদ্যোগটি কাজে লাগানো যেতে পারে। এইরকম একটা কিছু হলে হয়তোবা লেখকের মূল্যায়নটা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।

উল্লেখ্য, ছড়াকার ও উপন্যাসিক সাব্বির আহমেদ সেন্টুর স্বপ্নভরা দুটি চোখ উপন্যাস গ্রন্থ ছাড়াও ইতোমধ্যে আরো ৪টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলো হলো: শতাব্দীর শ্লোগান ১৪০০,স্নেহের নক্ষত্র,ছড়ার বুলেট ও শর্ট স্ক্রিপ্ট।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ