পেপ গার্দিওলার সব কথা শুনে কল্পনায় একটি দৃশ্যপট ভেসে ওঠে—বিদগ্ধ এক মানুষ, যিনি নিজের কাজে অবিশ্বাস্যরকম দক্ষ। কিন্তু সময় তো আর এক রকম যায় না। যেকোনো কারণেই হোক মানুষটি নিজ কাজে আর আগের মতো সফলতা পাচ্ছেন না। লোকে ঠারেঠুরে তাঁকে নিয়ে কথা বলছে। সমালোচনাও করছে। সেসব যে আর মানুষটির কানে যায় না, তা তো নয়! সব শুনে শেষ পর্যন্ত চিরকালের ভদ্র মানুষটি স্মরণ করিয়ে দিলেন তাঁর থরে–বিথরে অর্জনের কথা। ছুড়লেন চ্যালেঞ্জও—পারলে করে দেখাও!

আরও পড়ুন৭১৭ পাস খেলেও পোস্টে শট নেই, ১৫০ কোটি পাউন্ড খরচের এই ফল৪ ঘণ্টা আগে

ম্যানচেস্টার সিটির এই কোচ গতকাল প্রিমিয়ার লিগের নিউক্যাসল ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন। গত মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়নস লিগ প্লে–অফ প্রথম লেগে ঘরের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে ৩–২ গোলে হারে সিটি, যা সিটির চলতি মৌসুমের দুরবস্থাকে আরও তীব্র করে তুলেছে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ টেবিলে খুব ভালো অবস্থানে নেই গার্দিওলার দল। শীর্ষে থাকা লিভারপুলের পয়েন্ট ২৪ ম্যাচে ৫৭, তাদের চেয়ে ১৬ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে সিটি পাঁচ নম্বরে। অর্থাৎ এবার টানা পঞ্চম লিগ জেতা হচ্ছে না গার্দিওলার দলের। ইংল্যান্ডে টানা লিগ জয়সহ যে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন গার্দিওলা, তা এ মৌসুমে যেন হুট করেই খোয়ানোর পথে! আর সেটার জেরে জারি থাকা নানা নেতিবাচক আলোচনাতেই যেন বিরক্ত গার্দিওলা।

প্রিমিয়ার লিগে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে লিভারপুল.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ